সুনামগঞ্জ লাইভ: সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে সরকারি টাকায় নির্মিত ম্যুরাল হয়নি ডিজাইন মোতাবেক। ম্যুরালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুর ছবি থাকার কথা ছিলো। তবে বাস্তবে হয়েছে তার উল্টোটা। বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে ম্যুরালে সুনামগঞ্জের আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য মায়াজ্জেম হোসেন রতন ও তার ছোট ভাই ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রুকনের ছবি সংযুক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) সরেজমিনে এমন দৃশ্য দেখা যায়। তবে ম্যুরালের ডিজাইন পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে কথা ওঠায় ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন, ম্যুরালটি ভেঙে নতুন ডিজাইন মোতাবেক করা হবে।
জানা যায়, এলজিইডির ধর্মপাশা উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফ উল্লাহ খান চলতি বছরের ২৩ জুনে দেওয়া চিঠিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ধর্মপাশার মেসার্স রানা ট্রেডার্সকে ৯ লাখ ৯৯ হাজার সাতশ ২৪ টাকা চুক্তি-মূল্যে ত্রিশ দিনের মধ্যে মধ্যনগর ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে ম্যুরাল নির্মাণ কাজের কার্যাদেশ দেন। ওই ম্যুরালের ডিজাইনে একপাশে বঙ্গবন্ধু ও আরেক পাশে কেবল শেখ হাসিনার ছবি রয়েছে। সেখানে কোন অনুমতি ছাড়াই স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও তার ছোট ভাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রুকনের ছবি যুক্ত করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার মধ্যনগর এলাকা থেকে ম্যুরালের ডিজাইন ব্যত্যয়ের ছবি তুলে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে অসঙ্গতির এমন ছবি পাঠান স্থানীয়রা।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রানা ট্রেডার্সের পরিচালক মো. ইজাজুর রহমান রানার কাছে ডিজাইন পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমি কাজটি করিনি, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাহেব আমার লাইসেন্সটি নিয়ে চুন্নু মিয়া নামের ধর্মপাশার একজনকে দিয়ে কাজটি করিয়েছেন’।
ধর্মপাশার চুন্ন মিয়ার কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেবের নির্দেশে ম্যুরালের ডিজাইন পরিবর্তন হয়েছে। নেত্রকোণার আরো অনেক উপজেলায় এভাবে করা হয়েছে’।
এই বিষয়ে কথা বলার জন্য উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রুকনের কাছে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনও ফোন রিসিভ করেননি।
ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির হাসান জানান, এই বিষয়টি আমার জানা নেই। এভাবে সরকারি টাকায় নির্মিত ডিজাইনের পরিবর্তন করা যায় না। এটি এডিপির বরাদ্দে প্রায় ১০ লাখ টাকায় নির্মাণ করা হয়েছে। এই ডিজাইন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের করা। এটি পরিবর্তন করতে হলে উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে ডিজাইন পরিবর্তনের অনুমোদনের জন্য লিখতে হবে। ওখান থেকে অনুমতি পাওয়া গেলেই কেবল ডিজাইন পরিবর্তন করা যায়। আমি ঠিকাদারকে ডিজাইন মোতাবেক ম্যুরাল নির্মাণ করে দেবার জন্য চিঠি পাঠাব।
ঢাকা, ০৩ নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: