Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

৬ বছর ধরে শিকলে বাঁধা ঝন্টুর জীবন

প্রকাশিত: ৪ জুলাই ২০১৭, ২২:৫৮


শেরপুর লাইভ: শেরপুরের নকলা উপজেলাধিন টালকী ইউনিয়নের বিবিরচর এলাকার মৃত আব্দুস সামাদ মেম্বারের ছেলে শাকিল মিয়া ঝন্টু। ৬ বছর ধরে তার জীবন কাটছে দুই পায়ে দুইটি তালাবন্দি শিকল পরানো অবস্থায়। অর্থের অভাবে সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ায় ঝন্টুর মানসিক প্রতিবন্ধকতা দিন দিন বাড়ছে।


জানা গেছে, বর্তমানে ঝন্টুর বয়স সাড়ে বারো বছর। যে বয়সে হাতে বই-খাতা ও পায়ে বল বা অন্যকোন খেলার সামগ্রী থাকার কথা, সে বয়সে হাতে কিছু পরানো না থাকলেও তার পায়ে ঝুলছে শিকলবন্দি দুইটি তালা। ঝন্টুর বাবা সামাদ দুটি বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রী’র ৩ ছেলে ও ৩ মেয়ে রেখে জোসনা খাতুনকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন সামাদ। প্রথম স্ত্রী তার ৬ ছেলে মেয়েকে নিয়ে সম্পূর্ণভাবে আলাদা হয়ে যান। দ্বিতীয় স্ত্রী জোসনার দাম্পত্তি জীবনে একটি মাত্র ছেলে জন্ম নেয়। সেই-ই হলো শাকিল মিয়া ঝন্টু। ঝন্টুর ২ বছর বয়স হলে তার বাবা (সামাদ) মারা যান।

অভাবের তাড়নায় জোসনাকে অন্যের বাড়িতে ঝি এর কাজ করতে হতো। তাই সঠিক সময়ে খাবার ও পোশাক পরিচ্ছদ দিতে না পারায় ছোট কাল হতেই পথচারির কাছে টাকা চাওয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে ঝন্টুর। টাকা না পেলে শিশু কালেই পথচারির পিছু নিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত চলে যেতো। বয়স বাড়ার সাথে সাথে পথচারির পিছু নিয়ে শেরপুর, জামালপুর, নালিতাবাড়ীসহ বিভিন্ন জায়গায় চলে যায়। এমনকি একবার ঢাকার উদ্দেশ্যে গাড়ীতে উঠে বসে। পরে পরিচিতদের সহায়তায় পুনরায় তাকে বাড়িতে আনা হয়। এসমস্যা থেকে বাঁচতে বা ছেলে হারানোর ভয়ে ঝন্টুর ৬ বছর বয়সে দুই পায়ে শিকল পরিয়ে তালা লাগিয়ে রাখেন তার মা। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত ঝন্টু সে ভাবেই জীবন কাটাচ্ছে।


এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা হাফিজসহ অনেকেই জানান, তারা শিকল খুলে দিয়ে ছিলেন। কিন্তু বার বার অন্যত্র চলে যাওয়ায় তাকে স্থায়ীভাবে পায়ে শিকল পরিয়ে তালাবন্দি করে রাখা হয়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম জানান, ঝন্টুর নামে একটি প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড করে দেওয়া হয়েছে।


মহিলা ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা আরমানা হক বলেন, শিশুদের বিষয়টি তাদের দফতরের নয়, তাই কোন তথ্য নেই।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, ওই শিশুর বিষয়ে তাদের জানা ছিলো না বা তাদের অফিসেও কোন তথ্য নেই। তবে এখন জানা হলো, খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে সংশ্লিষ্ট দফতরে কথা বলবেন বলে তারা জানিয়েছেন।


ঝন্টু যেহেতু অন্য সবার মতো বয়স অনুযায়ী সব বলতে, করতে ও বুঝতে পারে সেহেতু তাকে সুচিকিৎসা দিলে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবে বলে সবাই ধারণা করছেন। সরকারি বা বেসরকারিভাবে চিকিৎসা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ শিক্ষিত ও ধনাঢ্যদের কাছে সাহায্য কামনা করেন এলাকাবাসী।

 

ঢাকা, ০৪ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২.কম)//এমএইচ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ