Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com
প্রথম দেখা জর্ডানে, পরিচয় থেকে পরিণয়...

প্রেমের টানে শ্রীলঙ্কান যুবক বাংলাদেশে

প্রকাশিত: ২ অক্টোবার ২০২২, ০৩:১১

প্রেমের টানে শ্রীলঙ্কান যুবক বাংলাদেশে

আবদুল্লাহ শরীফ, জয়পুরহাট: প্রেম সেতো কোন নিয়ম নীতি মানে না। কোন শক্তিই তখন সেখানে কাজ করেনা। স্বপ্ন তখন একটাই থাকে। কোন জাত-বিজাত এমনকি ধর্মকেও মানে না। একারণে ইসলামসহ অনেক ধর্মেই এজাতীয় প্রেমকে নিষেধ করেছেন সেই ধর্মের গুরুজনেরা। প্রেম মানে না কোনো বাধা। প্রেমের টানে হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে ভিনদেশি তরুণ-তরুণীর বাংলাদেশে ছুটে আসার ঘটনা ঘটছে প্রায়ই শুনা যায়। তবে এবার বাংলাদেশে এসেছেন শ্রীলঙ্কান নাগরিক। তিনি প্রেমের টানে এক তরুণীকে ভালবেসে দেশে এসেছেন। ওই বাংলাদেশী তরুণীর নাম

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, জয়পুরহাট সদর উপজেলার উত্তর পাথুরিয়া গ্রামের শাহাদুল ইসলামের মেয়ে রাহেনা বেগম (৩২) এর সাথে এক শ্রীলঙ্কার তরুণের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ওই তরুণী ২০১৪ সালে গার্মেন্টসে চাকরির উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে জর্ডানে পাড়ি জমান। পরে তিনি একটি গার্মেন্টস কোম্পানিতে চাকরিতে যোগ দেন। একই কোম্পানির সুপাইভাইজার শ্রীলঙ্কান যুবক রোশান মিঠুনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে তাদের সখ্যতা। তাদের সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। একে অপরকে ভাল বেসে ফেলেনে অনায়াসেই।

এ বিষয়ে রাহেনা বেগম বলেন, পারিবারিকভাবে অল্প বয়সে বিয়ে হয়। আমার একটি সন্তানও রয়েছে। জর্ডানে যাওয়ার কিছুদিন পর আমার স্বামী আমাকে ডিভোর্স দেন। পরে জর্ডানে আমার কোম্পানির সুপাইভাজার রোশানের সঙ্গে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে আমাদের প্রেম হয়। দেড় বছর আগে নিজ দেশ শ্রীলঙ্কায় ফিরে যান রোশান। একে অপরকে বিয়ে করতে সম্মত হন। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে তা আর সম্ভব হয়নি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আমি দেশে চলে আসি।

সেই রাহেনা আরও বলেন, এরপর ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের কথা হয়। রোশানের পরিবারের সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কা থেকে বাংলাদেশে আসেন রোশান। পরে তাকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে জয়পুরহাটের বাড়িতে নিয়ে আসি। দুই পরিবারের সবার সম্মতিক্রমে বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) অ্যাফিডেভিট করে আমরা বিয়ে করি।

এদিকে সুঠাম দেহের অধিকারী ৩৩ বছর বয়সী শ্রীলঙ্কান যুবক রোশান মিঠুন অল্প অল্প বাংলা বলতে পারেন। রওশন মিঠুন জানান, জর্ডানে কর্মরত অবস্থায় রাহেনা বেগমকে ভালবাসতাম। তার সাথে আমার একটা সম্পর্ক গড়ে উঠে।। নিজে বাংলাদেশে এসে পরিবারের সম্মতিতে তাকে বিয়ে করেছি। এদেশের মানুষ খুবই ভাল। এরা অতিথি পরায়ন। আমি বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষকে খুব ভালোবাসি। আমি এখানে এসে বিয়ে করেছি। এখানেই থাকতে চাই। উত্তর পাথুরিয়া গ্রামের প্রতিবেশী ইনু আরা বেগম বলেন, শ্রীলঙ্কান যুবক হলেও আমাদের বাংলাদেশের ছেলেদের মতো মনে হয়েছে। আমি প্রথমে বুঝতে পারিনি শ্রীলঙ্কান। আমরা প্রতিবেশী হিসেবে খুব খুশি। উনি খুবই ভাল মানুষ। তার আচার ব্যবহার অনেক ভাল।

রোশান মিঠুনের ব্যাপারে আরেক প্রতিবেশী শাহাজান আলী জানান, প্রথমে একটু শুনে অবাক হলাম। আমাদের এই গ্রামে এসে শ্রীলঙ্কান যুবক রাহেনাকে বিয়ে করেছে। একটু অবাক লাগতো। কিন্তু না মিঠুন সাহেব খুবই ভদ্র মানুষ। কম কথা বলেন। তার ব্যবহার বেশ ভাল। আমরা কুশি। তাদের এই দাম্পত্য জীবন সুখী হোক। তাদের জন্য শুভ কামনা করেন শাজাহান আলী।

এদিকে রাহেনার বাবা শাহাদুল ইসলাম জানান, আমার মেয়ে রাহেনা জর্ডানে থাকাকালে রোশানের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আমার মেয়ে আমাকে বিষয়টি জানায়। পরে শ্রীলঙ্কান ছেলে রোশানের পরিবারের সঙ্গে আমি কথা বলি। তাদের কথা অনেক ভালো লেগেছে। একপর্যায়ে ছেলেটিকে আমি বাংলাদেশে আসতে বলি। এরপর তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। আমি রোশান মিঠুনের আচার ব্যবহারে মুগ্ধ। সে খুবই বিনয়ী স্বভাবের লোক। আমরা খুশি। তাদের জন্য দেশবাসির কাছে দোয়া চান রাহেনার বাবা শাহাদুল ইসলাম।

জয়পুরহাট জজ কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ ফরিদুজ্জামান জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার একটি এফিডেভিট (বিয়ে ঘোষণা) করা হয়েছে। তবে একই ধর্মের হওয়ায় তেমন কোনো আইনি বাধা নেই। এরা ইসলামী শরিয়ত মত বিয়ে সম্পন্ন করেছে।

ঢাকা, ০১ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ