
লাইভ প্রতিবেদক: রাজধানীর সরকারি টিচার্স ট্রেনিং (টিটি) কলেজে আম পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কর্মচারী চান্নু বিশ্বাসের মৃত্যুতে অধ্যক্ষের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার ( ১৩ মে) দুপুর ১২টায় কলেজের মূল ফটকের সামনে মানবন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, নিহত চান্নু বিশ্বাস (৪২) কলেজে মাস্টার রোলে গাড়ি চালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু অধিকাংশ সময়ই তাকে অধ্যক্ষের ব্যক্তিগত নানা কাজ করতে হতো। গাছ থেকে ডাব, কাঁঠাল, আমও পাড়তে হতো তাকে। চাকরি বাঁচানোর জন্য এসব কাজ বাধ্য হয়েই করতেন তিনি। শিক্ষার্থীরা যাতে আম পাড়তে না পারেন সেজন্য অধ্যক্ষ কর্মচারীদের দিয়ে আগেভাগেই নিয়মিত সব ফল সংগ্রহ করাতেন। সেই ধারাবাহিকতায় গতকাল এই কর্মচারীকে জোর করে তার বাড়ির গাছে উঠানো হয়েছে।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী শিব্বির বলেন, ‘অধ্যক্ষের নির্দেশ ছাড়া কোনো কর্মচারী তার বাসায় যেতে পারেন না। গতকাল অধ্যক্ষের নির্দেশে তার বাসার ভেতরের আমাগাছে ওঠেন চান্নু বিশ্বাস। তার অকাল মৃত্যুর জন্য অধ্যক্ষই দায়ী। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই৷’
তার বাসভবনের ভেতরে নিশ্চিত ঝুঁকি জেনেও একজন কর্মচারীকে গাছে তুলে দেওয়া হয়েছে দাবি করে মো. মনিরুজ্জামান নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, অধ্যক্ষ এখন দাবি করছেন এই ঘটনার সঙ্গে তিনি কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট না। অথচ তার বাসভবনে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও লোকজন থাকেন। তাদের চোখ ফাকি দিয়ে বা অধ্যক্ষের অবগতির বাইরে গিয়ে কেউ গাছে ওঠার সাহস করবে না। নিহত গাড়িচালক চান্নু বিশ্বাস দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তার পরিবার-পরিজন এখন জীবন যাপনের অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (১২ মে) বিকেলে (আনুমানিক সাড়ে পাঁচটার দিকে) কলেজের আবাসিক এলাকায় অধ্যক্ষের বাসভবনের ছাদে উঠে অ্যালুমিনিয়ামের পাইপ দিয়ে গাছ থেকে আম পাড়তে যান চান্নু বিশ্বাস। এ সময় ছাদের ওপরের বিদ্যুৎ এর লাইনে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। পরে তাৎক্ষণিক তাকে পার্শ্ববর্তী পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে ঢামেকের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা, ১৩ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমবি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: