Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ১৮ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

নারায়ণগঞ্জে ২১ স্কুলে পরিত্যক্ত ভবনে ক্লাস

প্রকাশিত: ২৯ আগষ্ট ২০১৮, ০৪:২২

লাইভ প্রতিবেদক: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিত্যক্ত ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের অফিস ও অভিভাবকদের অপেক্ষাগারসহ অনেক পরিত্যক্ত ভবন রয়েছে বিদ্যালয়গুলোতে। পরিত্যক্ত ঘোষণা করা সেসব ভবনের অবস্থা খুবই নাজুক। ছাদে, দেয়ালে ফাটল, খসে পড়ছে পলেস্তারা, পতন রোধ করা হয়েছে বাঁশ ঠেক দিয়ে। জানালার গ্রীলগুলোরও বেহাল দশা। হেলে পড়েছে অনেক ভবন।

ওই সব বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, বৃষ্টি হলেই ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। ঝড় হলে বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করা হয়। শ্রেণি-কক্ষের অপ্রতুলতা থাকায় এসব ভবনে পাঠদান কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। কোনো কোনো স্কুলে ডাবল শিফট আর ক্লাসে পার্টিশন দিয়ে চলছে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম। এসব পরিত্যক্ত ভবনসহ উপজেলার প্রায় অর্ধশত স্কুলেরও একই অবস্থা।

পরিত্যক্ত ভবনের বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মোট ১১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে দড়িকান্দি, বরপা, পাইস্কা বাসুন্দা, চারিতাল্লুক, নোয়াগাঁও দিঘলীয়া, উত্তর খৈসাইর, আগলা, দাউদপুর পুটিনা, হানকুর, পূর্বদাউদপুর, বইলদা, ছাতিয়ান, পশ্চিমগাঁও দক্ষিণ, নাওড়া সেলিমনগর, দক্ষিণপাড়া, ব্রাহ্মণগাঁও, ডহরগাঁও, গাবতলী, আউখাব, হিরনাল ও গোলাকান্দাইল দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২১টি বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবনকে চিহ্নিত করে বিগত ২০১৩ সালেই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে স্কুলের ভবনগুলোকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান কর্মসূচি না চালানোর জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকেও নোটিশ দেয় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

হিরনাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে একটি নতুন ভবন থাকলেও শ্রেণিকক্ষ রয়েছে মাত্র দুটি। এ কারণে পরিত্যক্ত আর মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ পুরনো ভবনে বাধ্য হয়ে পাঠদান দেওয়া হচ্ছে। রয়েছে স্কুলের অফিসকক্ষসহ অভিভাবকদের অপেক্ষাঘার। ভবনটির অবস্থা খুবই নাজুক। একদিকে হেলে পড়েছে একতলা দালানটি। ছাদে-বিমেসহ দেয়ালে ফাটল ধরেছে। বাঁশের ঠেকা দিয়ে বিধ্বস্ত হওয়া থেকে রোধ করা হয়েছে। যেকোনো সময় বিল্ডিংটি ধসে পড়ে ভয়ঙ্কর ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।

অপরদিকে পাইস্কা বাসুন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন থাকলেও কক্ষ রয়েছে মাত্র দুটি। অপরদিকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুই শতাধিক। নতুন ভবনের একটিতে স্কুলের অফিসকক্ষ ও অন্যটি শ্রেণিকক্ষ হিসেবে ব্যবহার হয়। আর ৫ বছর পূর্বে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা পুরনো ভবনে চলছে ৪টি শ্রেণির পাঠদান কার্যক্রম।

প্রধান শিক্ষক মাহমুদা বেগম বলেন, পরিত্যক্ত ভবনে ক্লাস না নেয়ায় জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে চিঠি দিয়ে নিষেধ করা হয়েছে। একটি অস্থায়ী শেড করে ক্লাস সচল রাখার জন্য ২ লাখ টাকার বাজেটও দেয়া হয়েছে। কিন্তু শেড না উঠা পর্যন্ত পুরনো ভবনে ক্লাস না নিলে স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে বিধায় বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে বাচ্চাদের পরিত্যক্ত ভবনে ক্লাস নিচ্ছেন তিনি।

এবষয়ে জানতে চাওয়া হলে খৈসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম বলেন, পঁচিশ বছর আগে নির্মাণ করা স্কুল ভবনটির ছাদে ফাটল দেখা দিলে ছাদ ভেঙে টিনের চালা দেয়া হয়। পাঁচ বছর আগেই বিদ্যালয়টি সরকারিভাবে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও নতুন ভবন পাচ্ছি না। কিছুদিন আগে এলজিইডির কর্মকর্তারা মাটি পরীক্ষা করে গেছে। শ্রেণিকক্ষের অভাবে পাঠদান করা যাচ্ছে না। বিভিন্ন জায়গায় দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে।

আগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সামান্য বৃষ্টি হলেই বিদ্যালয়ের কক্ষের ভেতরে পানি পড়ে। স্কুলের প্রাক প্রাথমিক কক্ষে অল্প বৃষ্টিতেই হাঁটু পানি জমে। চতুর্থ ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কক্ষের অবস্থাও একই রকম। টিনের চালা চালুনির মতো জায়গায়-জায়গায় ছিদ্র।

প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান বলেন, টিনের চালার ভবনটি যে কোন সময় ধসে পড়তে পারে। কয়েকদিন আগে টিনের চালা ভেঙে পড়েছে। তবে কেউ আহত হয়নি। ঝড় এলে পাকা ভবনের অফিস কক্ষে নিয়ে নিরাপত্তায় রাখি। পাকা ভবনের একটি অফিস, অন্যটিতে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস চলে।

 


ঢাকা, ২৮ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ