Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

শিক্ষক দম্পতির হত্যার রহস্য উদঘাটন

প্রকাশিত: ১৯ মে ২০১৮, ২১:০২

লাইভ প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাছিরন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অনিল কুমার দাস ও তার স্ত্রী কল্পনা রানী দাসের হত্যারহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।

খুন হওয়া শিক্ষকের সৎ ভাই স্বপন কুমার দাস তার কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে অনিল কুমার দাস ও তার স্ত্রী কল্পনা রানী দাসকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এ মামলায় গ্রেফতার হওয়া রসুলপুর গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (৩২) এবং পার্শ্ববর্তী শালিনা গ্রামের মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে মো. ফরহাদ (৩৩) হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় তার সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান।

পুলিশ সুপার জানান, গত ১২ মে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে জাহিদুল ও ফরহাদকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা শিক্ষক অনিল কুমার দাস ও তার স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরদিন ১৩ মে তাদের বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। তারা বিচারিক হাকিমের কাছে জবানবন্দি দেন। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রূপম কুমার দাস তাদের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন।

পুলিশ সুপার জানান, জবানবন্দিতে জাহিদুল ও ফরহাদ জানিয়েছেন, শিক্ষক অনিল কুমার দাসের পাছবিক্রমহাটি মৌজার ৬০ শতাংশ জমি লিখে নেওয়ার জন্য তার বৈমাত্রেয় ছোট ভাই স্বপন কুমার দাস স্ট্যাম্প প্রস্তুত করেন।

এই স্ট্যাম্পে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য স্বপন ওই এলাকার জাহিদ, ফরহাদ, খোকন ভূইয়া (৪৮) ও মঞ্জুরুল ইসলাম মিঞ্জুর (৩৩) সঙ্গে আলোচনা করেন। স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিতে পারলে স্বপন তাদের নগদ পাঁচ লাখ টাকা এবং জমি বিক্রির পর অর্ধেক মূল্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

ঘটনার দিন স্বপন তার পাঁচ সহযোগীসহ শিক্ষক অনিল কুমার দাসের ঘরে ঢোকেন। তারা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য অনিল কুমার দাসকে চাপ দেন। কিন্তু তিনি স্বাক্ষর করতে রাজি না হওয়ায় স্বপন বালিশ চাপা দিয়ে তাকে হত্যাকরেন।

এ সময় জাহিদ, ফরহাদ, খোকন ও মিঞ্জু অনিল কুমার দাসের হাত-পা চেপে ধরেছিলেন। এ ঘটনা দেখে ফেলায় অনিল কুমার দাসের স্ত্রী কল্পনা রানী দাসকেও একইভাবে হত্যা করা হয়। পরে তাদের দুজনের মরদেহের সঙ্গে ইট বেঁধে সেপটিক ট্যাংকের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় জড়িত খোকন ভূইয়া ও মঞ্জুরুল ইসলাম মিঞ্জুকে গত ১৪ মে পুলিশ গ্রেফতার করে। তাদের দুজনকে পরদিন আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ জানিয়েছে, স্বপন কুমার দাসসহ অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ সুপার জানান, মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছেন টাঙ্গাইল সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউর রহমান। চাঞ্চল্যকর এ মামলাটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্তের জন্য একটি সহায়ক কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আহাদুজ্জামানকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- পরিদর্শক শ্যামল দত্ত, উপ-পরিদর্শক হাফিজুর রহমান, উপ সহকারী পরিদর্শক হাফিজুর রহমান এবং কনস্টেবল শামসুজ্জামান।

নিহতের ছেলে এ মামলার বাদী নির্মল কুমার দাস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তদন্ত সঠিক পথেই এগুচ্ছে এবং ধারাবাহিক তদন্তে এ ঘটনায় উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত যারা জড়িত তাদের নামও বেরিয়ে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

গত বছর ২৭ জুলাই রসুলপুর বাছিরন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অনিল কুমার দাস ও তার স্ত্রী কল্পনা রানী দাসের মরদেহ তাদের রসুলপুর গ্রামের বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর অনিল কুমার দাসের ছেলে নির্মল কুমার দাস বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন।


ঢাকা, ১৯ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই

 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ