Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ১৯শে মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

স্কুলছাত্রসহ ৪ নিহতের ঘটনায় আ'লীগের দুই পক্ষের দ্বন্দ

প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বার ২০১৮, ০২:৫৯

 

নরসিংদী লাইভ: আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে পৃথক সংঘর্ষে স্কুলছাত্রসহ চার জন খুন হয়েছে। এই খুনের ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় চলছে। তবে পুলিশ ও এলাকাবাসী জানিয়েছেন এই সংঘাত আর সংঘর্ষ একদিনের নয়। এটি পুরানো ঘটনা। এই ঘটনাটি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চল বাঁশগাড়ি ও নীলক্ষায় ঘটে। শুক্রবার সকালে ও দুপুরে পৃথক এ সংঘর্ষ হয়।

নিহতরা হলেন- বাঁশগাড়ি গ্রামের আবদুল্লাহ ফকিরের ছেলে ও স্থানীয় বাঁশগাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী তোফায়েল রানা (১৬), নীলক্ষা ইউনিয়নের বাড়ীগাঁও গ্রামের সোহরাব (৩০) ও একই ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামের সোবান মিয়ার ছেলে স্বপন (২৭) ও অজ্ঞাত পরিচয় একজন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত হাফিজুর রহমান সাহেদ সরকারের সমর্থক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য এবং সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত সিরাজুল হকের সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে।

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আধিপত্য বিস্তারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাশঁগাড়ী, নীলক্ষাসহ কয়েকটি গ্রামে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এসব ঘটনায় তিনজন নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে।

সকালে পূর্বশত্রুতার জেরে প্রয়াত সিরাজুল হক চেয়ারম্যানের ছেলে বর্তমান চেয়ারম্যান আশরাফুল হক ও বাবুল মেম্বারের নেতৃত্বে তার লোকজন বালুমাঠ এলাকায় প্রয়াত হাফিজুর রহমান সাহেদ সরকারের সমর্থক জামাল, জাকির ও সুমনের সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়।

এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী তোফায়েল রানা নিহত হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন আরও ছয়জন। তাদের নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নিহত এসএসসি পরীক্ষার্থী তোফায়েল রানার বাবা আবদুল্লাহ ফকির ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ঝগড়া-বিবাদের জন্য এলাকা ছেড়ে পরিবার নিয়ে নরসিংদী চলে এসেছি।
ছেলে পরীক্ষার খোঁজ-খবর নিতে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিল। সেখানে দুই পক্ষের গোলাগুলির মাঝে পড়ে তাকে প্রাণ হারাতে হয়েছে। এভাবে আর কত বাবার বুক খালি হলে বাঁশগাড়ির এই রক্তক্ষয়ী বিবাদ থামবে তা আমাদের জানা নেই। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই। আমি তাদের ছাড় দিব না।

অপরদিকে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার নীলক্ষার গোপীনাথপুর বীরগাও কান্দাপাড়া গ্রামে শুক্রবার দুপুরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নীলক্ষা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হক সরকার ও বর্তমান চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে।

এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার দুপুরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আবদুল হক সরকারের সমর্থকদের ওপর হামলা চালায় তাজুল ইসলাম সরকারের সমর্থকরা। আবদুল হক সরকার ও তাজুল ইসলাম সরকার দুজনই স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় সদস্য। হামলার একপর্যায়ে তাজুল ইসলামের সমর্থক সোহরাব মিয়া ঘটনাস্থলেই মারা যান। গুরুত্বর আহতাবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পর গোপিনাথপুর গ্রামের সোবান মিয়ার ছেলে স্বপন (২৭) মারা যান।

এছাড়াও সংঘর্ষে অজ্ঞাত পরিচয় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে নীলক্ষা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম জানান, বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামকে হত্যার পর তার হত্যাকারীরা গা ঢাকা দেয় এবং তারা নিজ এলাকা ছেড়ে সফি মেম্বারের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। মূলত সিরাজুল ইসলাম ও সাহেদ সরকারের সমর্থকদের ঝগড়া নীলক্ষা ইউনিয়নেও ছড়িয়ে পড়েছে।

রায়পুরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিন উল কাদির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। পৃথক দুইটি ঘটনাই আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে ঘটেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

 

ঢাকা, ১৬ নভম্বের (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এজেড

 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ