যুক্তরাষ্ট্র লাইভ: দেশে নানান অপকর্ম ছেড়ে দিয়ে বিদেশে বসেও নানান অপকর্ম করে দাবড়ে বেড়ানোর স্বাদ মিটে গেছে। অবশেষে এক আওয়ামী লীগ নেতা ধরা পড়েছেন মার্কিন জালে। মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনের এক আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদালত। এনিয়ে তোলপাড় চলছে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে।
ওই আ'লীগ নেতার নাম আসিফ আহমেদ চৌধুরী ওরফে আসিফ বাবু (৬২)। তিনি নিউ ইংল্যান্ড (বোস্টন) আওয়ামী লীগের (ইউসুফ-ইকবাল গ্রুপ) সহসভাপতি। বোস্টন সংলগ্ন মেডফোর্ডের এই বাসিন্দা বোস্টনভিত্তিক বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব নিউ ইংল্যান্ডের (বেইন) সাবেক সভাপতি। তাঁর দেশের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার পাহাড়তলী থানার কাটতলী গ্রামে। তিনি দেশে ও ওই এলাকার খুবই প্রভাবশালী নেতা।
বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ছাড়াও শ্বাসরোধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গত ১৪ অক্টোবর ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের সালেম সিটির সুপিরিয়র কোর্টের বিচারক টমাস ড্রেচসলার তাঁর জামিন বাতিল করেন। সপ্তাহব্যাপী বিচারিককার্য শেষে তাকে কারা হেফাজতে রাখার আদেশ দেন।
আগামী ৮ নভেম্বর আসিফ বাবুকে দোষী সাব্যস্ত করে চূড়ান্ত দণ্ডাদেশে প্রদান করা হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। আসিফ বাবুকে সালেম সিটির এক কৃষ্ণাঙ্গ নারীর ওপর অশ্লীল আক্রমণের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তিনি দুই বছর আগে রুম ভাড়ার জন্য ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।
ভুক্তভোগী নারী জানান, মহামারির কারণে চাকরি হারানোর পর বাসা ভাড়া দিতে অক্ষম হয়ে পড়েন তিনি। তাই তিনি সালেম শহরের ফেডারেল স্ট্রিটে জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রে বাস করছিলেন। তার ৯ বছর বয়সী (২০২০) মেয়ের সঙ্গে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকাকালীন সময় তিনি মেডফোর্ডে থাকার জন্য একটি বাসা খুঁজছিলেন, যেন তার মেয়ে যে স্কুলে পড়াশোনা করে সেখানে ফিরে যেতে পারেন।
তিনি বিচারকদের বলেন, চাকরি হারালেও একটি একক রুমে থাকার সামর্থ্য ছিল আমার। তাই আমি আসিফ বাবুর ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে বাসা ভাড়ার বিজ্ঞাপন দেখে সাড়া দেই এবং রুমটি নেওয়ার পরিকল্পনা করি।
এদিকে, কিছুদিন পরে (২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর) আসিফ বাবু সালেমের ওই মহিলার সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা করেছিলেন যাতে তিনি ভাড়া চুক্তিতে সই করতে পারেন। ওই বৈঠকের সময় অশ্লীল আক্রমণ ও হামলা করেন বাবু।
মহিলার ৯ বছর বয়সী মেয়ে বিচারকদের জানান, সে ‘অনেক বিশৃঙ্খলার’ শব্দে জেগে উঠে এবং বেড রুম থেকে উঁকি দিয়ে দেখে আসিফ বাবু তার মায়ের উপরে। তার মা কিছুতেই উঠতে পারেননি। পরে পুলিশের জরুরি নম্বর ৯১১ ফোন করা হয়।
সালেম শহরের পুলিশ অফিসার জোনাথন স্প্রিংগার বলেন, আমি প্রথম আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছাই এবং দরজার কাছে আসিফ বাবুকে মহিলার সঙ্গে ঝগড়া করতে দেখি। পরে দু’জনকে আলাদা করি।
অফিসার কিগান স্টোকস বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা দেখি ওই মহিলা উন্মাদের মত কাঁদছিলেন। আমি দেখেছি আশ্রয়ের অ্যাপার্টমেন্টের রান্নাঘরটি বিশৃঙ্খল অবস্থায় ছিল এবং মেঝেতে আসিফ বাবুর চশমা পড়ে আছে।
তিনি দুজনকে আলাদা করেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেন। তদন্ত শেষে আসিফ বাবুকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। পরে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ।
ঢাকা, ২১ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: