কিশোরগঞ্জ লাইভ: এবার কিশোরগঞ্জের হাওরে ঢাবি শিক্ষার্থীদের ঘিরে ধরেছিল ডাকাত দল। কপাল ভাল অল্পের জন্যে রক্ষা পেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। চারদিক থেকে ডাকাতদলের টর্চের আলো, ঘিরে ফেলাসহ -এসব দেখে অনেকে কান্নাকাটি করতে থাকে। ভয়ে কেউ কেউ পানিতে লাফিয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তারা বুদ্ধি করে ৯৯৯-এ ফোন করে ডাকাতের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে ঘুরতে যাওয়া কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ১৪ শিক্ষার্থী। ১৯ আগস্ট বিকালে এই ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তেএক শিক্ষার্থী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি। পরে চামড়াঘাট নৌপুলিশ ফাঁড়ির এএসআই মোহাম্মদ এনামুল হক বিসয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানান। তিনি বলেন গত রাত ১২টার দিকে হাওর থেকে শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে নিরাপদে কিশোরগঞ্জ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তাদের তেমন কোন ক্ষয় ক্ষতি হয়নি।
সংশ্লিস্টরা জানান বৃহস্পতিবার দুপুরের পর ১৪ জন শিক্ষার্থী হাওরের অলওয়েদার সড়কে ঘুরতে যান। তারা করিমগঞ্জের বালিখলা থেকে ট্রলার ভাড়া করে মিঠামইনে নেমে অলওয়েদার সড়কে বেড়াচ্ছিলেন। সন্ধ্যার পর সেখান থেকে ফেরার পথে প্রচণ্ড বাতাসে হাসনপুর সেতুর সন্নিকটে রাত ৯টার দিকে তাদের ট্রলার আটকে যায়।
বিষয়টি বুঝতে পেরে এ সময় ডাকাত দল তাদের ঘিরে ফেলার চেষ্টা করে। তখন শিক্ষার্থীদের কেউ একজন ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সাহায্য চায়। এ সময় এএসআই মোহাম্মদ এনামুল হকের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ডাকাত দল সেখান থেকে সরে পড়ে। শিক্ষার্থীরা রক্ষা পেলেন।
এএসআই এনামুল হক আরো জানান, শিক্ষার্থীদের একটি দল হাওরে আটকে আছে সংবাদ পাওয়ার পর আমি তাৎক্ষণিকভাবে চারজন কনস্টেবল নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দল পালিয়ে যায়। এ সময় ভয়ে পানিতে পড়ে যাওয়া দুজন শিক্ষর্থীকে উদ্ধার করা হয়। ট্রলারে মোট ১৪ জন শিক্ষার্থী ছিলেন বলেও তথ্য মিলেছে।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ট্রলারে মোট ১৪ শিক্ষার্থী ছিলেন। তাদের মধ্যে ১২ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও দুজন কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারি কলেজের ছাত্র। পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, তাদের নিয়ে বালিখলা পৌঁছার পর রাত একটা থেকে দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীদের নিরাপদে কিশোরগঞ্জ শহরে একটি হোটেলে পৌছে দেয়া হয়েছে।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, তারা পরিবারের কাউকে বলে ঘুরতে যাননি। তাদের দলে কয়েকজন ছাত্রীও ছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হলে ছাত্রীদের পরিবারের পক্ষ থেকে চাপ তৈরি হতে পারে-এমন দুর্ভাবনায় থেকে বিষয়টি গোপন রাখতে চান তারা। এ কারণে গণমাধ্যমে কিছু বলছেন না।
এ ব্যাপারে তিনি বলেন, পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ায় আমরা সবাই বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছি। চারদিক থেকে ডাকাতদলের টর্চের আলো, আমাদের ঘিরে ফেলা-এসব দেখে অনেকে কান্নাকাটি করতে থাকে। ভয়ে কেউ কেউ পানিতে লাফিয়ে পড়েন। একটা ভয়ানক মানসিক চাপে পড়ে গিয়েছিলাম আমরা। যাক শেষমেষ বেঁচে গেছি।
ঢাকা, ২০ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: