Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শনিবার, ১৮ই মে ২০২৪, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ছাত্রীকে তিন বছর ধরে ধর্ষণ, শিক্ষক গ্রেপ্তার, তোলপাড়

প্রকাশিত: ৮ মে ২০১৮, ০০:৫৬

পটুয়াখালী লাইভ: কুপ্রস্তাব। নানান প্রলোভন। ভয়ভীতি। কিছুই যখন কাজ হয়না তখন ইংরেজীতে ফেলের ভয় দেখিয়ে কব্জায় আনেন একই স্কুলের শিক্ষক তার ছাত্রীকে। ভয় ভীতির মাত্রা বাড়াতে থাকেন ওই শিক্ষক। তিন বছর ধরে চলতে থাকে ধর্ষণ। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় চলছে। ক্ষোভ প্রকাশ করছেন গোটা জেলার জনগণ।

একদিন দুইদিন নয়। একমাস দুই মাস নয় টানা তিন বছর ধরে চলতে থাকে ওই ধর্ষণের কাহিনী। ছাত্রীর শুরুটা হয়েছিল অষ্টম শ্রেণী ধেকে। এখন সে একাদশ শ্রেণীতে পড়ে। যখনই বকা হয় ছাত্রী তখনই ভিডিও ফাসঁ বা ছবি নেটে ছড়িয়ে দেয়াল ভয়ভীতি দেখিয়ে কব্জায় আনেন ওই লম্পট শিক্ষক রুহুল আমীন।

ঘটনাটি পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার। প্রাইভেট পড়ানোর নামে তিন বছর ধরে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মোঃ রুহুল আমিন পেয়াদার নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। পুলিশ ওই শিক্ষককে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে।

ধর্ষক শিক্ষক পুলিশের কাছে এ অভিযোগ স্বীকার করেছেন। পুলিশ তাকে আদালতে সোপর্দ করেছে। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বাদী হয়ে শিক্ষককে আসামি করে ধর্ষণের অভিযোগ এনে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিচ্ছেন।

স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউসুফ মোল্লা ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, এ বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের জরুরী সভা ডাকা হয়েছে। শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হবে। শিক্ষকতা থেকে চূড়ান্ত অব্যাহতি দেয়া হবে। কোনক্রমেই এ ঘটনায় ছাড় দেয়া হবে না বলেও তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন।

পরিবার ও অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক মোঃ রুহুল আমিন পেয়াদা (৩২)। তিনি ২০০৪ সালে উপজেলার বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নের গুয়াবাড়িয়া এবি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। এর পাশাপাশি সে স্কুলে ইংরেজি বিষয়েরও শিক্ষক। গলাচিপা উপজেলার চিকনিকান্দী ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের আঃ করিম পেয়াদার ছেলে রুহুল আমীন ।

ওই ছাত্রী অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকে শিক্ষক রুহুল আমিনের কাছে ইংরেজি প্রাইভেট পড়া শুরু করে। এ সময় রুহুল আমিন ছাত্রীটিকে বিভিন্ন সময়ে কুপ্রস্তাব দেয়। নানান প্রলোভন দেখায়। এতে ছাত্রী রাজি না হওয়ায় ইংরেজি পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকি দেয়।

ভয়ভীতির এক পর্যায়ে তিনি ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। গত তিন বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে তিনি ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে আসছেন। সর্বশেষ বাঁশবাড়িয়া গ্রামের জনৈক নাসির খানের ফাঁকা বাড়িতে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে শিক্ষক রুহুল আমিন ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন।

জানা যায় ওই ছাত্রী বর্তমানে পটুয়াখালী জেলা শহরের একটি কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষে পড়াশুনা করছেন। কলেজ হোস্টেলের সহপাঠীদের মাধ্যমে ধর্ষণের ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়। জানাজানি হয় এলাকায়।

এরপর ছাত্রীর মা এক নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে ঘটনাটি পটুয়াখালী সদর থানার পুলিশকে জানান। পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশ শিক্ষক রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করে গলাচিপা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। এরপরই ওই ছাত্রীর মা সোমবার গলাচিপা থানায় শিক্ষককে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।

গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাহিদ হোসেন ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, শিক্ষক রুহুল আমিন পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। ভিকটিম ওই ছাত্রীর মেডিকেল পরীক্ষার জন্য পটুয়াখালী পাঠানো হয়েছে।

অন্যান্য ছাত্রী ও অভিভাবকদের ওপর ঘটনাটি বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। ইতো মধ্যে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে এলাকাবাসী বিভিন্ন ভাবে তিরস্কার করছেন বলেনও জানাগেছে।


ঢাকা, ০৭ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ