লাইভ প্রতিবেদক : কোটা সংস্কার আন্দোলনের সেই আলোচিত ছাত্রী লুৎফুন্নাহার লুমা নীলাকে হুমকি ও আন্দোলনে অংশ না নেয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এসময় তার ওপর হামলার চেষ্টা করা হয়। তবে এর আগেই গ্রামবাসী চলে আসায় তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা রক্ষা পেয়েছেন। পুলিশ পরিচয়ে তাকে এমন হুমকি দেয়া হয়েছে। এঘটনার পর থেকে ওই ছাত্রী ও পরিবারের সদস্যরা আতংকে রয়েছেন। মঙ্গলবার (১৯শে জুন) কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং বাংলাদেশ সাধারন ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানের টাইমলাইনে পোস্ট করা এক স্ট্যাটাস থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
স্ট্যাটাসে রাশেদ খান বলেন,
“এবার কোটা সংস্কার আন্দোলনের নারী নেত্রীর উপর হামলা ও গ্রাম ছাড়া করার হুমকি:
১. গতকাল রাত ১১ টার দিকে আমাদের বোন নীলার বাসায় সন্ত্রাসীরা হামলা করতে গিয়েছিল। তারা প্রথমে পরিচয় দেয়, তারা পুলিশের লোক। তারা দরজা খুলতে বলে। কিন্তু নীলার মা বলে আপনারা সকালে আসেন, আমার বাড়িতে কোনো পুরুষ লোক নেই। আমি এত রাতে দরজা খুলতে পারবো না। তারপর তারা দশ মিনিট যাবত দরজা ধাক্কাধাক্কি করে চলে যায়। তখন তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করে।
২. এরপর ওই সন্ত্রাসীরা সকাল ৭ টার দিকে নীলাদের বাড়িতে আসে। তারা প্রথমে নীলাকে ডেকে বলে, কি ব্যাপার তুমি নাকি স্বাধীনতা বিরোধী আন্দোলনে যাও?
নীলা বলে, এটা স্বাধীনতাবিরোধী আন্দোলন নয়। এটা কোটা সংস্কার আন্দোলন। তারপর তারা বলেন, এসব আন্দোলন করা যাবে না। নীলা তখন কোটা সম্পর্কে তাদের বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তারা নীলাকে মারতে উঠে আসে। তখন নীলা ভয়ে কাঁপতে থাকে। ওই লোকগুলো নীলাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। তারা নীলাকে বলে এসব আন্দোলন করলে গ্রাম ছাড়তে হবে, গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেয়া হবে। এই গ্রামে বসবাস করতে হলে কোনো আন্দোলনে যেতে পারবা না।
৩. এসব চিৎকার চেঁচামেচি শুনে আশপাশের লোকজন চলে আসার কারণে তারা নীলাকে মারতে ব্যর্থ হয়। তারপরেও তারা নীলা ও তার পরিবারকে হুমকি দিয়ে গেছে, নীলা যদি আবার আন্দোলনে যায় তারা তাহলে তাদেরকে দেখে নেবে, গ্রামছাড়া করবে, কপালে খারাপি নেমে আসবে ইত্যাদি। তাদের উদ্দেশ্য ছিল নীলাকে আঘাত করা, কিন্তু লোকজন হাজির হওয়ায় তারা তা করতে পারেনি। তবে তারা হুমকি দিয়ে গেছে তারা আবার আসবে।
এদিকে যারা হুমকি দিয়েছে তাদের তিনি চেনেন না বলে জানিয়েছেন নীলা। তিনি কখনোই তাদের গ্রামে দেখেননি। শুধু নিজেদের গ্রাম নয় আশেপাশের দু-চারগ্রামেও কখনো তাদের দেখেননি। তারা নিজেদের নীলার বাবার বন্ধু হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। অথচ নীলার ভাষ্যমতে তার মাও কখনো তাদের দেখেননি।
উল্লেখ্য, প্রতিবাদী ওই ছাত্রী লুৎফুন্নাহার লুমা (নীলা) ছোট বেলায় বেড়ে উঠেছেন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে। এসএসসি ও এইচএসসি সেখানে শেষ করে ভর্তি হন ইডেন মহিলা কলেজে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে। বর্তমানে তিনি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। থাকেন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে। কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে একের পর এক টিয়ারশেল নিক্ষেপ আর পুলিশি হুমকির মুখেও তিনি রাজপথে একা বসেছিলেন। তার ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এনিে তোলপাড় শুরু হয়।
ঢাকা, ২১ জুন (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: