লাইভ প্রতিবেদক: সেই মরিয়ম মান্নান। এক সময়কার ইমরান এইচ সরকারের কাছের মানুষ। অনেকেই তাকে ঘিরে নানান মন্তব্যও করতেন। সেই মরিয়ম মান্নানের মা টানা ২৮ দিন নিখোঁজ থাকার পর গত ২৪ সেপ্টেম্বর রহিমা বেগমকে ফরিদপুরের একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওই সময় রহিমা বেগম প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ‘আত্মগোপনে’ থাকার জোর দাবি ওঠে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় নানান গুঞ্জন রয়েছে।
তবে উদ্ধারের পর রহিমা বেগম ‘অপহৃত হয়েছিলেন’ বলে জবানবন্দি দিয়েছিলেন। অবশেষে সেই জবানবন্দি মিথ্যা বলে স্বীকার করেছেন তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান। বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে মরিয়ম গণমাধ্যমকে বলেন, মায়ের জবানবন্দি পরিবর্তনের জন্য আদালতে আবেদন করা হবে। আমাকে সেটা করতেই হবে।
তবে, মাকে এখনই আদালতে নিতে পারছি না। পিবিআই তদন্ত করছে, তারা যখন ডাকবে, তখন আদালতে স্টেটমেন্ট পরিবর্তন করাব। আমি সেই দিনের অপেক্ষায় আছি। আমার আগের সব কথা মনে রাখতে চাইনা।
এদিকে মায়ের নিখোঁজ হওয়ার পেছনে প্রতিবেশীদের সঙ্গে জমির বিরোধের বিষয়টিকে দায়ী করে আসছিলেন মরিয়ম। রহিমা নিখোঁজের পরদিন থানায় অপহরণের মামলা করেন তার আরেক মেয়ে আদুরী। সেই মামলায় কারাগারে আছেন ৬ জন। এ বিষয়ে মরিয়ম বলেন, মামলায় সন্দেহভাজনদের নাম দেওয়া হয়েছিল। ইতোমধ্যে মামলাটি তুলে নিতে আইনজীবীকে বলেছি।
মাকে অপহরণ করা হয়নি, তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। তাই মামলাটি তুলে নেব। এ ছাড়া পুরো বিষয়টি নিয়ে আদালতের কাছে ক্ষমাও চাইব। এলাকাবাসী বলেছেন ওই মেয়েটি তার ব্যক্তিগত জেদ মেটাতে অনেককেই ফাঁসাতে চেয়েছিল। কিন্তু তার সেই আশা আর পূরণ হলো না।
একই দিন রাতে মাকে খুঁজতে আশপাশসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেন সন্তানরা। অবশেষে টানা ২৮ দিন পর শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টায় দিকে রহিমা বেগমকে ফরিদপুর থেকে উদ্ধার করা হয়। মরিয়ম মান্নানের নানান চালচাতুরী আছে বলে এলাকাবাসী ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে। তার ব্যাপারে নানান আজে-বাজে মন্তব্যও করেছেন এলাকাবাসী।
প্রসঙ্গত, খুলনার মহেশ্বরপাশা থেকে নিখোঁজের ২৮ দিন পর ফরিদপুর থেকে রহিমা বেগমকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ বলছে, রহিমা স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন। তবে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, মায়ের আত্মগোপনে জড়িত ছিলেন স্বয়ং মরিয়ম মান্নান।
দৌলতপুর থানার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ কর্মকর্তা দাবি করেন, জমির বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে অপহরণের নাটক সাজান রহিমা ও তার মেয়েরা। রহিমা আত্মগোপনে যাওয়ার পর অজ্ঞাতপরিচয় যেকোনো নারীর মরদেহকে মায়ের বলে দাবি করার পরিকল্পনাও সাজান মেয়েরা।
এর আগে, গত শুক্রবার ময়মনসিংহে ১২ দিন আগে উদ্ধার করা একটি মরদেহকে মায়ের বলে দাবি করেন মরিয়মসহ তার তিন বোন। কিন্তু এখন তাদের মাকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার ওসি আব্দুল ওহাব জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে বোয়ালমারীর সৈয়দপুর গ্রাম থেকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করা হয়। বেশ কয়েক বছর আগে রহিমা বেগমের খুলনার বাড়িতে কুদ্দুস মোল্লা নামে এক ব্যক্তি ভাড়া থাকতেন। তার বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালখালীর সৈয়দপুরে। ঐ বাড়িতেই রহিমা বেগম আত্মগোপনে ছিলেন বলে জানাগেছে।
ঢাকা, ০১ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: