লাইভ প্রতিবেদক: ‘মুভমেন্ট পাস’ নিয়ে চলবে মোটরসাইকেল। কেউ যদি ঢাকা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে নিজ জেলা যেতে চান তাহলে প্রথম যেসব জেলা পার হবেন সেই জেলা থেকে সংশ্লিষ্ট ফরম্যাটে গন্তব্য, রুট, ভ্রমণের কারণ, তারিখ ও সময়, মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নম্বর, আরোহীর সংখ্যা ও রাইডারের মোবাইল নম্বর দিয়ে মুভমেন্ট পাস নিতে হবে। মুভমেন্ট পাসে অনুমোদনকারী অফিসার স্বাক্ষর করবেন। এর একটি কপি রাইডারের কাছে থাকবে, অন্যটি অফিস কপি হিসেবে সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে থাকবে বলে জানানো হয়ছে।
৭ জুলাই দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস্) মো. ফারুক হোসেন জানান, ঢাকার ৮টি ট্রাফিক বিভাগ থেকে সংগ্রহ করা যাবে মুভমেন্ট পাস। কেউ মুভমেন্ট পাস নিতে চাইলে যৌক্তিক কারণসহ বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং গাড়ির বৈধ কাগজের ফটোকপি আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
ঢাকার বাহিরে যারা থাকেন, তারা সহ-জেলার পুলিশ কমিশনার অফিস থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন। ‘মুভমেন্ট পাস’ নিয়ে চলাচল করা যাবে মোটরসাইকেলে‘মুভমেন্ট পাস’ নিয়ে চলাচল করা যাবে মোটরসাইকেলে। করোনার মহামারির সময় যেভাবে চলাচলের জন্য মুভমেন্ট পাস নিয়ে চলাচল করা গেছে একইভাবে যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে মোটরসাইকেল আরোহীরা নিজে এবং পরিবার নিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে পারবেন। তবে কোনো রাইড শেয়ার করা যাবে না।
ঈদযাত্রায় সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশ সুপার কিংবা হাইওয়ে পুলিশ সুপারের কাছ থেকে ‘মুভমেন্ট পাস’ নেওয়া মোটরসাইকেল আরোহীদের বাধা দেবে না পুলিশ। এ পাস দেখিয়েই তারা নির্বিঘ্নে ঈদযাত্রা করতে পারবেন। প্রয়োজনে পরিবারের সদস্যদের নিয়েও মোটরসাইকেলে বাড়ি যেতে পারবেন তারা। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, মোটরসাইকেল চালানো একজন মানুষের একান্তই ব্যক্তিগত অধিকার। এতে বিধিনিষেধ দেওয়ায় জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হতে পারে। এ কারণেই মুভমেন্ট পাস দেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, বিআরটিএর পরিপত্রে বলা আছে- এক জেলায় রেজিস্ট্রেশনকৃত মোটরসাইকেল অন্য জেলায় চালানো যাবে না। তবে যৌক্তিক ও অনিবার্য প্রয়োজনে পুলিশের অনুমতি নিয়ে মোটরসাইকেল চালানো যাবে।
কেউ যদি যৌক্তিক কারণ নিয়ে মুভমেন্ট পাস নিতে আসেন তাহলে তাকে পাস দেওয়া হবে। পাস নিয়ে তিনি তার গন্তব্যে যেতে পারবেন। ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মারুফ হোসেন সরদার বলেন, বিআরটিএর নীতিমালা আমরা অনুসরণ করবো। আমাদের কাছে মুভমেন্ট পাসের ফরম্যাট করা আছে। কেউ যদি আমাদের কাছে আবেদন করেন অবশ্যই তাকে পাস দেবো।
হাইওয়ের পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন অ্যান্ড মিডিয়া) মো. শামসুল আলম সরকার বলেন, হাইওয়ে পুলিশের পাঁচজন আঞ্চলিক পুলিশ সুপার এবং সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশ সুপারের কাছ থেকে মুভমেন্ট পাস নেওয়া যাবে। পাস ছাড়া মহাসড়কে কাউকে চলতে দেওয়া হবে না।
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ঈদের সময় প্রতিটি মোটরসাইকেল আটকে তার বাড়ি যাওয়ার কারণ জানার যৌক্তিকতা আছে বলে মনে করেন না তারা। ঈদযাত্রার সময়ে ১ থেকে ২ মিনিট রাস্তা বন্ধ থাকলে দীর্ঘ যানজটের আশঙ্কা তৈরি হয়। বৃহস্পিতবার (৭ জুলাই) থেকে ঢাকায় অন্তত ৮টি চেকপোস্টে পুলিশ থাকবে। সেখানে থাকবে ট্রাফিক পুলিশও।
এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবর রহমান বলেন, দূরপাল্লার মোটরসাইকেল যাতায়াত বন্ধ রাখাটা যৌক্তিক। তবে একজন মানুষের মোটরসাইকেল চালানো তার ব্যক্তিগত অধিকার। এ নিয়ে বিতর্কও তৈরি হতে পারে। তিনি বলেন, মোটরসাইকেলে একজন মানুষকে প্রয়োজনীয়তার জন্যই মুভ করতে হতে পারে। সাধারণত বাইক নিয়ে বাইরেও অনেকেই জরুরি কাজে বের হতে পারেন। অসুস্থতা থাকতে পারে, সাংবাদিকরা তাদের কাজে মোটরসাইকেল নিয়ে বাইরে বের হতে পারেন, করোনাসহ বিভিন্ন রোগের আক্রান্তদের জন্য জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।
এমনকি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়েও কেউ বাইকে বের হতে পারেন। তবে আদেশ যেহেতু হয়েছে, আমরা আদেশটি ফলো করবো। ‘তবে কেউ যদি যৌক্তিক ও সন্তোষজনক কারণ দেখাতে পারেন এবং যদি আমাদের কাছে মনে হয় সেটি লজিক্যাল, তাহলে তা অবশ্যই আমরা বিবেচনা করবো। সরকারি আদেশ বাস্তবায়ন করতে গেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসাতে হবে। এজন্য আমরা বিআরটিএর কাছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চেয়েছি। তাহলে যৌক্তিকভাবে বিষয়টি কার্যকর করতে পারবো এবং মানুষের কাছেও তা গ্রহণযোগ্য হবে।’
যারা নির্দেশনা মানবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কি না জানতে চাইলে ট্রাফিক বিভাগের প্রধান বলেন, আইনগতভাবে এটি কোনো দোষ না। আমরা মানুষকে নিবৃত করবো। এর আগে গত রোববার (৩ জুলাই) সড়ক পরিবহন সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী জানান, ঈদের আগে ও পরে সাতদিন এক জেলা থেকে অন্য জেলায় মোটরসাইকেল চালানো যাবে না। বন্ধ থাকবে মহাসড়কে রাইড শেয়ারিংও। ৭ জুলাই থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত এটি বলবৎ থাকবে।
সরকারি এ নির্দেশনা পরিপালনে ৭ জুলাই থেকে রাজধানীর প্রবেশমুখে প্রতিটি মোটরসাইকেল আটকানো হবে। তবে রাজধানী থেকে আশপাশে ঢাকা জেলার অধীন কোনো গন্তব্যে চলাচলকারী যানবাহন এর আওতামুক্ত থাকবে বলে সংশ্লিস্টরা জানান।
ঢাকা, ০৭ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিআইটি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: