Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বুধবার, ১লা মে ২০২৪, ১৮ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com
গণসমাবেশ শনিবার

ফরিদপুরে বিএনপির হাজারো নেতাকর্মীর অবস্থান

প্রকাশিত: ১১ নভেম্বার ২০২২, ২০:৫৪

 বিএনপির হাজারো নেতাকর্মীর অবস্থান

ফরিদপুর লাইভ: দেশের ময়মনসিংহ, বরিশাল ও রংপুরের মতো ফরিদপুরেও চলছে পরিবহন ধর্মঘট। শনিবার বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় গণসমাবেশ। কিন্তু নির্ধারিত দিনের দু'দিন আগেই পৌঁছে গেছেন হাজারো নেতাকর্মী। এদিকে, মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ শুক্রবার থেকে ফরিদপুরে দু'দিনের পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করেছে স্থানীয় পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। সকাল ৬টা থেকে শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত ৩৮ ঘণ্টা চলবে এ ধর্মঘট। এ জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে পরিবহন ধর্মঘটের সমর্থনে শহর ও আশপাশের এলাকায় মাইকিংও করা হয়। তবে সাধারণ লোকজনের মাঝে এর কোন প্রতিক্রিয়া নেই। লোকজন আসছেই।

এদিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ফরিদপুরে বিএনপির গণসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করার জন্যই বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। গতকাল বিকেলে গণসমাবেশস্থল শহরের উপকণ্ঠে কোমরপুরের আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউশন মাঠে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ, কৃষক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন বলে তথ্য মিলেছে।

অন্যদিকে ফরিদপুর জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আনিচুর রহমান বলেন, সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে মহাসড়কগুলোতে সব ধরনের থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বন্ধ হয়নি। এসব ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকাসহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন মহাসড়কে আঞ্চলিক পরিবহনের চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে। মহাসড়কে এসব যানবাহন চলাচল করায় দুর্ঘটনাও ঘটছে। এসব যানবাহন চলাচল বন্ধের দাবিতে দু'দিনের পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করছে ফরিদপুরের পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। সাধারণ মানুষ যদিও রে বিরোধীতা করছে।

এ ছাড়া বিএনপির এই সমাবেশ সামনে রেখে এক দিন আগে আজ শ্রমিক লীগের উদ্যোগে ডাকা হয়েছে শ্রমিক সমাবেশ। এতেও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে শহরে। আগামীকালের সমাবেশে অংশ নিতে প্রথম দল হিসেবে শরীয়তপুর থেকে কয়েকশ বিএনপি নেতাকর্মী বুধবার রাতে জনসভাস্থল আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউট মাঠে পৌঁছান। শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সদস্য গাউসুর রহমান জানান, তাঁরা চারটি ট্রাকে করে গণসমাবেশস্থলে এসেছেন। বিএনপির এই নেতাকর্মীরা জনসভাস্থলেই রাতযাপন করেন। তবে গতকাল সারা দিনই দলটির বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীকে আসতে দেখা গেছে।

সমাবেশ বিষয়ে সংশ্লিস্টরা জানান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, লোডশেডিং, দুর্নীতি-দুঃশাসন, লুটপাট, মামলা-হামলা, গুম, হত্যা, ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশের কর্মসূচি পালন করছে দলটি। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে তাদের কর্মসূচি। তার আগে সারাদেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিভাগীয় সমাবেশ।

সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠের মাঝখানে চলছে মঞ্চ তৈরির কাজ। মাঠে হাজারো নেতাকর্মী। একেকজন একেক দায়িত্ব পালন করছেন; রয়েছে উৎসবের আমেজ। মাঠের পশ্চিম পাশে দেখা যায়, টিন দিয়ে একটি শেড নির্মাণ করা। সেখানে রয়েছে চালের বস্তা, তেল ও রান্নার সামগ্রী। একসঙ্গে দুই হাজার লোকের জন্য খাবার প্রস্তুত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রান্নার কাজে নিয়োজিত হেলেনা বেগম।

এদিকে বিএনপির সমাবেশের আগের দিন ডাকা কর্মসূচি সম্পর্কে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইসতিয়াক আরিফ জানান, শুক্রবার বিকেল ৩টায় আমরা শহরের শেখ রাসেল স্কয়ার থেকে বিশাল শোভাযাত্রা করে রাজেন্দ্র কলেজের মাঠে গিয়ে সমাবশে করব। বিএনপি তাদের কর্মসূচি পালন করবে, আমরা আমাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি করব। এখানে তাদের সমাবেশকে কেন বাধাগ্রস্ত করব?

ফরিদপুরের এই বিভাগীয় গণসমাবেশের সমন্বয়ক শামা ওবায়েদ ইসলাম জানান, সরকার এই গণসমাবেশে আসা জনস্রোত বাধাগ্রস্ত করতে নানাভাবে বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে। তবে সরকারি দলের এই নোংরা চেষ্টা সফল হবে না। এ জন্য নেতাকর্মীরা আগেভাগেই সমাবেশস্থলে আসছেন। সারাদেশে বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, এই গণসমাবেশে লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে।

সমাবেশস্থল থেকে শহর পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য হবে- এমন প্রস্তুতিই নিচ্ছেন তাঁরা। তিনি আরও বলেন, শনিবার সকাল ১১টায় গণসমাবেশ শুরু হবে। তবে যেহেতু পথে পথে নানা বাধা এবং গণসমাবেশে জনসমাগম সংকুচিত করতে সরকার বিঘ্ন ঘটাচ্ছে, তাই নির্ধারিত সময়ের আগে থেকেই এ গণসমাবেশ চলবে। ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার জানান, সমাবেশকে ঘিরে পুলিশের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা, জনগণের নিরাপত্তা ও ট্রাফিক দায়িত্ব নির্বিঘ্ন রাখতে পুলিশ কাজ করছে।

আগে থেকেই মাঠে হাজারো কর্মীদের ভিড়:

ফরিদপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে অংশ নিতে দুই দিন আগে থেকেই দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেছেন। আগামী শনিবার (১২ নভেম্বর) শহরের উপকণ্ঠে কোমোরপুরে আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউট মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খোকন তালুকদারের নেতৃত্বে বুধবার রাত ১০টার দিকে তারা সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছেন। এ সমাবেশে আগতদের জন্য খাওয়া ও থাকার ব্যবস্থা করেছে আয়োজকরা। শরিয়তপুর জেলা বিএনপির সদস্য গাউসুর রহমান জানান, রাত ৮টার দিকে তারা চারটি ট্রাকযোগে শরিয়তপুর থেকে রওনা দিয়ে রাত ১০টার দিকে গণসমাবেশস্থলে এসে পৌঁছেন। তাদের সঙ্গে খোকন তালুকদার ছাড়াও শরিয়তপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব জাহানদার আলীসহ নেতাকর্মীরা রয়েছেন।

বিএনপি নেতা খোকন তালুকদার জানান, প্রথম দল হিসেবে রাতে শরিয়তপুর নেতাকর্মীদের একটি মাত্র অংশ এখানে যোগ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আরো নেতারা আসবেন। প্রায় ৫-৬ হাজার নেতাকর্মী তাদের শরিয়তপুর জেলা থেকে এই গণসমাবেশে যোগ দেবেন। শরিয়তপুরের বিএনপির এই নেতাকর্মীরা জনসভাস্থলেই রাত যাপন করেন।

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইসতিয়াক আরিফ জানান, বিএনপি তাদের কর্মসূচি পালন করবে, আমরা আমাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি করব। এখানে তাদের সমাবেশেকে কেন আমরা বাধাগ্রস্ত করব। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির কাজই হলো মিথ্যা তথ্য দিয়ে মানুষকে ধোঁকা দেওয়া। তাই তারা প্রতিদিন ভুলভাল তথ্য গণমাধ্যমকে দিচ্ছেন।

ফরিদপুরের এই বিভাগীয় গণসমাবেশের সমন্বয়ক শামা ওবায়েদ ইসলাম জানান, সরকার এই গণসমাবেশে আসা জনস্রোত বাধাগ্রস্ত করতে নানাভাবে বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে। এজন্য নেতাকর্মীরা আগেভাগেই সমাবেশস্থলে আসছেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে জেলা বাস-মালিক শ্রমিক ইউনিয়ন তাদের সবধরনের পরিবহন ধর্মঘটে চলে গেছেন। এটা এই সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা। তবে সরকারি দলের এই নোংরা চেষ্টা সফল হবে না।

সারাদেশে বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের আগে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ১২ নভেম্বর বেলা ১১টায় গণসমাবেশ শুরু হবে। তবে যেহেতু পথে পথে নানা বাধা এবং গণসমাবেশে জনসমাগম সংকুচিত করতে সরকার বিঘ্ন ঘটাচ্ছে তাই নির্ধারিত সময়ের আগে থেকেই এই গণসমাবেশ চলবে। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত চলবে ফরিদপুরের এই বিভাগীয় গণসমাবেশ। এরপর প্রথম ধাপের কর্মসূচি শেষে ১০ ডিসেম্বর ঢাকার মহাসমাবেশের মাধ্যমে দ্বিতীয় ধাপের কর্মসূচি শুরু হবে।

সমাবেশস্থলেই চলছে রান্নাবান্না:

পরিবহন ধর্মঘটকে মাথায় রেখে এরই মধ্যে বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীরা ফরিদপুরের কোমরপুরে সমাবেশ স্থল আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউট মাঠে আসতে শুরু করেছে। মাঠেই চলছে রান্নাবান্না। আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউট ভবন ব্যবহার করছেন বিশ্রাম নিতে। এদিকে শনিবার ১২ নভেম্বরের বিভাগীয় সমাবেশের আগের দিন থেকে ৩৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট চলবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের মাঝখানে চলছে মঞ্চ তৈরির কাজ। মাঠে হাজারো নেতাকর্মী। একেক জন এক এক দায়িত্ব পালন করছে। তাদের মুখে রয়েছে উৎসবের আমেজ। মাঠের পশ্চিম পাশে দেখা যায় টিন দিয়ে একটি শেড নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে রয়েছে পর্যাপ্ত চালের বস্তা, তেল ও রান্নার সামগ্রী। কয়েকজন মহিলাকে দেখা যায় পেঁয়াজ কাটছে। পাশেই দশটি সসমেন প্রস্তুত করছে বাবুর্চি। সসমেনগুলোতে পানি গরম করা হচ্ছে। এক সঙ্গে দুই হাজার লোকের জন্য খাবার প্রস্তুত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রান্নার কাজে নিয়োজিত হেলানা বেগম।

ঢাকা, ১১ নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএল


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ