ঢাবি লাইভ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষায় অভিভাবকসহ ৫ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। 'ক' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে পাঁচ পরীক্ষার্থীসহ এক অভিভাবককে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জানাগেছে আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ও এর বাইরে ৮৪টি কেন্দ্রে শুরু হয়। পরীক্ষা চলাকালীন ডিজিটাল ডিভাইসসহ বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তাঁদের আটক করা হয় বলে জানিয়েছেন প্রশাসন।
এই জালিয়াত চক্রের সঙ্গে অনেকেই জড়িত আছে। তাদের নেটওয়ার্ক জানবার চেষ্ঠা করছে পুলিশ। তবে পুরো 'জালিয়াত চক্র’কে গ্রেপ্তার করার জন্য আটক ব্যক্তিদের নাম ও পরিচয় প্রকাশ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রাথমিকভাবে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন আটক পরীক্ষার্থীরা।
আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের প্রশাসনের অধীনে রাখা হয়েছে ৷ একটি সূত্র জানায়, তাদের কাছ থেকে বেশ কয়েকজন ছাত্রনেতা ও জালিয়াত চক্রের সদস্যের নাম জানাগেছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে ঢাবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুজনকে আমরা আটক করে প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে রেখেছি। ওদের দুজনের কাছেই ডিজিটাল ডিভাইস পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একজন তাঁর অভিভাবকের সংশ্লিষ্টতার কথা জানিয়েছে।
আমরা সেই অভিভাবকেও গ্রেপ্তার করেছি। এ ছাড়া আরো তিনটি কেন্দ্রে তিনজনকে একই কারণে আটক করা হয়েছে। তাদের নিয়ে আসার জন্য আমাদের সহকারী প্রক্টররা গিয়েছেন।’
এসব জালিয়াতির জন্য প্রক্টর একাধিক কোচিং সেন্টারকে দায়ী করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘সামনে ব্যানার ব্যবহার করে নামসর্বস্ব একাধিক কোচিং সেন্টার এতে জড়িত আছে। আমাদের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ আছে। আমরা তদন্ত করে সবকিছু প্রকাশ করব।’ তবে এ ঘটনাগুলো ছাড়া অন্য কেন্দ্রে পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী।
এবারও মোবাইল ফোনসহ টেলিযোগাযোগ করা যায় এমন যেকোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। প্রতিটি কেন্দ্রের প্রবেশপথে মেটাল ডিটেক্টরে তল্লাশি করে পরীক্ষার্থীদের হলে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে।
যেকোনো ধরনের অনিয়ম ও জালিয়াতি ঠেকাতে পরীক্ষার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সকালে পরীক্ষা শুরুর পর ঢাবি ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান কার্জন হলে কয়েকটি পরীক্ষার হল পরিদর্শন করেন।
এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক অধ্যাপক মো. আবদুল আজিজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামান।
জানাগেছে ‘ক’ ইউনিটের এক হাজার ৭৫০টি আসনের জন্য ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীর সংখ্যা ৮১ হাজার ৯৬ জন। অর্থাৎ প্রতি আসনের বিপরীতে লড়াই করেছেন ৪৬ প্রার্থী। সব মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি ইউনিটে সাত হাজার ১২৮টি আসনের বিপরীতে এবার মোট দুই লাখ ৭২ হাজার ৫১২ জন আবেদন করেছেন।
এই হিসাবে প্রতি আসনের বিপরীতে পরীক্ষার্থী থাকছেন ৩৮ জন। ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা।
আর এর মাধ্যমে এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিযুদ্ধ শেষ হবে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর ভর্তি পরীক্ষার ফল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট (admission.eis.du.ac.bd) থেকে বিস্তারিত জানা যাবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ঢাকা, ২৮ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: