লাইভ প্রতিবেদক: রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজে ছাত্রীদেরকে নানাভাবে আন্দোলনমুখী করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের জান্য উসকানিমূলক অপপ্রচার চালাচ্ছে কলেজের ভেতর-বাহিরের একটি মহল।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত একসপ্তাহ ধরে ফেসবুকে আন্দোলনের উসকানিমূলক নানান পোস্ট দিচ্ছে তারা। এছাড়াও শিক্ষক ও ছাত্রীদের এসএমএস এবং ফোন করে নানা কটূক্তি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
জানা গেছে, ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের কিছু বর্তমান ও সাবেক ছাত্রী এবং কয়েকজন শিক্ষক এসব ঘটনার নেপথ্যে আছেন। ঘটনাটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত করছে।
পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার জানান, আন্দোলনের বিষয়ে কাজ করছে ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিট। কোনো বিশেষ স্কুল বা কলেজ নিয়ে আমরা কাজ করছি না। অন্যান্য কাজের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে আমরা সাধারণভাবে কাজ করছি। যদি কোনো বিশেষ প্রতিষ্ঠানে গুজব সৃষ্টি বা উত্তেজনা ছড়ানোর অপচেষ্টা চলে তবে তা আমরা তদন্ত করে দেখবো।
নাম প্রকাশ না করে একাধিক ছাত্রী ও শিক্ষক জানান, নিরাপদ সড়কের আন্দোলন থেমে গেলেও নতুন করে সাধারণ ছাত্রীদের মাঝে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে, যারা সভায় গেছে তাদেরকে জোরপূর্বক নেয়া হয়েছে। সেখানে একজনকে বক্তৃতা করতে বাধ্য করা হয়েছে। এ ঘটনার পেছনে স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের (জিবি) শিক্ষক প্রতিনিধি (টিআর) ড. ফারহানা খানমসহ কয়েকজন শিক্ষক এমনকি কিছু ছাত্রীকেও দায়ী করে ফেসবুকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
ওই সভায় যোগ দেয়া এক ছাত্রী জানান, ফেসবুকের প্রচারণা শতভাগই মিথ্যা। মেয়েরা চারটি গাড়িতে করে স্বেচ্ছায় নগরভবনে গেছে। কয়েকজন মেয়ে নিজ থেকেই বক্তৃতা তৈরি করে অধ্যক্ষকে শোনায়। কিন্তু ওইদিন আমরা নগরভবন থেকে ফেরার পর ফেসবুকে নানা ধরণের মিথ্যা প্রচারণা দেখতে পাই। পরে সঠিক তথ্য তুলে ধরে অধ্যক্ষ একটি পোস্ট দেন। কিন্তু তাদের বন্ধু, জুনিয়র-সিনিয়র মিলে ৪ শতাধিক মেয়ে অকথ্য ভাষায় তাকে গালাগাল করেছেন।
এ ব্যাপারে ড. ফারহানা খানমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আন্দোলনে যাওয়া ছাত্রীদের তিনি বুঝিয়েছেন সত্য। কিন্তু কাউকে অশোভন ভাষায় কথা বলা ও ধমক দেননি। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অধ্যক্ষ এবং জিবির একজন সদস্যের নেতৃত্বে ছাত্রীদের নগর ভবনে নেয়া হয়।
সর্বশেষ গুজব ছড়ানো হয় গত ৯ আগস্ট। গুজবটি হচ্ছে, সাড়ে ৩ শতাধিক ছাত্রী খাতায় ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান লিখে পরীক্ষা না দিয়ে বেরিয়ে গেছে। এরপর তারা মানববন্ধন করেছে।
পরে খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, বাস্তবে কোনো ছাত্রীই পরীক্ষার খাতায় এ ধরনের স্লোগান লেখেনি। তবে কয়েকজন ছাত্রীরা স্কুল ক্যাম্পাসের ভেতরে মানববন্ধন করেছে। মূলত কয়েকদিনের গুজবে উত্তেজিত হয়েই তারা ওই মানববন্ধন করে। তবে শিক্ষকরা ছাত্রীদের বুঝিয়ে শান্ত করেন এবং কলেজ গেটের বাইরে যাওয়া থেকে বিরত রাখেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কলেজের প্রিন্সিপাল জানান, এ ধরণের কোনো ঘটনা আমাদের প্রতিষ্ঠানে ঘটেনি। তারা ওইদিন পরীক্ষার পর ছাত্রীদের খাতা একটি একটি করে চেক করে দেখেছেন কেউ ওই ধরনের স্লোগান লেখেনি। কিন্তু গুজব ছড়ানো হয়েছে। এটি মিথ্য বলে তিনি অভিযোগ করেন।
ঢাকা, ১৩ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: