গাজীপুর লাইভ: গাজীপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবদুর রহমান রিয়াদ হত্যা মামলায় তিনজনের ফাঁসি ও একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক একেএম এনামুল হক এ রায় দেন। রিয়াদ উত্তরা ইউনির্ভাসিটিতে বিবিএ পড়তেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, টাঙ্গাইল জেলার মো. রেজাউল করিম ওরফে সাগর (৩২), জামালপুরের মো. জামাল উদ্দিন (৩৬), মৌলভীবাজারের মো. শাহাব উদ্দিন (২৭)। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন, জামালপুরের সানজিদা আক্তার লিপি (৩০)।
রায়ে একই সঙ্গে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ ছাড়া যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত নারীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা সবাই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আলোচিত এই হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন (পিপি) মো. হারিজ উদ্দিন আহমেদ এবং আসামিপক্ষে ছিলেন মো. ওয়াহিদুজ্জামান আকন্দ, মো. আবদুল জলিল ও জেবুন্নাহার মিনা।
গাজীপুর আদালতের পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম জানান, নিহত আবদুর রহমান রিয়াদ নোয়াখালীর সেনবাগ থানার নবীপুর গ্রামের সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী খাজা মাইন উদ্দিনের ছেলে ছিলেন। তিনি গাজীপুরের টঙ্গীর চেরাগ আলীতে উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে বিবিএতে পড়তেন।
টঙ্গীর একটি কোচিং সেন্টারে পড়াশোনা করার সময় লিপির সঙ্গে রিয়াদের ঘনিষ্ঠতা হয়। এর একপর্যায়ে ২০১৩ সালে ২৩ জুলাই চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে লিপি রিয়াদকে তাঁর স্বামী সাগরের কাছে তুলে দেন।
এরপর সাগর রিয়াদকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে ২০১৩ সালের ২৫ জুলাই আবুধাবিতে থাকা রিয়াদের বাবার কাছে ফোনে মুক্তিপণ দাবি করেন এবং হুমকি দেন, আইনের আশ্রয় নিলে রিয়াদকে মেরে ফেলা হবে।
এর দুদিন পর ২৭ জুলাই আবারও ফোন করে রিয়াদের বাবার কাছে ৩০ লাখ টাকা চায় অপহারণকারীরা। তারা আরো জানায়, পরদিন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা না দিলে কান কেটে ফেলা হবে।
এ ঘটনায় প্রবাস থেকে রিয়াদের বাবা বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করেন। পরে রিয়াদের মামাত ভাই অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট জাকির হোসেন বাদী হয়ে ওই বছরের ৩০ জুলাই টঙ্গী থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। পরে র্যাব প্রযুক্তির মাধ্যমে মামলার প্রধান আসামি সাগরকে গ্রেফতার করে।
সাগর র্যাবকে জানায়, তারা মুক্তিপণ না পেয়ে সাগরকে জামালপুরে নিয়ে হত্যা করে। পরে অজ্ঞাত পরিচয়ে মরদেহ আঞ্জুমানে মফিদুল দাফন করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আলমগীর হোসেন তদন্ত শেষে ওই চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট প্রদান করেন।
ঢাকা, ০৬ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: