চবি লাইভ: কোন তদবীর আর সুপারিশে কাজ হয়নি। এবার প্রশাসন নিজ থেকেই যৌন নিপীড়নকারী ছাত্রলীগ কর্মীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে। এখন দেখার বিষয় গোপনে তারা আবার কোন ষড়যন্ত্র করছে কি না। এমন দাবী ও অভিযোগ করেছেন যৌন নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থীরা। তারা বলেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে। কিন্তু আন্দোলন থামাতে কর্তৃপক্ষ নানান কৌশল নেন। এবারও কৌশল কি না এমন প্রশ্ন তারা তুলেছেন।
সংশ্লিস্টরা জানান, চবি এক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় অভিযুক্ত দুইজনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদের বিরুদ্ধে আগেও বিভিন্ন অভিযোগ আছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
এবারের বহিষ্কৃত এ দুজন হলেন, আজিম হোসেন (ইতিহাস বিভাগ, শিক্ষাবর্ষ ২০১৯-২০) ও নুরুল আবছার বাবু (নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী)। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শহিদুল ইসলাম এমন কথাই জানিয়েছেন। বলেছেন আমরা কোন অন্যায়ের কাছে মাথা নিচু করবো না। কোন ছাড় নয়।
সহকারী প্রক্টর আরোও জানান, অপর দুই অভিযুক্ত মাসুদ রানা ও নুর হোসেন শাওনের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ করবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। তারা চট্টগ্রামের হাটহাজারি কলেজের শিক্ষার্থী। তাই তারা এ ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।
সংশ্ষ্টিরা জানান, শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় মূলহোতা আজিমসহ প্রথমে চারজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৭। শুক্রবার রাতে রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। পরে তাদের পাকরাও করা হয়।
এদিকে পুলশ জানায়, গ্রেপ্তাররা হলেন, আজিম হোসেন, নুর হোসেন শাওন, নুরুল আবছার বাবু ও মাসুদ রানা। শনিবার নতুন করে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নাম সাইফুল ইসলাম। তিনি বহিরাগত। এছাড়া র্যাবের কাছে আটক হিসেবে আছেন একজন। তিনি মেহেদী হাসান হৃদয়। তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে।
আজিম, নুরুল আবছার ও মেহেদী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কর্মী। মেহেদী ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী। এছাড়া বাহিরাগত শাওন হাটহাজারী কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। একই কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুদ। তারাও ছাত্রলীগ কর্মী।
চবির সহকারী প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলাম বলেন, এছাড়া আমাদের কিছু সুপারিশ আছে। এর মধ্যে কলোনির যার সন্তান এই ঘটনায় জড়িত তাকে সতর্ক করা। ক্যাম্পাসে লাইটিং ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা ও গার্ডদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানোন্নয়ন করা। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এসব সিদ্ধান্ত নেয় কমিটি।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে ক্যাম্পাসে পাঁচ তরুণের হাতে এক ছাত্রী যৌন নিপীড়ন ও মারধরের শিকার হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় পাঁচ তরুণ ওই ছাত্রীকে বেঁধে বিবস্ত্র করে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন।
এ সময় তার সঙ্গে থাকা এক বন্ধু প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধর করা হয়। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার প্রক্টরের কাছে অভিযোগ দেন ওই ছাত্রী। এর একদিন পর বুধবার মামলা করেন হাটহাজারী থানায়। এই ঘটনায় সাধারন শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। দাবী আদায় করেই ঘরে ফিরেছে।
ঢাকা, ২৩ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: