দিনাজপুর লাইভ: অমানবিক। নির্মম। একজন স্কুল ছাত্রের সঙ্গে এই আচরণ! ছাত্রটিকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছে ভারতীয় বিএসএফ। দাইনুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে মিনহাজুল ইসলাম ওরফে মিনার বাবু (১৬) নামে এক বাংলাদেশি স্কুলছাত্র নিহত হয়। ঘটনাটি নিয়ে সারা দেশে তোলাপাড় শুরু হয়েছে ।
অনেকেই বলছেন প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর করে আসতে না আসতেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বিএসএফ। বাংলাদেশ ভারতের বন্ধুত্বের একি পরিনাম! সংশ্লিস্টরা বলছেন এরা অমানুষ। একজন স্কুল ছাত্রের সঙ্গে এহেন আচরণ কেউ মেনে নিতে পারছেন না। ধিক্কার ও ক্ষোভে ফুসেঁ উঠেছে এলাকাবাসী।
তারা বলছেন দু:খের বিষয় পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় থেকে এখনও কোন প্রতিবাদ জানানো হয়নি। আমরা স্বাধীন রাস্ট্রের নাগরিক কিন্তু এসব কিসের লক্ষন। বিএসএফের গুলিতে স্কুলছাত্র মিনার বাবু হত্যার ৪৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও মরদেহ পায়নি পরিবার। এখন পর্যন্ত মরদেহ হস্তান্তর করেনি বিএসএফ। এলাকায় শোকের মাতম চলছে।
জানাগেছে দিনাজপুরের দাইনুর সীমান্তে হত্যার ঘটনার ৪০ ঘণ্টা পর বিজিবির পক্ষ থেকে ডাকা হয় বৈঠক। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সদরের ৯নং আস্করপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর ছিদ্দিক, সংরক্ষিত নারী সদস্য রুমানা পারভীন, নিহতের বাবা জাহাঙ্গীর আলম, নিহতের চাচাতো ভাই রুবেল হাসানসহ কয়েকজন বিজিবির খানপুর সীমান্ত ফাঁড়িতে যান।
সেখানে তারা নিহতের ছবি, শরীরের চিহ্নসহ নানা তথ্য প্রদান করেন। সেসব বিএসএফর কাছে হস্তান্তর করবে বিজিবি। মেইলের মাধ্যমে বিএসএফকে সেগুলো দিয়ে সংবাদ পাঠানো হয়েছে বলে বিজিবি জানিয়েছে।
এদিকে নিহত হওয়ার দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও মরদেহ ফিরে না পাওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন পরিবারের সদস্যরা। ছেলের শোকে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন মা। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়ে গেলেও মরদেহ না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী এবং স্বজনেরা।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সদরের ৯নং আস্করপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর ছিদ্দিক, সংরক্ষিত নারী সদস্য রুমানা পারভীন, নিহতের বাবা জাহাঙ্গীর আলম, নিহতের চাচাতো ভাই রুবেল হাসানসহ কয়েকজন বিজিবির খানপুর সীমান্ত ফাঁড়িতে যান। সেখানে তারা নিহতের ছবি, শরীরের চিহ্নসহ নানা তথ্য প্রদান করেন। সেসব বিএসএফর কাছে হস্তান্তর করবে বিজিবি। মেইলের মাধ্যমে বিএসএফকে সেগুলো দিয়ে সংবাদ পাঠানো হয়েছে বলে বিজিবি জানিয়েছে।
নিহতের একমাত্র বোন জান্নাতুল পারভীন বলেন, আমার ভাইকে বিএসএফ হত্যা করেছে। আমরা মরদেহ চাই। আমরা ভালোভাবে কাফন-দাফন করতে পারি যেন। আমার ভাইকে হত্যার বিচার চাই। নিহতের মা মিনারা পারভীন বলেন, আমার বুক খালি করা হয়েছে। এই গুলির অর্ডার কে দিয়েছে? এই বর্ডার দিয়ে কেন ভারতের মাল পার হয়? ওদের মাল কেন বাংলাদেশে আসে? এইজন্য এই বাচ্চাগুলো মারা যায়। কারও মায়ের বুক যেন খালি না হয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই আমার দাবি। মিনারের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার ছেলেটার মরদেহ ফেরত চাই। আমি মাটি দিবো।
নিহত মিনারের চাচাতো ভাই রুবেল হাসান বলেন, আমার ভাইকে বিএসএফ গুলি করে মেরেছে। এতক্ষণ হয়ে যাচ্ছে মরদেহ ফেরত দিচ্ছে না। আমরা মিনারের মরদেহ দ্রুত ফেরত চাই এবং এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই। বিজিবিও আমাদেরকে তেমন সহযোগিতা করছে না। আর প্রধানমন্ত্রী ভারতে গিয়ে যেদিন বললেন যে, সীমান্তে আর যেন হত্যা না হয় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, ওই রাতেই গুলি করা হলো। আমাদের জমি তো সীমান্তে, আমরা কেন সীমান্তে যেতে পারব না?
ওই ইউপির সংরক্ষিত নারী সদস্য রুমানা পারভীন বলেন, আমরাও চেষ্টা করছি যাতে করে দ্রুত মরদেহ আমাদের নিকট হস্তান্তর করে। খানপুর সীমান্ত ফাঁড়ির দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. আনিস বলেন, এ ব্যাপারে অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলেন। আমি কিছু জানি না।
গত বুধবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে জেলার সদর উপজেলার দাইনুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে মিনহাজুল ইসলাম ওরফে মিনার বাবু (১৬) নামে এক বাংলাদেশি স্কুলছাত্র নিহত হয়। সে সদর উপজেলার ৯নং আস্করপুর ইউনিয়নের ভিতরপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। খানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণিতে পড়ালেখা করত। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে আরও একজন। এছাড়া অন্য একজন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
ঢাকা, ০৯ সেপ্টেম্বর(ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেডআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: