কুষ্টিয়া লাইভ: আধিপত্য বিস্তার ও কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধ। এরই জেরে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জকে পিটিয়েছে প্রতিপক্ষ। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে পৌর এলাকার পিটিআই সড়কে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পুলিশের উপস্থিতিতেও প্রতিপক্ষ গ্রুপের নেতাকর্মীরা তাকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে পুলিশের গাড়িতে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
সেখানে চিকিৎসা না নিয়ে খালি গায়ে কয়েকজন কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর মুর্যালে যান ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক। এ সময় তার সারা মুখ রক্তাক্ত ছিল এবং কপাল দিয়ে রক্ত ঝরছিল।
এ ঘটনার পর রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতাল থেকে ফেসবুক লাইভে এসে হামলার শিকার ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ তাঁর ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপির দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিচার দাবি করেন এবং এ হামলার বিচার না পেলে তাঁর আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না বলে জানান।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস ধরে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা, কুষ্টিয়া শহর ও সরকারি কলেজসহ ৫ ইউনিটের কমিটি গঠন নিয়ে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের মধ্যে ঝামেলা চলে আসছে। এর আগেও হামলা ও মামলার ঘটনা ঘটেছে। দুই সপ্তাহ আগেও শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। সেই দফায় তিনি পালিয়ে যান।
প্রত্যক্ষদর্শী ও যে বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে সেই বাড়ির লোকজন জানান, দুপুরের দিকে শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ খাওয়ার জন্য পিটিআই রোডে তার খালায় বাসায় যান। খাওয়া-দাওয়া শেষে তিনি ওই বাসায় বসে গল্প করছিলেন। এ সময় শহর ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক হাসিব কোরাইশি, জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি অন্তর, ছাত্রলীগ নেতা অভি, সজলসহ তাদের প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন কর্মী ওই বাসায় গিয়ে চ্যালেঞ্জের খোঁজ করতে থাকে। ভয়ে চ্যালেঞ্জ বাসার টয়লেটের ফলস ছাদে আশ্রয় নেয়। ছাত্রলীগের কর্মীরা সেখানে উঠে টেনেহিঁচড়ে তাকে নিচে নামিয়ে আনেন। এরপর ছাত্রলীগের কর্মীরা লাঠি ও রড দিয়ে পেটাতে পেটাতে সামনের সড়কে নিয়ে আসে। ধারালো অস্ত্র দিয়েও তার মাথায় আঘাত করা হয়। এ সময় তারা ম্লোগান দিতে থাকে।
এ বিষয়ে গুরুতর আহত শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ জানান, কমিটি গঠন নিয়ে মূলত বিরোধ তৈরি হয়েছে। দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ অজয় সুরেকার অফিসে দেখা করতে যাই। সেখান থেকে বের হলে কয়েকজন যুবক আমাকে রেকি করতে থাকে। সেখান থেকে পিটিআই রোডে আমার খালার বাসায় যাই। সেখানে গিয়ে আক্রমণ করে জেলা ও শহর ছাত্রলীগের কতিপয় নেতাকর্মী।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান অনিক বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি।
জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আজগর আলীর সঙ্গে কথা হলে বলেন, এটা একটা ন্যক্কারজনক ঘটনা। ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য গুটিকয়েক নেতা প্রকাশ্যে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের ওপর হামলা চালিয়েছে। এমন কিছু কখনই কাম্য নয়।
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন খাঁন জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অপরাধীদের ছাড় দেওয়া হবে না। তদন্ত শেষে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।
ঢাকা, ২৩ নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: