বরগুনা লাইভঃ আবারো সংঘর্ষে জড়ালো ছাত্রলীগ। যেন থেমে থাকবার নয়। ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করেছে। সংঘর্ষ ও পুলিশের লাঠিচার্জে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে ৫ জনকে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি এবং বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানাগেছে পাথরঘাটায় ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশের অভিযোগে সদ্য বহিষ্কৃত হওয়া সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসাইন এবং বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক বাকি বিল্লাহ জয় এর সমর্থকগণ এ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ ব্যাপারে পাথরঘাটা থানার ওসি মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করায় পুলিশ ৩ জনকে আটক করেছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এলাকাবাসী জানায়, গত বৃহস্পতিবার পাথরঘাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল হোসাইনকে অনুপ্রবেশকারী উল্লেখ করে সাংগঠনিক নীতিমালা ভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তাকে বহিষ্কার করে।
এ অবস্থায় এনামুলকে স্বপদে বহালের দাবিতে শুক্রবার পাথরঘাটায় বিক্ষোভ মিছিল এবং আজ একই দাবিতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করলে এই উত্তেজনা শুরু হয়। এদিকে পুলিশের লাঠিচার্জ ও বাধা উপেক্ষা করে এনামুল হোসাইনের নেতৃত্বে মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ সমাবেশে শেষে দুপুর ১টার দিকে পাথরঘাটা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন এনামুল ও তার সমর্থকরা।
শনিবার সকাল ৯টার দিকে পাথরঘাটা পৌরশহরের রাসেল স্কয়ারে এনামুল সমর্থকদের মানববন্ধন কর্মসূচিতে জয় এর সমর্থকরা বাধা দেয়। এনামুল সমর্থকদের গাড়িতে হামলা ও মাইক খুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। মানববন্ধন শেষ হয়ে গেলে পরে এনামুল সমর্থকরা পাথরঘাটা ডিগ্রি কলেজে জড়ো হয়।
সেখান থেকে মিছিল নিয়ে শহরের প্রবেশ করলে ফের রাসেল স্কয়ারে জয় সমর্থকদের বাধার মুখে পড়ে। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এক পর্যায়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ ছাত্রলীগ সমর্থক আহত হয়।
এদিকে পাথরঘাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য বহিষ্কৃত হওয়া সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসাইন বলেন, আমার সমর্থনে ছাত্রলীগ কর্মীরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করার সময় বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের সমর্থকরা অতর্কিত হামলা চালিয়েছে।
এনামুল দাবি করেন, জয় সমর্থকদের কয়েক দফা হামলায় তার সমর্থকদের অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। বহিস্কার প্রসঙ্গে এনামুল বলেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণ হলে আমি নিজেই পদ থেকে অব্যাহতি নিতাম। কিন্ত আমি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি।
আমি চাই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো তদন্ত হোক। আমি দোষী সাব্যস্ত হলে দায় মেনে সরে দাঁড়াবো। অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বাকী বিল্লাহ জয় ঢাকায় অবস্থান করছেন। তিনি মুঠোফোনে বলেন, তার সমর্থনে মিছিলকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উপর পুলিশ ও এনামুল সমর্থকরা হামলা করেছে।
তবে পাথরঘাটা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান সোহাগ বলেন, এনামুল ও তার নেতাকর্মীরা যেটা করছেন, তা সম্পূর্ণ সংগঠনবিরোধী। তিনি তার পদ ফেরত পাওয়ার জন্য কেন্দ্রে আপিল করতে পারেন। কিন্তু তিনি তা না করে মিছিল মিটিং করে পাথরঘাটায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।
ঢাকা, ১৯ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: