চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিনকে কেউ হত্যা করেনি। তার শরীরে বিষক্রিয়ার কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি, ধর্ষণের কোন প্রমাণও মিলেনি। তাকে হত্যা করা হয়েছে এমন কোন প্রমাণ পায়নি পুলিশ।
আত্মহত্যা করেছে ওই ছাত্রী। পানিতে ডুবে তার মৃত্যু হয়েছে। নগরীর নেভাল এলাকা থেকে তাসফিয়ার লাশ উদ্ধারের পর সাড়ে চার মাস তদন্ত শেষে গোয়েন্দা পুলিশ তাসফিয়া হত্যা মামলায় ফাইনাল রিপোর্ট বা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। রবিবার চিফ মেট্রোপলিট ম্যাজিস্ট্রেট আালতে নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ও তদন্তকারি কর্মকর্তা স্বপন সরকার এ প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তবে তাসফিয়ার মা নাঈমা খাতুন বলেন, তার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাসফিয়া যদি কোন কারণে আত্মহত্যাই করে তবে বাসা থেকে এত দূরে গিয়ে একা একা সাগরে নেমে আত্মহত্যা করবে কেন। এমন কথা কোন পাগলও বিশ্বাস করবেনা। আসামির পরিবার ও তারে সহযোগিরা প্রভাবশালী। তাই তারা মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করেছে। তারা এ রিপোর্টের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন দাখিল করবেন বলেও জানান সাংবাকিদের।
পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আদনানের সঙ্গে ঘটনার এক মাস আগে সম্পর্ক শুরু হয় তাসফিয়ার। বিষয়টি জেনে তাসফিয়ার পরিবার তার কাছ থেকে মোবাইলের সিম নিয়ে ফেলে। আদনানের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখতে চাপ সৃষ্টি করে। এরপরও গোপনে তারা সম্পর্কে রাখে। সম্পর্কের এক মাস পূর্তি উদযাপন করতে তারা চলতি বছরের ১ মে এক সঙ্গে বের হয়।
বিষয়টি জেনে ফেলেন তাসফিয়ার মা। ফলে লজ্জায় তাসফিয়া পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর তীরে নেভাল বিচে চলে যায়। সেখানে রাত ৮টার দিকে হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় একা বসে থাকে। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাসফিয়াকে নদীতে নামতে দেখেন স্বাক্ষীরা। এরপর চিৎকারের শব্দ শুনে তারা নদীতে নেমে তাসফিয়াকে খুঁজে পাননি। সে ততক্ষণে কর্ণফুলীতে তলিয়ে যায়। পরদিন সকালে তার লাশ পাওয়া যায় নদীর তীরে।
এ প্রসঙ্গে নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার (বন্দর) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, পানিতে নেমে আত্মহত্যা করেছে তাসফিয়া, তদন্তে এটাই উঠে এসেছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে ১৬ জনকে সাক্ষী রাখা হয়েছে। সার্বিক তদন্ত করে আমরা নিশ্চিত হয়েছি তাসফিয়া আত্মহত্যা করেছে।
এর আগে গত ২ মে সকালে কর্ণফুলী নদীর পতেঙ্গার ১৮ নম্বর ঘাটে পাথরের ওপর উপুড় হয়ে থাকা অবস্থায় তাসফিয়ার লাশ পাওয়া যায়। নবম শ্রেণির ছাত্র আনানের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাসফিয়ার বাবা মোহাম্মদ আমিনের করা মামলায় আদনানসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়।
ঢাকা, ১৬ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: