Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ১৭ই মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com
মাস্ক কেলেঙ্কারী ও জালিয়াতিতে আমিনুল ইসলাম আমিন

ফেঁসে যাচ্ছেন আ' লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নেতা!

প্রকাশিত: ১০ জুন ২০২০, ০৬:০৬

লাইভ প্রতিবেদক: অবশেষে ফেঁসে যাচ্ছেন সেই আলোচিত নেতা। যিনি বিভিন্ন টকশোকে লম্ভা লম্ভা কথা বলতেন। কথার ফুল ঝুড়িতে কই ফুটাতেন। সেই আলোচিত নেতা ভুয়া মাস্ক তৈরি করেছেন বলে প্রমাণ পেয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর । মামলাটির তদন্ত চলছে। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে তদবীর চলছে অনেক। বিভিন্ন নেতা দিয়ে তদবীরে নেমেছেন সংশ্লিস্টরা। তবে প্রধানমন্ত্রীর সাফ কথা এসবের ব্যাপারে কোন ছাড় দেয়া হবে না। যেই অপরাধ করুক আইনের আওতায় আনা হবে তাকে।

এদিকে নিজেরাই বিভিন্ন জাল কাগজ তৈরি করেছিল কেএন-৯৫ মাস্ক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কেএন-৯৫ মাস্ক আমদানি করতে গিয়ে এরকম লাগামহীন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। তিনি দলের উপ-প্রচার সম্পাদক। তার নাম আমিনুল ইসলাম আমিন।

ভুয়া মাস্ক আমদানি করে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলার অভিযোগ করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় দায়েরকৃত মামলা তদন্ত করছে পুলিশ। মামলাটি দায়ের করেছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। মামলায় অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৮ই এপ্রিল ৫০ হাজার কেএন-৯৫ মাস্ক সরবরাহের জন্য মেসার্স এলান কর্পোরেশনের সত্ত্বাধিকারী আমিনুল ইসলামকে কার্যাদেশ প্রদান করে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার।

১৩ই মে মাস্কের সিই মার্কিং সনদ, ফ্রি সেল সার্টিফিকেট ও মাস্কের টেস্ট রিপোর্টসহ মাস্ক খালাসের জন্য আবেদন করেন আমিনুল ইসলাম। গত ১৮ই মে ঢাকা শুল্ক বিভাগ থেকে মাস্কগুলো খালাসের জন্য অনাপত্তিসূচক সনদও দেয়া হয় তাকে। কিন্তু পরবর্তীতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর জানতে পারে, অনাপত্তি নেওয়ার জন্য এলান কর্পোরেশন যেসব কাগজপত্র দেখিয়েছিলো তা ভুয়া। কেন্দ্রীয় ঔষধাগার যাচাই-বাছাই করে দেখতে পায় ফ্রি সেল সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন কাগজপত্র প্রতিষ্ঠানটি নিজেরাই তৈরি করেছে।

এটা ইস্যু করার কথা ড্রাগ রেগুলেটরি অথরিটির। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গিয়ে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার কর্তৃপক্ষ আইএসও সার্টিফিকেট ইস্যুকারী জার্মান প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখতে পায়, এলান কর্পোরেশনের দেওয়া সার্টিফিকেটটি চীনের অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের নামে ইস্যু করা।

অথচ এলান কর্পোরেশনের দাখিল করা কাগজপত্রে লেখা ছিল চীনের জিয়ামেন টেকনোলজি নামের ভিন্ন একটি প্রতিষ্ঠানের নাম। এমনকি এলান কর্পোরেশন কেএন-৯৫ মাস্ক আমদানির মাস্কটির উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে সনদ জাল করেছে। অসৎ উদ্দেশ্যে ভুয়া মাস্ক সরবরাহ করছিলেন আমিনুল ইসলাম। এরপরই গত ২৭শে মে মাস্ক আমদানির জন্য অনাপত্তিসূচক সনদপত্রটি বাতিল করে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, তার প্রতিষ্ঠান মেসার্স এলান কর্পোরেশন জাল ও বানোয়াট কাগজপত্রাদি দাখিলের মাধ্যমে করোনাভাইরাস জনিত (কোভিড-১৯) রোগের চিকিৎসায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের ব্যবহারের জন্য কেএন-৯৫ মাস্ক আমদানি করে জনজীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

এ বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফখরুল ইসলাম বাদি হয়ে এলান কর্পোরেশনের স্বত্ত্বাধিকারী, আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম আমিনের বিরুদ্ধে গত ২৯শে মে বনানী থানায় মামলা করেন। এতে ৬০/এ পুরানা পল্টনের মেসার্স এলান কর্পোরেশনের স্বত্ত্বাধিকারী মো. আমিনুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় নেতার বাড়ি স্থায়ী চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বারদোনার গোলাম মহিউদ্দিন পাড়ায়। এ বিষয়ে বনানী থানার ওসি নুরে আযম মিয়া বলেন, এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্ত চলছে। সেইসঙ্গে আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টাও অব্যাহত আছে। তিনি বলেন আমরা যা সত্য পাব তাই করবো। কারো পক্ষে বা বিপক্ষে কাজ করবো না।

ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম দাবি করেছেন, এলান করপোরেশনের নামে মাস্ক আমদানির জন্য তিনি অন্য একজনকে লাইসেন্স ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন, ফলে এর দায় তার নয়। মামলায় এলান করপোরেশনের লাইসেন্স ব্যবহার করে এসব মাস্কের আমদানিকারক ঢাকার হাজারীবাগের তাজুল ইসলাম ও তার গাড়িচালকের বিরুদ্ধেও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেছে পুলিশ।

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক রুহুল আমীন বলেন, “দুটি মামলা হয়েছে। একটি হয়েছে বনানী থানায়। আরেকটি বিশেষ ক্ষমতা আইনে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায়।” এ বিষয়ে আরও কিছু জানতে হলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নূরে আলমের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন তিনি।

ফখরুল বলেন, কেএন-৯৫ মাস্ক আমদানির জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে কাগজপত্র জমা দেয় এলান করপোরেশন। ওই কোম্পানি ৫০ হাজার কেএন-৯৫ মাস্ক আমদানিও করে। দ্বিতীয়বার পরীক্ষায় কাগজপত্র ভুয়া প্রমাণিত হলে মামলা করা হয়।“প্রথমে কাগজপত্র দেখে আমরা তাদের এনওসি দিই। তারা অনেকগুলো ডকুমেন্টস দেয়, এজন্য প্রথমে চেক করার সময় দুটি ডকুমেন্ট ধরা পড়েনি। পরে আমাদের কাছে একটি সংবাদ আসে যে কিছু কাগজপত্র জাল আছে। আমরা যাচাই করি, ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখি আসলেই কিছু ডকুমেন্ট ফেইক। আমরা সেই এনওসি বাতিল করে দিয়েছি।”

ঢাকা, ০৯ জুন (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ