মির্জাপুর লাইভ: শিক্ষার্থীর হাত ভেঙ্গে দেয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মো. মনশুর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল মো. মনশুর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের বহুল আলোচিত সেই শিক্ষাকে অবশেষে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বেশকিছু দৈনিক পত্রিকাগুলোতে মির্জাপুরে ছাত্রীকে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দিয়েছে শিক্ষিকা শীর্ষক একটি সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদটি প্রকাশের পর বিদ্যালয় ও প্রশাসনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাটি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
বিদ্যালয়ের এক জরুরি সভায় ওই শিক্ষিকাকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা। ঐ শিক্ষক ক্লাসের আরও ১৫-১৬ জন শিক্ষার্থীকেও পিটিয়ে জখম করেছে বলে শিক্ষার্থীরা জানায়। গুরুতর অবস্থায় লুনাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
বিদ্যালয়ে এক জরুরি সভায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. এমরান হোসেন, অভিযুক্ত শিক্ষিকা মুক্তা রানী রবিদাস, বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো. মঞ্জুরুল কাদের বাবুল, অভিভাবক প্রতিনিধি সাকিব হোসেন বিপ্লবসহ শিক্ষক ও ছাত্রীসহ তার অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, ওই ছাত্রীর নাম লুনা ইসরাত। সে ঐ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। তার ক্লাস রোল-১০০। শিক্ষার্থী পেটানো শিক্ষকের নাম মুক্তা রানী রবিদাস (৪৫)। তিনি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
ওই ছাত্রী লুনা ইসরাত অভিযোগ করেন, ক্লাসের সাপ্তাহিক পরীক্ষার খাতায় সে ৮ নম্বর পায়। তার মত আরও অনেকেই একই ভাবে নম্বর পাওয়ায় তাদের উপর ক্ষিপ্ত শিক্ষিকা মুক্তা রানী। গত বৃহস্পতিবার মুক্তা বাংলা ক্লাসে এসেই বিভিন্ন অযুহাতে ক্ষিপ্ত হয়ে ছাত্রদের বেদ দিয়ে বেদম পেটাতে থাকেন। লুনা ইসরাতের মারপিট বেশি হওয়ায় সে বেদ ফিরানোর জন্য চেষ্টা করে।
কিন্তু নির্দয় ঐ শিক্ষিকা তার ডান হাতে মোচর দিলে একটি হার ভেঙ্গে যায়। আহত অবস্থায় সে বাড়ি ফিরে এসে তার পরিবারের কাছে ঘটনা জানায়। পরে তাকে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অভিযুক্ত শিক্ষিকা মুক্তা রানী বলেন, ঐ শিক্ষার্থী ক্লাসে আমার সঙ্গে অসৌজন্য মূলক আচরণ (বেয়াদবী) করেছিল। তাই আমি তাকে শাসন করে ছিলাম। কিন্ত হাত ভেঙ্গে যাবে এমনটা বুঝতে পারিনি।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো. মঞ্জুরুল কাদের বাবুল জানান, ঘটনার পর বিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আহত শিক্ষার্থী ও তার অভিভাবক এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ সবার উপস্থিতিতে অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে সমায়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। আর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
ঢাকা, ০২ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: