লাইভ প্রতিবেদক: ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যাপারে তদন্ত শুরু হয়েছে। যতদিন যাচ্ছে ততই নতুন নতুন তথ্য মিলছে। ওই প্রতিষ্ঠানকে তাদের পকেট প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে ফেলে। যার ফলে ওই ইভ্যালি থেকে তারা টাকা নিত নিজের খেয়াল খুশি মত। অনলাইনে পণ্য সরবরাহকারী ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল পদাধিকারবলে নিজেরা মাসিক ৫ লাখ টাকা করে বেতন নিতেন বলে জানিয়েছেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, তারা কোম্পানির অর্থে ব্যক্তিগত দুটি দামি গাড়ি (রেঞ্জ রোভার ও অডি) ব্যবহার করেন। বিষয়টি নিয়ে তাদের প্রতিবেশীদেরও নানান সন্দেহ হতো।
রাজধানীর কুর্মিটোলায় র্যাব সদর দপ্তরে শুক্রবার দুপুরে ইভ্যালির সিইও ও চেয়ারম্যানকে গ্রেফতারের পর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান। তিনি বলেন রাসেল তার স্ত্রী পদাধিকারবলে নিজেরা মাসিক মোটা অংকের টাকা করে বেতন নিতেন। তারা কোম্পানির অর্থে ব্যক্তিগত দুটি দামি গাড়ি (রেঞ্জ রোভার ও অডি) ব্যবহার করেছেন।
সংশ্লিস্টরা জানান, কোম্পানীর প্রায় ২৫-৩০টি যানবাহন রয়েছে। ব্যক্তি পর্যায়ে সাভারে রাসেলের কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জায়গা-জমিসহ অন্যান্য সম্পদ রয়েছে। ইভ্যালির বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বর্তমানে প্রায় ৩০ লাখ টাকা রয়েছে। এছাড়া কয়েকটি গেটওয়েতে ৩০-৩৫ কোটি গ্রাহকের টাকা আটক হয়ে আছে বলে রাসেল জানিয়েছেন র্যাবেকে।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, রাসেল ২০০৭ সালে একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স এবং পরবর্তীতে ২০১৩ সালে এমবিএ সম্পন্ন করেছেন। তিনি ২০০৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করেন। ২০১১ সালে ব্যাংকিং সেক্টরে চাকরি শুরু করেন। প্রায় ৬ বছর চাকরির পর ২০১৭ সালে ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে ব্যবসা শুরু করেন। তিনি প্রায় এক বছর শিশুদের ব্যবহার্য একটি আইটেম নিয়ে ব্যবসা করেন এবং পরে তিনি ওই ব্যবসা বিক্রি করে দেন।
২০১৮ সালে আগের ব্যবসালব্ধ অর্থ দিয়ে ইভ্যালি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ইভ্যালির কার্যক্রম শুরু হয়। কোম্পানিতে তিনি সিইও এবং তার স্ত্রী চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত হন। র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক আরও বলেন, ইভ্যালির অবকাঠামো সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভাড়াকৃত স্পেসে ধানমন্ডিতে প্রধান কার্যালয় এবং কাস্টমার কেয়ার স্থাপিত হয়।
একইভাবে ভাড়াকৃত স্পেসে আমিন বাজার ও সাভারে দুটি ওয়্যার হাউজ চালু করা হয়। কোম্পানিতে একপর্যায়ে প্রায় দুই হাজার স্টাফ ও ১৭০০ অস্থায়ী কর্মচারী ছিল। যা ব্যবসার অবনতিতে বর্তমানে স্টাফ ১৩০০ এবং অস্থায়ী পদে প্রায় ৫০০ জন কর্মচারীতে এসে দাঁড়িয়েছে। কর্মচারীদের একসময় মোট মাসিক বেতন বাবদ দেয়া হতো প্রায় ৫ কোটি টাকা যা বর্তমানে দেড় কোটিতে দাঁড়িয়েছে। গত জুন থেকে অনেকের বেতন বকেয়া রয়েছে। জানা গেছে অর্থ পাচারসহ নানান অপকর্মের সঙ্গে ওই চক্রটি জড়িত রয়েছে। সাধারণ মানুষের টাকা নিয়ে ওই টাকা তাদের খেয়াল খুশিমত ব্যবহার করেছে। আরো অধিকতর তদন্ত হলে আরো রহস্য জানা যাবে।
ঢাকা, ১৭ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: