Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ১৯শে মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

মাদ্রাসা ছাত্রদের কটাক্ষ, পাল্টে গেল ঢাবি শিক্ষকের সুর!

প্রকাশিত: ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৮, ২০:১২

ঢাবি লাইভ : মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের নিয়ে কটাক্ষ করে তোপের মুখে পড়েন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. মেসবাহ কামাল। এর আগে তিনি ঢাবি উচ্চতর মাদ্রাসায় পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করলে এনিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ অবস্থায় নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেন ওই শিক্ষক। দুঃখ প্রকাশ করে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।

তিনি ফেসবুকে লিখেছেন,

মাদ্রাসা শিক্ষা নিয়ে প্রফেসর ড. আবুল বারকাত ও তার সহ-গবেষকগণের লেখা একটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সম্প্রতি আমি যে বক্তব্য দিয়েছি, তাতে মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমি কিছুই বলিনি। ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে আমি জানি যে, মাদ্রাসা শিক্ষা এদেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা ব্যবস্থা। তাছাড়া উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ মাওলানা আবুল কালাম আজাদ এবং মাওলানা ভাসানী (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের পাশাপাশি যে দুজন আমার পরম শ্রদ্ধেয়) তারা দুজনেই মাদ্রাসায় পড়েছেন।

মাদ্রাসা ছাত্রদের হেয় করা আমার উদ্দেশ্য ছিলো না, কেননা সকল ছাত্রই আমার কাছে সমান। বরং শিক্ষক হিসেবে আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার আলোকে মাদ্রাসা থেকে আসা, ব্যতিক্রম বাদে, বেশিরভাগ ছাত্রদের ভাষাগত ভিত্তির দুর্বলতার কথা বলেছি। আমাদের ছাত্রদের অনেকে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্বল ইংরেজি নিয়ে প্রবেশ করে, তখন আমরা তাদের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত হই। তাই মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী করা দরকার সেটাই আমার বক্তব্য ছিলো। মাদ্রাসা শিক্ষা অবশ্যই এদেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা। কিন্তু এখান থেকে আসা শিক্ষার্থীদের ভিত্তিমূল মজবুত করার জন্য তাদের মূল ধারার সাথে সংগতি রাখতে হবে। মাদ্রাসা থেকে একসময় অনেক বরেণ্য শিক্ষাবিদ, যেমন আমার শিক্ষক ড. মফিজুল্লাহ কবির, বেরিয়ে এসেছেন। মাদ্রাসা থেকে এখনও কিছু ভাল ছাত্র আমরা পাই, তবে তারা ব্যতিক্রম।

আমি মাদ্রাসা শিক্ষা জাতীয়করণের দাবীকে সমর্থন করি, মাদ্রাসা ছাত্রদের শিক্ষার অধিকার নিয়ে কথা বলি এবং মাদ্রাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারি অর্থায়ন বৃদ্ধিকে সমর্থন করি। ঐ অনুষ্ঠানে আমার দেয়া ১৮ মিনিটের বক্তব্যে সেসব কথা বলেছিলাম। আগে-পিছে বাদ দিয়ে আংশিক বক্তব্য শুনে যথার্থ ধারণা পাওয়া যায় না। মাদ্রাসা ছাত্রদের কর্মসংস্থান ও জাতীয় উন্নয়নের স্বার্থে মাদ্রাসাকে শিক্ষার মুল ধারার সাথে সমন্বিত করা দরকার।

আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় এসএসসি- এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা থেকে নম্বর সংযুক্তি ব্যবস্থা বাতিল করে সরাসরি পরীক্ষার ভিত্তিতে ভর্তিযোগ্য ছাত্রছাত্রী নির্বাচন করা হলে বাংলা, ইংরেজি ও আরবী মাধ্যম সহ সকল ছাত্রছাত্রী সমান সুযোগ পাবে। আমি এটাই বলতে চেয়েছি।

আমার বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং বাহিরের ছাত্রছাত্রী-সহ অন্যান্য যারা কষ্ট পেয়েছেন তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমার কাছে সকল ছাত্রই সমান, তা সে যে ধারা থেকেই আসুক না কেন।

উল্লেখ্য, গত ২৭ জানুয়ারি শনিবার প্রেসক্লাবে পলিটিক্যাল ইকোনমি অব মাদরাসা এডুকেশন ইন বাংলাদেশ শিরোনামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় মাদরাসা শিক্ষার্থীরা বেশি সুযোগ পাচ্ছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ড. মেসবাহ কামাল।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় যারা সুযোগ পাচ্ছে তাদের ৬০ ভাগ মাদরাসা শিক্ষার্থী। কলেজ পড়ুয়ারা সেই হারে কলেজ শিক্ষার্থীরা সুযোগ পাচ্ছে না। এজন্য তিনি মাদরাসায় অধিক হারে নম্বর প্রদানকে দায়ী করেন।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চতর মাদরাসায় পরিণত হয়েছে এবং এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মাদরাসা শিক্ষার্থীদের এ হারে অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেলে এক সময় দেশ তাদের হাতে জিম্মি হতে পারে বলেও তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেন।

বক্তব্যে প্রফেসর মেসবাহ কামাল মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ইংরেজির জ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তার মতে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ইংরেজির জ্ঞান ক্লাস ফোর-ফাইভ মানের। তাদের অংশগ্রহণের ফলে দেশের উচ্চ শিক্ষার মান কমে যাচ্ছে।

ঢাকা, ০২ ফেব্রুয়ারি (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ