লাইভ প্রতিবেদক: যশোরের অভয়নগর উপজেলায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাস খেলে শিক্ষক দিবস উদ্যযাপন করেছে পায়রাহাট ইউনাইটেড কলেজের খণ্ডকালীন বাংলা শিক্ষক ও অন্বেষণ নামের একটি কোচিং সেন্টারের শিক্ষক রফিক সানি। ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি ছবি শেয়ার দেওয়ার পর তুমুল সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ছবির বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো অন্যায় কাজ করেননি বলে জানান ওই শিক্ষক।
ছবিতে দেখা যায়, দুজন ছাত্রী ও ছাত্র তাস দিয়ে মুখ ঢেকে ছবি তুলেছেন। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘শিক্ষক দিবসের বড় উপহার তোদের আগমন। তোরা না আসলে সত্যিই দিনটি হতাশায় ডুবে যেত। ভালোবাসা নিস প্রাণের টুকরাগুলো।’
এই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন সচেতন মহল। নাজির নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘পেশার সঙ্গে এই মোনাজাত তাও আবার ফেসবুকে আপলোড চরম ধৃষ্টতা ও নিন্দনীয়।’ মিঠু মোল্যা নামের অপর একজন লিখেছেন, শিক্ষকের কাছ থেকে এ জাতীয় কর্মকাণ্ড আশা করা যায় না।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পায়রাবাজার নূরানী মাদ্রাসা সংলগ্ন চারটি রুম নিয়ে ধুকে ধুকে চলছে কোচিং সেন্টারটি। প্রতিষ্ঠানটির তিনটি কক্ষে পাঠদান হলেও একটি কক্ষে থাকেন ওই শিক্ষক। এর আগেও বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কারণে সমালোচনার মুখে পড়েন ওই বাংলা স্যার। সম্প্রতি অবাধ যৌনাচারের ইঙ্গিত বহনকারী কয়েকটি পোস্ট শেয়ার করে সমালোচনার জন্ম দেন এই শিক্ষক।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতার আড়ালে তিনি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডে উৎসাহ দিয়ে আসছেন। তা ছাড়া তাঁর বিকৃত চিন্তা চেতনা ছড়িয়ে দিচ্ছে কোমলমতী শিক্ষার্থীদের মাঝে। অভিযোগ রয়েছে নানা স্পর্শকাতর বিষয়ে লেখালেখি করে আলোচনায় আসতে চাচ্ছে এই শিক্ষক। এতে করে যেমন সামাজিক অবক্ষয় বাড়ছে তেমনি কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মৌলিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তার এমন কর্মকাণ্ড বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে কোচিংয়ের আরকে শিক্ষক আল আমিন মোল্যার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমারও পছন্দ হয়নি। জানতে চাইলে পায়রাহাট ইউনাইটেড কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম ইকবাল কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এদিকে ওই কোচিং শিক্ষক রফিক সানি বলেন, ‘আমি ছবি আপলোড দিয়ে কোনো অন্যায় করিনি। এরা সবাই আমার সাবেক শিক্ষার্থী।’ এ নিয়ে ৩ নম্বর চলিশিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সানা আ. মান্নান বলেন, ‘তাঁর এই কার্যক্রম গ্রহণযোগ্য নয়, এগুলো আমাদের সমাজ সমর্থন করে না।’
বুধবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে পায়রা বাজার সংলগ্ন অন্বেষণ কোচিং সেন্টারে ওই শিক্ষকের বেডরুমে এ ঘটনা ঘটে। ওই শিক্ষক অভয়নগর উপজেলার পায়রা গ্রামের লুৎফার রহমানের ছেলে।
এ বিষয়ে পায়রা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বিশ্বাস জানান, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। এ ধরনের কাজ সে আগেও করেছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।’
ঢাকা, ০৬ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: