কুমিল্লা লাইভ: কুমিল্লার ৭ কলেজ শিক্ষার্থীকে নিয়ে তোলপাড় চলছে। তাদের কোন সন্ধান এখনও মেলেনি। কেবল তাদের পরিবার নয় গোটা এলাকাবাসী এনিয়ে রয়েছেন উৎকন্ঠায়। আতঙ্ক তো রয়েই গেছে। এরা কোন দুষ্ট চক্রের শিকার নাকি ভিন্ন মতলব তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে গত ২৩ আগস্ট বাসা থেকে বের হয় কুমিল্লার কলেজপড়ুয়া ৭ শিক্ষার্থী। এরপর তারা আর ফেরেনি ঘরে। ১৮ দিন পার হলেও তাদের খোঁজ মেলেনি। দুশ্চিনায় আছে তাদের পরিবার ও স্বজনরা। এরা কি অপহরণের শিকার নাকি অন্য কোন খারাপ সঙ্গে যোগ দিয়েছে এনিয়ে চলছে নানান আলোচনা ও সমালোচনা।
এ ব্যাপারে র্যাব বলছে, উগ্রবাদে জড়িয়ে কথিত হিজরতের নামে ঘর ছাড়ে ওই সাত কলেজ ছাত্র। সংশ্লিস্টরা জানায়, তাদের পথ অনুসরণ করে অন্য ৪ কিশোরও ঘর ছাড়ে। ৭ ছাত্রের সন্ধান না মিললেও ৪ কিশোরকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
অন্যদিকে শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) ৪ কিশোরকে উদ্ধার করে তাদের পরিবারের জিম্মায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। র্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানিয়েছেন। তারা ঘুরতে গিয়েছিল বলে প্রাথমিক ভাবে দাবী করেছে।
তিনি বলেন, নিখোঁজ ওই সাত শিক্ষার্থীর পর কুমিল্লা থেকে আরও ৪ কিশোর বাসা থেকে হিজরতের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিল। বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে সেই চার কিশোরকে আটক করে র্যাব। পরে তাদের ডি-রেডিকালাইজেশনের মাধ্যমে পরিবারের কাছে তুলে দেওয়া হয়।
এদিকে র্যাবের গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, ৭ শিক্ষার্থীর মতো ১ সেপ্টেম্বর একই উদ্দেশ্যে ঘর ছেড়েছিল তারা। তাদের হেফাজতে নিয়ে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে বোঝানো হয়েছে। ওই কিশোররা বলেছে, তারা আর জঙ্গিবাদে জড়াবে না। অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে তাদের ওপর নজর রাখা হচ্ছে। কে বা করা তাদের সাথে যোগাযোগ করেছে তাও নজরদারিতে রেখেছে।
সংশ্লিস্টরা জানান, গত ২৩ আগস্ট বাসা থেকে যে ৭ কলেজছাত্র নিখোঁজ হয় তারা হলেন- কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক সম্পন্ন করা নিলয়, এইচএসসি পরীক্ষার্থী ইমরান বিন রহমান (১৭), সামি (১৮) একই কলেজের অনার্স প্রথমবর্ষের ছাত্র ইমতিয়াজ আহমেদ রিফাত (১৯), অনার্স তৃতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম (২৩) এবং (২৫)। কুমিল্লা সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী হাসিবুল ইসলাম (১৮) এবং নিহাল (১৭) প্রমুখ।
এদের মধ্যে নিখোঁজ ইমরান বিন রহমানের বাবা মজিবুর রহমান জানান, ২৩ আগস্ট দুপুরে কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে বের হয়। এরপর সে রাতে বাসায় না ফেরায় বিভিন্ন স্থানে তাকে খোঁজ নিয়েছি। আমরা সম্ভাব্য সকল জায়গায় দেখেছি। পাইনি। না পেয়ে পরদিন কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। এ ব্যাপারে কুমিল্লা র্যাব-১১কেও অবগত করেছি।
অন্যদিকে বাকি ৬ ছাত্রের অভিভাবকরাও একই রকম কথা বলেছেন। নিখোঁজ ৭ ছাত্র প্রত্যেকেই পরস্পরের পরিচিত বলে জানা গেছে। এরা কোথায় আছে, কিভাবে আছে কাদের কাছে আছে তা কেউ স্পস্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে জোড় তদন্ত চলছে।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আব্দুল মান্নান জানান, সাধারণ ডায়রির সূত্র ধরে আমরা কাজ শুরু করেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম কাজ করছে। তাছাড়া বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও কাজ করছেন। তথ্য পেলেই জানানো হবে।
ঢাকা, ১০ সেপ্টেম্বর(ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: