
মাগুরা লাইভ: আর কত! যথেষ্ট হয়েছে। এবার লাগাম টেনে ধরা উচিৎ। মানুষ গড়ার কারিগর তৈরীতেও জাল-জালিয়াতি চলছে। শাসক দলের নাম ভাঙ্গিয়ে একটি বিশেষ সিন্ডিকেট হর- হামেশাই করছে নানান অপকর্ম। এবার শিক্ষক নিয়োগে দাপুটে ছাত্রলীগ নেতা জড়িয়েছেন। এসবের শেষ কোথায় জানতে চায় সাধারণ মানুষ। খোদ শাসক দলের নেতারাও। তাদের ভাষ্য এই জালিয়াতি প্রধানমন্ত্রী সহ্য করবেন না। অবশ্যই তাদের ব্যাপারে আরো কঠিন ও কঠোর হওয়া উচিত।
গোয়েন্দা ও মাগুরা জেলা সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায়ে পরীক্ষার্থীকে সহযোগিতা করার অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা ফাহিম ফয়সাল রাব্বির সিন্ডিকেট জড়িত রয়েছে। বিভিন্নভাবে তদন্তের পর বহিষ্কার করা হয়েছে ফাহিম ফয়সাল রাব্বিসহ কয়জনকে। তিনি মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। শনিবার জেলা ছাত্রলীগ তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে তথ্য মিলেছে।
এদিকে ফাহিমসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। জানা যায় মাগুরা এজি একাডেমি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব মুক্তাদির রহমান এ মামলা দায়ের করেন। ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে অসদুপায় অবলম্বন ও সহযোগিতার অভিযোগে শুক্রবার মাগুরা সদর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি দায়ের করেন। তিনি বলেছেন একটি অসাধু চক্র শাসক দলের নাম ভাঙ্গয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নানান অপকর্ম বেড়াচ্ছিল। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেতনা।
পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব মুক্তাদির রহমান আরো জানান, মামলায় অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- মাগুরা শহরের ইফতেখার ইসলাম, মহম্মদপুরের শাহানা বেগম; নিয়োগ পরীক্ষার তিন পরীক্ষার্থী-মহম্মদপুরের সোহেল রানা ও ইসমত আরা ঝর্ণা ও মাগুরা সদরের তারানা আফরোজ। আজ আদালতে হাজির করলে আদালত তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তবে এরা ধূর্ত ও চতুর প্রকৃতির মানুষ।
জালিয়াতির ব্যাপারে সদর থানার ওসি নাসিন উদ্দিন জানান, শুক্রবার পরীক্ষা চলাকালে মাগুরা পলিটেকনিক কলেজ এবং এজি একাডেমি স্কুল কেন্দ্রে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে অসদুপায়ে পরীক্ষার্থীদের সহযোগিতার এ ঘটনা ঘটায় একটি অসাধূ চক্র। এরা সবই সরকারী দলের নেতা-কর্মী। জানা যায় কেন্দ্রের বাইরে থেকে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল রাব্বি, মাগুরা শহরের ইফতেখার ইসলাম, মহম্মদপুরের শাহানা বেগম ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে অভিযুক্ত তিন পরীক্ষার্থীকে উত্তর বলে দিচ্ছিলেন।
সংশ্লিস্টরা আরো জানান, অতি ক্ষুদ্র ইয়ারফোনের মাধ্যমে উত্তর শুনে শুনে পরীক্ষার্থীরা উত্তরপত্রে লিখছিলেন। বেশ কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে ওই দুই কেন্দ্রের দায়িত্বরত শিক্ষক ও ম্যাজিস্ট্রেট হাতেনাতে বিষয়টি ধরে ফেলেন। এ সময় ওই তিন পরীক্ষার্থীকে আটক করলে তারা ডিজিটাল ডিভাইসে সংযুক্ত হিসেবে বাইরে থেকে যারা সহায়তা করছে তাদের নাম ঠিকানা বলে দেয়। কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ পুলিশের মাধ্যমে উত্তর বলে দেওয়া তিনজনকেও আটক করে। তাদের ব্যাপারেও তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নাহিদ খানকে ছাত্রলীগ নেতা ফাহিম ফয়সাল রাব্বিকে বহিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমরা বিব্রতবোধ করছি। তিনি আরো বলেন, ছাত্রলীগ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া জরুরি বলে মনে করে। কারণ, এ ধরনের অপরাধমূলক কাজ শিক্ষাব্যবস্থাকে পিছিয়ে দেয়। যা জাতির জন্য হুমকি। এরা আসলেই ছাত্রলীগ নয়। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের দৃস্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান
জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নাহিদ খান।
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিআইটি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: