Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | মঙ্গলবার, ১৪ই মে ২০২৪, ৩১শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com
শিক্ষককে মারধরের খেশারত

খুলনার সেই আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: ২২ জুলাই ২০২২, ২২:০৬

খুলনার সেই আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

খুলনা লাইভ: অবশেষে আওয়ামী লীগের সেই দাপুটে নেতা ধরা খেলেন। তার অত্যাচারে গোটা এলাকাবাসী অতিষ্ট হয়ে উঠেন। তিনি এলাকায় অলিখিত রাজা হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। শিক্ষক মারধর, জমি দখল ও চাঁদাবাজিসহ নানান অভিযোগ এনেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, খুলনার কয়রা উপজেলার উত্তরচক আমিনীয়া বহুমুখী কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমানকে মারধর করার মামলায় কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব ৷

জানাগেছে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে অভিযান চালিয়ে র‍্যাব-৬ এর একটি দল বাড়ি থেকে বাহারুলকে গ্রেপ্তার করে । এ ব্যাপারে কয়রা থানার ওসি এ বি এম এস দোহা জানান, ইউপি চেয়ারম্যান বাহারুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করার পর র‍্যাব সদস্যরা শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে তাকে কয়রা থানায় হস্তান্তর করেছে।

ওসি আরো বলেন আমরা আইনগত বাকী ব্যবস্থা নিচ্ছি। তাকে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে মারধরের শিকার ওই শিক্ষকের স্ত্রী সাদিয়া সুলতানা বাদি হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান বাহারুল ইসলামসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মারধর মামলা দায়ের করেন। ওই ঘটনা গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য সৃস্টি করে।

এ ব্যাপারে মামলার বাদী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, গত সোমবার (১৮ জুলাই) তিনি মাদরাসায় কাজ করছিলেন তিনি। এ সময় সদর ইউপি চেয়ারম্যান এসএম বাহারুল ইসলামের নেতৃত্বে স্থানীয় ইউনুসুর রহমান, নিয়াজ হোসেন, মাসুদুর রহমান, মিলন হোসেন, জহুরুল ইসলাম, রিয়াল, আমিরুল, অমিত মণ্ডল, রফিকুল গাজী, সাদিকসহ ১৫/২০ জন লোক তাকে জোর করে রুম থেকে ধরে নিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠানের সাবেক অধ্যক্ষ মোস্তফা আব্দুল মালেকের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যান বাহারুল তাকে গালাগাল করে। একপর্যায়ে তারা চোখে, ঘাড়ে, কানে ও পিঠে এলোপাথাড়ি মারধর করে। এরপর সেখান থেকে তুলে ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখে। সেখানেও বেদম মারধর করা হয়। এতে আমার চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং কানের পর্দা ফেটে যায়। একপর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

জ্ঞান ফিরলে চেয়ারম্যান তাকে মাদরাসা থেকে পদত্যাগ করতে বলেন। পরে কয়রা থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এরপর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা।

অধ্যক্ষ জানান, মাদরাসাটি ঢাকার ইসলামিক অ্যারাবিক ইউনিভার্সিটির আওতাভুক্ত। তিন মাস আগে কলেজে সভাপতির দায়িত্ব দেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনজনের নাম চাওয়া হয়েছিল। তখন চেয়ারম্যান বাহারুল তাকে তার নাম দেয়ার জন্য জোর করেছিলেন। বাধ্য হয়ে বাহারুলসহ তিনজনের নাম প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু ইউনিভার্সিটি থেকে তা রিজেক্ট করে নতুন করে কমিটি দিতে বলা হয়েছিল।

পরে তিনি মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদসহ তিনজনের নাম প্রস্তাব করে আরেকটি কমিটি জমা দেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মহারাজপুরের চেয়ারম্যানকে সভাপতির দায়িত্ব দেয়। এর জের ধরে তাকে মারধর করা হয়েছে। থানায় জানালেও মামলা না নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করতে বলা হচ্ছে।

খুলনার জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘অধ্যক্ষ আমার কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। তখন পড়ে দেখি তা ক্রিমিনাল অকারেন্স। তাই তাকে মামলা করতে বলা হয়েছে। মামলা না নিলে তাকে পুলিশ সুপারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়।’

সদর ইউপি চেয়ারম্যান বাহারুল ইসলামও এই মাদ্রাসার সভাপতি হতে আগ্রহী ছিলেন। বাহারুল ইসলাম সভাপতি হতে না পারায় তাকে দায়ী করে লোকজন নিয়ে মারধর করেন বলে অভিযোগ করেন ওই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। 

ঢাকা, ২২ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিআইটি


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ