Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

প্রধানমন্ত্রীকে ক্যান্সারাক্রান্ত মেডিকেল ছাত্রীর খোলা চিঠি

প্রকাশিত: ২২ মে ২০১৮, ০৭:১১

জারিন তাসনিম রাফা : ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! আজ না পেরে বাধ্য হয়ে আপনার কাছে খোলা চিঠি লিখছি। আমি জানি না, ঠিক কোন ঠিকানায় আর ফোন নাম্বারে আমি আপনাকে খুঁজে পাবো। তাই খোলা চিঠি লিখে দিলাম, কেউ যদি দয়া করে আমার এই আহাজারি আপনার নিকট পৌঁছায়!’

আমার বয়স ২৩। আমি একজন ফাইনাল বর্ষের মেডিকেল ছাত্রী। আজ আড়াই মাস ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছি! আমার একিউট মায়েলোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া বা এক ধরনের ব্লাড ক্যান্সার যা মধ্যম পর্যায়ে ধরা পড়ে। এখন আমাদের দেশের বিভিন্ন অভিজ্ঞ ও স্বনামধন্য ডাক্তাররা আমাকে বলেছেন, হাতে বেশি সময় নেই। আমাকে দ্রুততম সময়ে অ্যালোজেনিক ট্রান্সপ্ল্যান্টে যেতে হবে যা বাংলাদেশে এখনো শুরু হয়নি এবং আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে যার উন্নত চিকিৎসা রয়েছে কিন্তু অত্যন্ত ব্যয়বহুল (৮০ লাখ টাকা) যা আমার মধ্যবিত্ত বাবা মায়ের পক্ষে ব্যয় করা সম্ভব নয়। কেমো নিয়ে নিয়ে আমরা সর্বশান্ত। আরও যত দেরি হবে ততই কেমো খরচ এবং আমার মৃত্যুঝুঁকি বৃদ্ধি পাবে। আমার জীবনের শুরুতেই আজ মেঘের অন্ধকার নেমে এসেছে। হায়াত আল্লাহর হাতে তবু চেষ্টা করে দেখতে যদি পারতাম! যদি আমার চিকিৎসাটা হত! যদি আপনাদের মাঝে ফিরে আসতে পারতাম!

আপনিতো কত অসহায়ের পাশে ছিলেন, কত পিতা-মাতা হারা সন্তানের দায়িত্ব নিয়েছেন, আমিও এই দেশের এবং আপনারই সন্তান তবে কেন আমাকে বুকে টেনে নেবেন না, এই দিনে?

আমি মানি, আমি বিখ্যাত সাবিনা ইয়াসমিন না, আমি ছোটখাটো একজন মেডিকেল ছাত্রী। তাই বলে কি আমার জীবনের কোনো মূল্যই নেই? বেঁচে থাকলে দেশের জন্য আমি কি কিছুই করতে পারতাম না? আমিও তো মেডিকেল কমিউনিটিরই একজন। প্রতি মুহূর্তে আমি মৃত্যুর প্রহর গুণছি। এক একদিন সময় আমার জীবনের প্রদীপ নিভিয়ে দিচ্ছে ধীরে ধীরে দেশমাতা! আপনি কি এই অসহায় মেয়েটির বেঁচে থাকার এই যুদ্ধে শামিল হবেন?

এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে লেখা মেডিকেল ছাত্রী জারিন তাসনিম রাফার খোলা চিঠি। মরণব্যাধী ক্যান্সারে আক্রান্ত রাফা বাঁচতে চান তাই তার আকুতি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন। পটুয়াখালীর গলাচিপার বাঁশতলা গ্রামের বাসিন্দা এম এ বাশার ও কোহিনুর আক্তার সিদ্দিকা দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে রাফা বড়। বর্তমানে বনশ্রীর রোড-১, ব্লক-বি’র ১৪১৬ নাম্বার বাসায় বসবাস করছেন।

রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০১০ সালে এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ ও ২০১২ সালে একই স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন রাফা।

ঠিকাদার বাবা ও মায়ের ইচ্ছা মেয়েকে ডাক্তারি পড়াবেন। সরকারি মেডিকেলে সুযোগ না পাওয়ায় জমি-জমা বিক্রি করে মেয়েকে আদ-দ্বীন উইমেন্স মেডিকেল কলেজে (২০১৩-১৪) ভর্তি করান। আর মাত্র একটি বছর গেলেই রাফা এমবিবিএস পাস করবেন। কিন্তু মাস কয়েক আগে রামপুরায় সড়ক দুর্ঘটনায় মস্তিষ্কে মারাত্মক আঘাত পান রাফা। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। ওই সময় মাথার এমআরআই করিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় ছিলেন। কিন্তু রিপোর্ট ভালো আসায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন তিনি। কিন্তু কিছুদিন পর তার ঘন ঘন জ্বর আসে। নিজে ডাক্তারি পড়ায় জ্বর কেন আসছে তা বুঝতে ৮/১০ দিন সময় নেন। কিন্তু তবুও সুস্থ না হওয়ায় চিকিৎসক দেখান। চিকিৎসক তাকে বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান।
ধরা পরে ব্লাড ক্যান্সার হয়েছে তার। এরপর থেকেই সবকিছু ওলটপালট হয়ে যেতে থাকে তার। তার চিকিৎসার খরচ জুগিয়ে পরিবার প্রায় সর্বশান্ত। তাই এবার রাফা প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য কামনা করেছেন।

ঢাকা, ২২ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ