লাইভ প্রতিবেদক: নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের গড়ে ওঠা আন্দোলন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই আন্দোলনে স্কুলের ইউনিফর্ম বানিয়ে অনেকে ঢুকে পড়েছে, যারা রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে চায়।
রাজধানীর কুর্মিটোলা বিমানবন্দর সড়কে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের কাছে আন্ডারপাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। রবিবার সকাল ১০টায় ‘পথচারী আন্ডার-পাস’ প্রকল্পের এ আন্ডারপাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।
গত ২৯শে জুলাই সড়টিতে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বেপরোয়া গতির বাসের ধাক্কায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। সে সময় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে এ আন্ডারপাস নির্মানের অঙ্গীকার করেন। এ অঙ্গীকার অনুযায়ী তিনি আন্ডারপাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন।
আন্ডারপাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনে যখন দেখলাম স্কুলের ইউনিফর্ম বানিয়ে অনেকে ঢুকে পড়ছে, বুঝলাম তৃতীয় পক্ষ, যারা রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে চায়। এটা দেখার পর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে চিন্তিত হয়ে পড়ি। তখন একটি অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যেতে বলি। আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই, তারা সময় মতো ঘরে ফিরে গেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন আমাদের (ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়) অফিস আক্রান্ত হলো, তখন সেখান থেকে ফোন আসছিল, বলা হচ্ছিলো, আমরা তো টিকতে পারছি না, শুধু পাথর ছোড়া হচ্ছে। তখন বলেছি শুধু ধৈর্য ধরতে। কারা করলো এটা? সেসময় গুজব ছড়ানো হয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে বিভিন্ন দর্জি দোকানে ইউনিফর্ম বানানোর হিড়িক পড়ে গেছে, এসব কারা করেছে?’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেছেন, ড্রাইভারদের লেন মেনে চলতে হবে। ওভারটেকিং বা কোনো ধরনের অনিয়ম বরদাশত করা যাবে না। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ক্যামেরা ফিট করে অনিয়ম বন্ধ করতে হবে।
বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের চিত্র তুলে ধরে সরকারপ্রধান শিক্ষিত জাতি গঠনে তার সরকারের বৃত্তি-উপবৃত্তিসহ নানা সহায়তা প্রকল্পের কথাও বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, সুশিক্ষায় সুশিক্ষিত হওয়া ছাড়া কোনো জাতি উন্নত হতে পারে না। সেটা অনুধাবন করেই আমরা আমাদের শিশুদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য কাজ করছি।
নিরাপদে গাড়ি চালানো নিশ্চিত করার জন্য সরকার চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলেও অনেক চালক এতেও ফাঁকি দেয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ড্রাইভারগুলো ভালোভাবে ট্রেইনিং করে না। হেলপারদের হাতে গাড়ি দিয়ে দেয়। তারপরও আমাদের নানা পদক্ষেপের কারণে সড়কে দুর্ঘটনা অনেকটা হ্রাস পেয়েছে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে দিয়েছি। সুশিক্ষা ও আধুনিক শিক্ষার জন্য। অশ্লীল কথা বা গুজবের জন্য নয়।
পথচারীদেরও রাস্তায় চলাফেরায় সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যতদিন আমাদের শিশুরা রাস্তায় ছিল অনেকে আইন-কানুন মেনেছে। আমাদের মন্ত্রীদেরও গাড়ি থেকে নামতে বলেছে, তখন ফোন এসেছিল- কী করবো। বলেছি ওরা যা বলে শোনেন। কিন্তু এখন আবার দেখি পাশে ফুটওভার ব্রিজ থাকলেও রাস্তায় নেমে হাত দেখিয়ে দেখিয়ে পারাপার হয়, যততত্র গাড়ি থামিয়ে ওঠেন যাত্রীরা। এটা মোটেই ঠিক নয়। পথচারীদের আন্ডারপাস ও ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদসহ বেসামরিক ও সামরিক শীর্ষ কর্মকর্তারা।
ঢাকা, ১২ অাগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: