রংপুর লাইভ: রাস্তায় সাইড দেওয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবলুর ওপরে হামলা চালিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) কর্মীরা। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বুড়িরহাট সংলগ্ন মৌলভীবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে বাবলুর ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গঙ্গাচড়া বাজারে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ বাবলুর সমর্থকরা। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্বজন ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
আহত বাবলুর দাবি- রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে হত্যার উদ্দেশ্যে তার ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়েছে প্রতিপক্ষ। তাকে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছেন হামলাকারীরা। বর্তমানে গুরুতর আহত বাবলু রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আসাদুজ্জামান বাবলু বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গাড়িতে করে রংপুর থেকে গঙ্গাচড়া যাওয়ার পথে মৌলভীবাজার এলাকায় পৌঁছালে সদর ইউনিয়নের জাতীয় পার্টির নেতা মাহফুজুর রহমান দুলুর সমর্থকরা রাস্তা অবরোধ করেন। এরপর কয়েকজন গাড়ির সামনে এসে রড দিয়ে অতর্কিত হামলা চালান। এতে গাড়িচালকসহ আমি আহত হই। পরে নেতা-কর্মীরা আমাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রংপুর শহর থেকে প্রাইভেটকারে করে গঙ্গাচড়ায় নিজ বাড়ির দিকে ফিরছিলেন আসাদুজ্জামান বাবলু। এ সময় বুড়িরহাট ঈদগাহ মাঠ এলাকায় রাস্তার সাইড দেওয়াকে কেন্দ্র করে জাতীয় পার্টির কর্মী খোকনের সঙ্গে বাবলুর গাড়িচালকের বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মোটরসাইকেল চালক খোকন প্রাইভেটকারটি ওভারটেক করে মৌলভীবাজারে গিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যান এবং সেখানে তার লোকজন নিয়ে প্রাইভেটকারের গতিরোধ করেন। এ সময় বাবলু গাড়ি থেকে নেমে আসা মাত্রই পাশের একটি দোকান থেকে রড নিয়ে এসে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন খোকন ও তার লোকজন। এতে বাবলু হাতে এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হন।
হামলার নেতৃত্বে থাকা খোকন গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত জাতীয় পার্টি মনোনীত মাহফুজার রহমান দুলুর অনুসারী বলে জানা গেছে। ওই নির্বাচনে আসাদুজ্জামান বাবলু আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছিলেন।
আহত আসাদুজ্জামান বাবলুর মা বলেন, আমার ছেলে জনপ্রিয় একজন নেতা। গঙ্গাচড়ায় আমার ছেলে যাকে সমর্থন করে সেই প্রার্থীই নির্বাচনে জয় লাভ করে। মাহফুজুর রহমান দুলুর সঙ্গে আমার ছেলের দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ ছিল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। আজকে সুযোগ পেয়ে আমার ছেলেকে তারা মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলাম লেবু বলেন, মাহফুজুর রহমান দুলু সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচনের জিততে না পেরে ক্ষোভ থেকেই এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। আমরা নেতা-কর্মীরা আসাদুজ্জামান বাবলুর পাশে আছি। এই ঘটনায় জড়িতরা জাতীয় পার্টির যত বড় নেতাই হোক না কেন, তাদের বিচার চাই।
অভিযুক্ত জাতীয় পার্টির নেতা মাহফুজুর রহমান দুলুকে এাধীকবার ফোন করা হলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
গঙ্গাচড়া মডেল থানার ওসি দুলাল হোসেন জানান, আসাদুজ্জামান বাবলুর ওপর হামলার ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
ঢাকা, ১৪ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: