Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com
চিড়া-মুড়ি নিয়ে জনসভাস্থলে নেতাকর্মীরা

রংপুরে বিভাগের সর্বত্র পরিবহন ধর্মঘট, চরম ভোগান্তি

প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবার ২০২২, ০০:৫৩

সকাল থেকেই রাস্তা ফাকাঁ

লাইভ প্রতিবেদক: রংপুরে শহরে বিএনপির গণসমাবেশ আগামীকাল। একারণে বিভাগের গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাটসহ সকল জেলায় শুরু হয়েছে গায়েবী ধর্মঘট। আমাদের প্রতিনিধিরা জানান, হঠাৎ আজ সকাল ৬টা থেকে ৩৬ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতি। মোটর মালিক সমিতির ডাকা এ ধর্মঘটের কারণে শুক্রবার সকাল থেকে জেলার সব পরিবহন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রী, রোগী ও নানান পেশা ও শ্রেণীর মানুষ। এদিকে অসুস্থতার কারণে গোবিন্দগঞ্জ থেকে রংপুরে ডাক্তার দেখাতে যাবেন বাছিরন বেগম (৫৬)। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে তিনি একঘণ্টা যাবত ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের গোবিন্দগঞ্জ থানামোড়ে দাঁড়িয়ে আছেন।

আরেক রোগী নুরুল ইসলাম (৬০)। তিনিও সকাল ১০টায় থানামোড়ে এসেছেন রংপুরে যাওয়ার জন্য। শুধু রোগীই নয়। অফিস-আদালতসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে যাতায়াতে দূরপাল্লার বাস না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা। এ উপজেলা ছুঁয়ে যেতে হয় উত্তরের আট জেলায়। ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের থানামোড়ে সকাল থেকেই উত্তরের পরিবহনের চাপে যানজট লেগেই থাকে।

কিন্তু আজ প্রতিদিনের থেকে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। সকালেই পরিবহন ছিল অনেক কম। রাস্তা ছিল অনেকটা ফাঁকা। ছোট ছোট যানবাহনের দখলে ছিল ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক। এদিকে বিএনপি বলছে, এই ধর্মঘট আসলে বিএনপির গণসমাবেশ ঠেকানোর ধর্মঘট। যারা ধর্মঘট ডেকেছে তারা সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করছে। তবে সরকার যত ফন্দি আটুক না কেন ? সমাবেশ তারা ঠেকাতে পারবে না।

প্রসঙ্গত এর আগেও চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনার সমাবেশেও এভাবে ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল। কিন্তু শত বাধা পেরিয়ে নেতা-কর্মীরা সমাবেশে অংশ নিয়েছে। এরই মধ্যে নেতা-কর্মীরা তাদের এই ছক বুঝতে পেরে আগে থেকেই সমাবেশে যেতে শুরু করেছে। রংপুর জেলা মালিক সমিতি জানায়, মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন বন্ধের দাবিতে এই ধর্মঘট। অন্য কোন উদ্দেশ্য আমাদের নেই।

আর এই ধর্মঘটের ব্যাপারে জানতে চাইলে গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, ধর্মঘট সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের কোন চিঠিপত্র দিয়ে কিছু জানানো হয়নি। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় পরিবহন খুব কম। হাইওয়ে পুলিশ সার্বক্ষণিক টহলে আছে। রাস্তায় কোন নাশকতার চেষ্টা হলে তা প্রতিহত করবে পুলিশ। ে এ ব্যাপারে কোন ছাড় দেয়া হবে না।

লালমনিরহাটে বাস ট্রাক মাইক্রোবাস বন্ধ:

এদিকে লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে লালমনিরহাটে বাস, ট্রাক ও মাইক্রোবাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে ঢাকাগামী বাসও। শুক্রবার সকালে ঢাকার উদ্দেশ্যে কোনো বাস ছাড়েনি। এদিন রাতেও ঢাকাগামী কোনো বাস চলবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। লালমনিরহাটে কোনো বাস না চলায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।

বাস স্ট্যান্ডে এসে তারা অটোরিকশায় করে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন। তবে লালমনিরহাট থেকে দু একটি বাস পাটগ্রামের উদ্দেশ্যে যেতে দেখা গেছে।

লালমনিরহাট শহরের ব্যবসায়ী জাকির বলেন, ‘মাল আনতে রংপুরে যেতে হবে, অথচ বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি বাস বন্ধ।’ অন্য যাত্রী জসিম উদ্দিন ও সুজাতা জানান, চিকিৎসা নিতে ও রোগী দেখতে রংপুরের উদ্দেশ্যে তারা রওনা হয়েছেন। এখন দেখেন বাস বন্ধ। অটোরিকশায় করে রংপুরে যেতে রাস্তায় কোনো সমস্যা হবে কিনা সে শংকায় রয়েছেন তারা।

এদিকে ঢাকাগামী শাহ আলী পরিবহনের ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বলেন, ‘শুক্রবার সকালে আমাদের দুটি বাসের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। আর আজ রাতের পাঁচটি বাসের যাত্রা বাতিল করে যাত্রীদের মেসেজে ও ফোনে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এতে করে অনেক যাত্রী বিরক্তি ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।’ বলেছেন এসব কি চলছে। আমরা তো কোন রাজনীতি করি না। তবুও আমাদের ভোগান্তি কেন?

গাইবান্ধায় চলছে পরিবহন ধর্মঘট:

এদিকে গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, সড়ক পথে হয়রানির প্রতিবাদ ও তিন চাকার যানবাহনসহ মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবিতে গাইবান্ধাতেও চলছে পরিবহন ধর্মঘট। শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘট চলবে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। ধর্মঘটে গাইবান্ধা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে রংপুর ও বগুড়া রুটের বাসগুলো চলাচল বন্ধ রেখেছে মালিক-শ্রমিক ইউনিয়ন। ভোর থেকে এ দুই রুটের কোন বাস গাইবান্ধা টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়নি।

গাইবান্ধা জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম বাদশা জানান, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের মালিক ও শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দের নির্দেশে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে গাড়ি ভাংচুর ও নিরাপত্তার আশংকায় রংপুর ও বগুড়া রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দক্ষিণাঞ্চলের দূরপাল্লার বাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে এসব চলছে বলে লোকজন জানিয়েছেন।

এদিকে বাস ধর্মঘটে চরম দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা। হঠাৎ নির্দেশনায় বাস বন্ধ হওয়ায় দৈনিক মজুরিতে কর্মরত শ্রমিকরা পড়েছেন বিপাকে। জেলা মটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নাজিবুল আমিন নান্নু বলেন, মহাসড়কে হয়রানি, অটো ও সিএনজি চলাচল বন্ধের দাবিতে রংপুর জেলা মোটর মালিক ও শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটের কারণে গাইবান্ধাতেও বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিএনপির অভিযোগ আওয়ামী লীগ এসব করছে। তারা ফ্যাসিস্ট আচরণ অব্যাহত রেখেছে।

চিড়া-মুড়ি নিয়ে জনসভা মাঠে নেতাকর্মীরা:

এদিকে আমাদের বগুড়া প্রতিনিধি জানান, শহরের স্টেশন রোড এলাকায় সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে আছে ৫০টিরও বেশি বাস। বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় বাসগুলো ছেড়ে যাওয়ার কথা রংপুরে বিএনপি সমাবেশস্থলের উদ্দেশে। দুপুর থেকেই এসব বাসে সিট নেওয়ার জন্য কর্মীর উপচে পড়া ভিড়। আগামীকাল শনিবার বিকেলে গণসমাবেশ হলেও ভোর থেকেই মাঠে থাকবেন তাঁরা।

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতিকৃতি-সংবলিত গেঞ্জি পরিহিত কর্মীরা দল বেঁধে যাচ্ছেন সেখানে। গতকাল সন্ধ্যায় লালমনিরহাট থেকে ট্রেনে রংপুর স্টেশনে এসেছেন মিরাজুল ও সবুজের নেতৃত্বে ৬০-৭০ জন নেতাকর্মী। স্টেশনে রাতযাপনের পর শুক্রবার সকালে যাবেন সমাবেশস্থলে। জানালেন, বাস বন্ধের আশঙ্কা থেকে দু'দিন আগেই রংপুরে এসেছেন তাঁরা। এভাবে তাঁদের এলাকা থেকে আরও অনেকে আসছেন। স্টেশনে তাঁরা চিড়া-মুড়ি খেয়েই রাত পার করবেন। বাড়ি থেকে আসার সময় নিয়ে এসেছেন পানি, চিড়া ও কম্বল।

আবার গাইবান্ধার ফুলছড়ি থেকে বুধবার রাতেই এসেছেন আমিনুল ফরিদ। তিনি জানান, উঠেছেন এক আত্মীয়ের বাসায়। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন আরও ১২ নেতাকর্মী। তাঁরা সবাই সমাবেশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত রংপুরেই অবস্থান করবেন। লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার আবু বক্কর ও সিরাজুল মিয়া জানালেন, তাঁরা এসেছেন বাস বন্ধ হতে পারে- এ আশঙ্কায়।

রংপুরে পৌঁছার পর জানলেন, ঠিকই বাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন তাঁরা শুক্রবার সভাস্থলের আশপাশেই থাকবেন। তাঁদের মতো আরও শত শত নেতাকর্মী বৃহস্পতিবারেই রংপুরে পৌঁছেছেন বলে জানান তিনি। কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে রংপুরে আগামীকাল বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে হঠাৎ শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৩৬ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতি।

পরিবহন বন্ধ রাখার ক্ষেত্রে জেলা মালিক সমিতি মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন বন্ধের দাবিসহ নানা যুক্তি দিলেও বিএনপি বলছে, রংপুরে বিভাগীয় সমাবেশে লোকসমাগম ঠেকাতেই এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। তবে এসব করে জনসমাগম ঠেকানো যাবে না। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনার সমাবেশেও এমনি করে বাধা দেওয়া হয়েছিল। যে জন্য তাঁরা আগে থেকেই এসব পরিকল্পনা বুঝে নিয়েছেন। যত বাধাই আসুক; মানুষ স্বতঃস্ম্ফূর্তভাবে সমাবেশে অংশগ্রহণ করবে।

পরিবহন বন্ধে নেপথ্যে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা কলকাঠি নাড়ছেন বলে অভিযোগ করেছেন রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু। তিনি বলেন, শত বাধা-বিপত্তি জনস্রোত আটকাতে পারবে না। মানুষ হেঁটে হলেও সমাবেশে যোগ দেবে। বিএনপির এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল। তিনি বলেন, সমাবেশ সফল হবে না- বুঝতে পেরেই বিএনপি নেতারা মিথ্যা অভিযোগ করছেন। তাদের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা মিথ্যুক।

তারা সব সময় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মিথ্যা ছড়ানোর চেষ্টা করে। পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে মোটর মালিক সমিতি। সেটা আলাদা একটি স্বাধীন সংগঠন। তাদের সিদ্ধান্তের বিষয় তারাই ভালো বলতে পারবে। আওয়ামী লীগ চায়, বিএনপি সুষ্ঠুভাবে সমাবেশ করুক। কিন্তু সমাবেশের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করলে আমরা বসে থাকব না।

এদিকে, বিএনপি জিলা স্কুল মাঠ চেয়ে আবেদন করলেও সেখানে অনুমতি মেলেনি। পরে স্থানীয় প্রশাসনের অনুরোধে কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে সমাবেশের আয়োজন করেছে দলটি। জ্বালানি তেল, চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, হত্যা, হামলা ও মামলার প্রতিবাদে এবং দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে গণসমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। সমাবেশ সফল করতে জেলা-উপজেলাগুলোতে প্রস্তুতি সভাসহ প্রচারপত্র বিতরণ, জনসংযোগ, পথসভা করছেন দলের নেতাকর্মী।

এসব প্রস্তুতি সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মাঠ পর্যায়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীর সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি একেএম মোজাম্মেল হক বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন ও লাইসেন্সবিহীন যানবাহন চলছে। এ ছাড়াও রংপুর-কুড়িগ্রাম রুটে প্রশাসনিক হয়রানি দিন দিন বেড়েই চলেছে।

এসবের প্রতিবাদে আমরা এক যৌথ সভায় সব ধরনের গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিএনপির সমাবেশের এক দিন আগে বাস বন্ধের বিষয়টি লোকসমাগমে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সমাবেশ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। আমাদের এ কর্মসূচির প্রস্তুতি আগে থেকেই চলছিল। সংগঠনের নেতাদের সর্বসম্মতির পর ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে রাজনৈতিক দলের কর্মসূচির কোনো সম্পর্ক নেই।

এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ উন-নবী ডন বলেন, এর আগের সমাবেশগুলোতেও গণপরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছিল। পথে পথে বিএনপি নেতাকর্মীর বাধা দিয়েছিল পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। এখন রংপুরেও তাই করার চেষ্টা করছে তারা। পরিবহন ধর্মঘট করে এই সমাবেশকে বানচাল করতে চায়। যাতে সমাবেশে আমাদের নেতাকর্মী আসতে না পারে, সে ব্যবস্থাই করেছে।

কিন্তু যেভাবেই হোক সমাবেশ সফল হবে। ঢাকা থেকে রংপুরে এসে পৌঁছেছেন রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশের দলনেতা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ। গতকাল সমাবেশস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তাঁরা নাকি ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় খেলা দেখাবেন। আমরা তো খেলা দেখছি। শনিবার রংপুরে আমরাও খেলা দেখব। স্মরণকালের সর্ববৃহৎ গণসমাবেশ হবে এদিন। যার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হবে- সারাদেশের মানুষ বিএনপির সঙ্গে আছে।

তিনি বলেন, একটি পরিচ্ছন্ন এবং রেকর্ডভাঙা উপস্থিতি নিশ্চিত করতে আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। এর আগে রংপুরের কোনো সমাবেশে এত লোক হয়নি- সেটাই টার্গেট আমাদের। আমরা নিশ্চিত করেছি- শুধু বিএনপি নেতাকর্মী নয়; তৃণমূল, নগর, শহর এবং বন্দরের সাধারণ মানুষও এ কর্মসূচিতে অংশ নেবে।
সরেজমিন দেখা গেছে, কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠের মিনারের সামনেই কাঠ ও বাঁশ দিয়ে ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৫ ফুট প্রস্থ মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। মাঠের পাশে কয়েকটি গেটও করা হচ্ছে।

রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার নুরে আলম মিনা জানান, বিএনপির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সম্মেলন উপলক্ষে বিএনপি নেতাকর্মী নির্বিঘ্নে আসছে। কাউকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেন তিনি।

রংপুরে আত্মীয়ের কদর বেড়েছে :

আমাদের সাদুল্যাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি জানান, বিএনপি নেতাকর্মীর কাছে কদর বেড়েছে রংপুরের আত্মীয়স্বজনের। গণসমাবেশে যোগ দিতে যাঁরা আগাম রংপুরে যাচ্ছেন, তাঁরা আশ্রয় নিচ্ছেন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে। এ জন্য রংপুর মহানগরসহ আশপাশ এলাকার আত্মীয়স্বজনকে বেছে নিয়েছেন তাঁরা। সেখানে থেকেই তাঁরা দ্রুত সমাবেশে যাবেন। হোটেল-মোটেলে থাকলে বাধা আসতে পারে। তাই নির্ভরযোগ্য আশ্রয়স্থল হচ্ছে আত্মীয়স্বজনের বাড়ি।

এ উছিলায় অনেক পুরোনো আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দীর্ঘ দিন পর দেখা হতে পারে বিএনপি নেতাকর্মীর। গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস ছালাম মিয়া বলেন, দলের নেতাকর্মী এখন বেশ চাঙ্গা। দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরকারের বাধা পেরিয়ে বিএনপির সফল সমাবেশ দেখে দলের তৃণমূল নেতাকর্মী উজ্জীবিত। তারা যে কোন মূল্যে সমাবেশ করবে বলে জানিয়েছেন।

ঢাকা, ২৮ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ