রাঙ্গামাটি লাইভ: ধিক্কার। জঘন্য। সিন্ডিকেট করেও এখন চলে ধর্ষণ। সমাজের এখন করুণ দশা। স্কুল ছাত্ররাও এখন এই সবে জড়িয়েছে। গড়ে তুলেছে এলাকায় ধর্ষণ সিন্ডিকেট। ধর্ষণের পর ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ গণ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃস্টি করেছে।
এলাকায় ভাইরাল হয়েছে ওই ধর্ষণ ভিডিও। এলাকার অনেকেই বিষয়টি জানতেন। কিন্ত স্থানীয় প্রভাব আর প্রতিপত্তির কারণে কেউ মুখ খুলতে রাজি হয়নি। অবশেষে তারা ধরা খেল। তাও আবার আরেক প্রভাবশালী পরিবারের ধর্ষিতা শিক্ষার্থীর কারণে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে তিন এসএসসি পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা আমতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
ধর্ষকরা হলো- ওই ইউনিয়নের সর্দার পাড়ার বাসিন্দা আবদুস সালামের ছেলে মো. নাঈম হোসেন (১৭), মজিবুর রহমানের ছেলে মো. ফরহাদ হোসেন (১৬) ও মো. হাফিজ উল্লাহ রাহিদ (১৭)।
আমতলী ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পরিমল কুমার মন্ডল ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার তিন পরীক্ষার্থী চলতি এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।
গ্রেফতার হওয়ায় বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া চলতি এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি এ তিন পরীক্ষার্থী। এরা এলাকায় এধরণের নানান অপকর্মের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। প্রায়ই এধরনের ঘটনা ঘটিয়ে পরিবেশকে করেছে অস্থির। এরা বখাটে।
এলাকাবাসী জানায়, গত বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের পাবলাখালী বাজার এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে পলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে বাঘাইছড়ি থানায় চালান দিয়েছে আমতলীর পাবলাখালী ফাঁড়ির পুলিশ। এরা এখন জেল কারাগারে রয়েছে।
উপজেলার আমতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রাসেল চৌধুরী ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, এ তিন এসএসসি পরীক্ষার্থীকে একই বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হয়।
অন্যদিকে বাঘাইছড়ি থানা পুলিশের ওসি-তদন্ত মো. জাহাঙ্গীর আলম ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, ২০১৭ সালের ৪ নভেম্বর ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। কিন্তু লাজ লজ্জার ভয়ে মুখ খুলেনি ওই ধর্ষিতা।
এ বিষয়ে ওই তিন এসএসসি পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বাঘাইছড়ি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ মামলা করেন ওই ছাত্রীর বাবা আবদুর রউফ।
পুলিশ আরও জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ৪ নভেম্বর। সেদিন আমতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই তিন শিক্ষার্থী একই বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীটিকে বাগানে নিয়ে তার হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করে এবং এক সহপাঠীকে দিয়ে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে।
ওই ভিডিওর কথা বলে বার বার ধর্ষণের চেষ্টা করেছে ওই ধর্ষক সিন্ডিকেটের সদস্যরা। এরা ৬/৭ জনে মিলে এই ধর্ষণ সিন্ডিকেট গড়ে তুলে।
জানাগেছে লজ্জায় এবং ভয়ে এতদিন ঘটনাটি প্রকাশ করেনি ওই ছাত্রী। কিন্তু পরে ধর্ষণের ওই ভিডিও নিজেদের ফেসবুক আইডি থেকে ছড়িয়ে দেয় ধর্ষকরা।
এতে ঘটনাটি ফাঁস হয়। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়। ওই ভিডিও সবার মোবাইলে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওচিত্র ধরে ধর্ষকদের চিহ্নিত করে বুধবার সন্ধ্যায় তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে ভিডিও ধারণকারী এখনও অধরা।
এব্যাপারে নির্যাতিত স্কুলছাত্রীর বড় ভাই ও আমতলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রুবেল জানান, ঘটনাটি গত ৪ নভেম্বর ঘটলেও আমরা কেউ জানতাম না। মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও দেখে বিষয়টি জানতে পারি। এতদিন লজ্জায় ঘটনাটি কাউকে বলেনি তার বোন। কিন্তু যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে তারা নিজেরাই ভিডিও প্রকাশ করেছে।
এলাকার মানুষ এধরনের ধর্ষকদের কঠিন শাস্তির দাবী করেছেন। বলেছেন এখনই সময় এদের সমুলে উৎপাটন করা।
ঢাকা, ০২ ফেব্রুয়ারি (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: