আইআরইউ: ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ইতিপূর্বে অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া ১১২ কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাকরি স্থায়ী করার জন্য লোক দেখানো বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই নিয়োগ বিজ্ঞাপন দেখে প্রায় ১০ হাজার আবেদন জমা পড়ে। চাকরি প্রার্থীদের অনেকের এক হাজার ও বাদবাকিদের ৫০০ টাকা ব্যাংক ড্রাফট জমা দিতে হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়টির আয় হয়েছে প্রায় ১ কোটি টাকা।
অথচ এই আবেদনকারীদের মধ্যে কাউকেই নিয়োগ দেয়া হবে না। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টি ভিসি প্রফেসর ড. মো: আহসানউল্লাহর নিজ জেলা চট্রগ্রাম থেকে সর্বাধিক ২৭ জনকে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগীদের থেকে জানা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশনেও অভিযোগ করেছেন মো: রফিকুল ইসলাম নামের একজন প্রার্থী। দুদক থেকে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দিয়েছে বলেও জানা যায়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ভিসি প্রফেসর আহসান উল্লাহ জানান, ‘অ্যাডহক নিয়োগ প্রাপ্তরা হয়তো অগ্রাধিকার পাবেন। নতুন আাবেদনকারীদের মধ্য থেকেও কেউ কেউ নিয়োগ পেতে পারেন।’ নিজ জেলার ২৭ জনকে কেন নিয়োগ দিয়েছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ছোট ছোট পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে নিয়োগের সময় চট্টগ্রাম জেলা বাদ দেয়া হবে।’
রাজধানীর বছিলায় অবস্থিত আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শক ড. মো: ইলিয়াস সিদ্দিকী ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার মো: রোশন খানের বিরুদ্ধেও নিয়োগে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ও পরিদর্শক এই তিনজন মিলে পছন্দের ১১২ জন প্রার্থীকে স্থায়ী নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত করেছেন। তাঁদের অস্থায়ী নিয়োগের ক্ষেত্রেও কোটা মানা হয়নি।
এখন স্থায়ী নিয়োগের জন্য তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে পদ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। এমনকি নিয়োগ কমিটির যাঁরা ঘুষ-দুর্নীতির প্রতিবাদ করেছেন, তাঁদের কৌশলে বাদ দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, অস্থায়ী ভিত্তিতে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন কর্মকর্তার পাশাপাশি মাদরাসা শিক্ষকদের একটি সংগঠন জমিয়াতুল মোদার্রেছিন বাংলাদেশের মহাসচিব মো: শাব্বির আহমদ মোমতাজীর ভূমিকা রয়েছে। মোমতাজীর ছেলেকেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ফাজিল ও কামিল মাদরাসাগুলো পরিচালনার জন্য ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এর বর্তমান ক্যাম্পাস মোহাম্মদপুরের বছিলায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রথমে গত বছরের ২১ আগস্ট ৫২টি পদে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়। এরপর আবার চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি আরো ৪৮ পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। দুই বিজ্ঞপ্তি মিলিয়ে পাঁচ হাজারের বেশি প্রার্থী আবেদন করেন।
গত ৪ এপ্রিল নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এমনকি প্রার্থীদের নিজ ঠিকানায় প্রবেশপত্রও ইস্যু করা হয়। তারপর হঠাৎ করেই গত ২৭ মার্চ নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর আবার গত ২৪ মে ১১২টি পদের জন্য সংশোধিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
ঢাকা, ১০ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: