Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

'ছাত্রীকে মৌখিকভাবে বিয়ে, পরিবার না মানায় হত্যা'

প্রকাশিত: ১১ মে ২০২৩, ২২:১৫

ভুক্তভোগী রাবেয়া আক্তার ও গ্রেপ্তার গৃহশিক্ষক সাইদুল ইসলাম

লাইভ প্রতিবেদক: করোনা মহামারির সময় গাজীপুরের সালনায় কলেজছাত্রী রাবেয়া আক্তারের (২১) বাসায় তাকে এবং তার মা ও দুই বোনকে আরবি পড়াতে শুরু করেন গৃহশিক্ষক সাইদুল ইসলামের (২৫)। এসময় পরিবারটির সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে ওই গৃহশিক্ষকের। একপর্যায়ে সবার অগোচরে রাবেয়াকে মৌখিকভাবে বিয়ে করেন তিনি। পরে পরিবারের কেউ মেনে না নেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন সাইদুল।

বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি জানান, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ৬৫০ টাকা দিয়ে গরু জবাইয়ের ছুরি বানিয়ে নেন গৃহশিক্ষক সাইদুল। এরপর সেই ছুরি নিয়ে বাসায় ঢুকে কুপিয়ে কলেজছাত্রী রাবেয়া আক্তারকে (২১) খুন করা হয়। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে ওই ছাত্রীর মা ও দুই বোনকেও কুপিয়ে জখম করা হয়।

খন্দকার আল মঈন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার সাইদুল জানান, ২০২০ সালে করোনাকালীন রাবেয়া তার দুই বোন ও মাকে আরবি পড়ানোর জন্য গৃহশিক্ষক হিসেবে সাইদুলকে নিয়োগ দেন। এ সুবাদে তিনি প্রতিনিয়ত সে বাসায় যাওয়া-আসা করতেন। পরে ভিকটিমের পরিবারের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে ভিকটিমকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সাইদুল। ৫-৬ মাস আরবি শেখানোর পর তার কাছে আরবি পড়া বন্ধ করে দেয়।

তিনি জানান, সাইদুল প্রতারণামূলকভাবে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ভুক্তভোগীকে মৌখিকভাবে বিয়ে করে। বিয়ে সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ভিকটিম ও তার পরিবারকে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। ভিকটিমের পরিবার বিষয়টি জানতে পেরে সাইদুলের সঙ্গে ভিকটিমের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

তিনি আরো জানান, ২০২২ সালের অক্টোবরে ভিকটিম গাজীপুর সদর থানায় তাকে উত্ত্যক্ত করার বিষয়ে একটি অভিযোগ করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে সাইদুল কিছুদিন ভিকটিমকে উত্ত্যক্ত করা থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু দুই মাস ধরে কলেজ এবং বাসার বাইরে যাওয়া-আসার পথে পুনরায় তাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। প্রস্তাবে রাজি না হলে ভুক্তভোগীকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।

র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক জানান, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৭ মে বিকেলে স্থানীয় বাজারে কামারের দোকানে ৬৫০ টাকা দিয়ে গরু জবাই করার একটি ছুরি তৈরি করতে দেয়। পরদিন ৮ মে সন্ধ্যায় ছুরি সংগ্রহ করে ভিকটিমের বাসায় গিয়ে সরাসরি তার রুমে ঢুকে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছুরি দিয়ে মাথায়, গলায়, হাতে এবং পায়ে আঘাত করে। এসময় ভুক্তভোগীর চিৎকারে তার মা ও দুই বোন এগিয়ে এলে তাদেরও ছুরি দিয়ে কুপিয় জখম করে পালিয়ে যায়। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এসে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বর্তমানে নিহতের মা আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।

রাবেয়া আক্তার ২০২০ সালে জয়দেবপুরের একটি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর গাজীপুরের চৌরাস্তার একটি কলেজে স্মাতক দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত ছিলেন। পাশাপাশি তিনি আইইএলটিএস পড়ালেখার পাশাপাশি স্থানীয় একটি বিউটি প্রোডাক্টস অনলাইন শপে চাকরি করতেন। আর সাইদুল চট্টগ্রামের একটি মাদ্রাসা থেকে দাওরা পাস করে গাজীপুরের একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করার পাশাপাশি স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামতি করতেন। এর পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন বাসায় গিয়ে আরবি পড়াতেন।

এর আগে গত ৮ মে গাজীপুরের সালনায় নৃশংসভাবে কুপিয়ে কলেজছাত্রীকে হত্যা এবং নিহতের মা ও দুই বোনকে মারাত্মক জখম করার ঘটনা ঘটে। পরে বুধবার (১০ মে) রাতে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর এলাকায় র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-১ অভিযান চালিয়ে আরবি শিক্ষক সাইদুল গ্রেপ্তার করেন।

ঢাকা, ১১ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ