Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শনিবার, ১৮ই মে ২০২৪, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

প্রেমের বলি ব্যাংক কর্মকর্তার ও কলেজের শিক্ষিকা!

প্রকাশিত: ৮ মে ২০১৮, ০১:২৩

ফরিদপুর লাইভ: সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের এক শিক্ষিকা ও সোনালি ব্যাংক কর্তার মৃত্যুর রহস্য নিয়ে নানান গুঞ্জন চলছে। কেন এভাবে খুন হলো, কারা এর নেপথ্যে রয়েছে এসব নিয়ে চলছে তদন্ত। তবে অনেকেই বলেছেন প্রেমের বলি ব্যাংক কর্মকর্তার ও কলেজের শিক্ষিকা। পুলিশ জানিয়েছে তাদের মধ্যে পরকীয়ার বিষয়টি অনেকটাই স্পষ্ট।

রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই এলাকার নুরুল ইসলামের বাড়ি থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিক্ষিকার স্বামী মটরপার্টস ব্যবসায়ী শেখ শহিদুল ইসলামকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

জানাগেছে নিহত ওই কলেজ শিক্ষিকার নাম সাজিয়া বেগম (৩৬)। তিনি সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। তিনি দুই ছেলে নিয়ে ওই বাসার একটি ফ্লাটে থাকতেন। তার স্বামী ঢাকায় ব্যবসা করেন। তাদের বাড়ি রাজধানীর সূত্রাপুর থানার বানিয়া নগর।

অন্যদিকে নিহত ব্যাংক কর্মকর্তার নাম ফারুক হাসান (৩৮)। তার বাড়ি যশোরের শার্শায় হলেও থাকতেন রাজধানীর আগারগাঁও এলাকার ৩৮নং বাসায়। তিনি সোনালী ব্যাংক ঢাকার মতিঝিল কর্পোরেট শাখার লিগ্যাল মেটারস বিভাগের প্রিন্সিপাল কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

এদিকে জোড়া খুন নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠছে। যার উত্তর মিলছে না এখনও। তবে শিক্ষিকা ও ব্যাংক কর্মকর্তার মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পুলিশ।

ফরিদপুর কোতয়ালি থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ এএফএম নাসিম ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, শিক্ষিকার লাশ দরজার পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় এবং ব্যাংক কর্মকর্তার লাশ ফ্যানের হুকের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তার বুকেও আঘাতের ক্ষত রয়েছে। ফ্ল্যাট থেকে রক্ত মাখা চুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।

ওসি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে নিহত শিক্ষিকা ও ব্যাংক কর্মকর্তার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল সেটা নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। প্রথমে আমরাও ভেবেছিলাম শিক্ষিকাকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যা করেছে ব্যাংক কর্মকর্তা। কিন্তু বেশ কিছু আলামত থেকে এটিকে আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে না। দুইটিই হত্যা বলে মনে করছি। বাকিটা তদন্ত করে আর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।

এই কর্মকর্তা আরও জনান, নিহত ব্যাংক কর্মকর্তা তার পরিচয় গোপন করে এখানে বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। কয়েকদিন আগেই সে এই বাসায় উঠেছে। আবার তার দেহেও আঘাতের ক্ষত ছিল। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত শিক্ষিকার স্বামী শেখ শহিদুল ইসলামকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। তবে তার কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া গেছে কি-না সে তথ্য এখনই বলতে রাজি হননি তিনি। তদন্ত শেষে বলা যাবে।

নিহত শিক্ষিকা সাজিয়ার স্বামী শেখ মো. শহিদুল ইসলাম ও ফুফু আফসারী আহমেদ জানান, অন্যান্য দিনের মতো রোববারও যথারীতি কলেজে যান সাজিয়া। বিকেল ৪টায় স্বামীর সঙ্গে ফোনে কথা হলে সাজিয়া বাসায় ফিরছেন বলে জানান। এরপর থেকে আর ফোন রিসিভ করেনি সে।

বাড়ির মালিকের ছেলে ডেবিড হাসান জানান, নিহত কলেজ শিক্ষিকা এক বছর আগে এই বাসা ভাড়া নেন। তিনি তার দুই সন্তান নিয়ে বাসায় থাকতেন। তার স্বামী ঢাকায় ব্যবসা করে বিধায় মাঝে মধ্যে এই বাসায় আসতেন। ঘটনার দিন তার স্বামী ফরিদপুরের বাসাতেই ছিলেন।

আর ব্যাংক কর্মকর্তা ফারুক এক মাস আগে ভাড়া নেন। এক মাস আগে বাসা ভাড়া নিলেও তিনি থাকতেন না। দুইদিন আগে তিনি বাসায় এসে উঠেছেন। এদিকে ফারুক হোসেন সোনালী ব্যাংকের ফরিদপুরের কোনো শাখায় কর্মরত ছিলেন না দাবি করেন সোনালী ব্যাংকের ফরিদপুর প্রিন্সিপাল শাখার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. শামসুল হক।

তিনি জানান, ফারুক হোসেনের ছবি দেখে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হওয়া গেছে তিনি সোনালী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের লিগ্যাল মেটারস ডিভিশনে প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা বলেন, আমরা একাধিক সূত্র ধরে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আশা করি, খুব শিগগিরই সত্যটা জানাতে পারব।

সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের শিক্ষিকার এমন নির্মম মৃত্যুতে শোক পালন করছেন কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুলতান মাহমুদ জানান, একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার আজকের তারিখের সকল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

মানুষের এমন মৃত্যু মেনে নেয়া যায় না। যে বা যারাই সাজিয়া হত্যার সাথে জড়িত থাকুক না কেন তাদের অতিসত্ত্বর আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই আমরা।

 

ঢাকা, ০৭ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ