লাইভ প্রতিবেদক: বন্ধুত্ব বুঝি এমনই হয়। বন্ধুর বিপদে নিজের জীবনকেও তখন অনেকটা তুচ্ছ মনে হয়। বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়ে এমনি উদাহরণ তৈরি করে গেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইশরাক মেহরাব। নটরডেম কলেজের কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন তিনি।
বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন। সহপাঠী ও স্বজনদের কাঁদিয়ে মেঘনায় ডুবে মৃত্যু হয়েছে তার। তার এই মৃত্যু কোন স্বাভাবিক ঘটনা নয়। সাঁতার না জানলেও বন্ধু ডুবে যাচ্ছে দেখে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। নিজেও বাঁচলেন না বন্ধুকেও বাঁচাতে পারলেন না। তবে বন্ধুর বিপদে নিজেকে সপে দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেলেন ইশরাক।
জানা গেছে, শনিবার আশুগঞ্জে মেঘনা নদীতে ঘুরতে গিয়েছিলেন নটরডেম কলেজের কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৭ শিক্ষার্থী। ঘোরাঘুরির এক পর্যায়ে ছবি তোলার জন্য সবাই একসঙ্গে নৌকার একপাশে দাঁড়ান।
এসময় নৌকার পাটাতন ভেঙে তানজিবা প্রাপ্তি পানিতে পড়ে যান। বন্ধু বিপদে পড়েছে তাই কোন কিছু না ভেবেই তানজিবাকে বাঁচাতে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন ইশরাক মেহরাব। যদিও তিনি সাঁতার জানেন না। হাবুডুবু খেতে খেতে দুজনেই তলিয়ে যান মেঘনায়। অন্য বন্ধুরা এ দৃশ্য দেখছিলেন আর চিৎকার করছিলেন। একপর্যায়ে স্থানীয়রা এসে তাদের উদ্ধার করেন। মেঘনায় বন্ধু তানজিবাসহ নিখোঁজ হয়ে যান ইশরাক।
শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। শনিবার রাতে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাদের উদ্ধার সম্ভব হয়নি। রোববার সকালে মেঘনায় ভেসে উঠে তানজিবার নিথর দেহ। অন্যদিকে দিনভর ডুবুরি আর ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযানেও খোঁজ মেলেনি ইশরাকের। রাতে উদ্ধার করা হয় ইশরাক মেহরাবের লাশ।
বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে তিনিও লাশ হয়েছেন। বন্ধুত্বের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন তিনি। এভাবে চলে যাওয়া কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তানজিবা-ইশরাকের সহপাঠী ও স্বজনরা। এমন মৃত্যু মেনে নেয়া যায় না।
ঢাকা, ১৬ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: