লাইভ প্রতিবেদক: সারাদেশে একের পর এক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে। কোনভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না এইসব প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীদের। তারই ধারাবাহিকতায় পিছিয়ে নেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েও। এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে।
ওই বিভাগের সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও পরীক্ষার খাতা চুরি হয়েছে। এ ঘটনায় লিখিতভাবে দোষ স্বীকার করেছেন বিভাগের একজন অফিস সহকারী ও দুই শিক্ষার্থী।
বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার সিএসই বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ‘ফিজিক্স-২’ কোর্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা চলছিল। সেই দিন মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিতে আসেন বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. সিরাজুল ইসলাম। পরীক্ষা শুরুর আগে খাতা বিতরণের সময় সিরাজুলের কাছে লিখিত উত্তরপত্র পান কেন্দ্রের এক পরিদর্শক।
পরে লিখিত উত্তরপত্রটি জব্দসহ ওই শিক্ষার্থীকে বিভাগের সভাপতির কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে এ ঘটনায় আরো দুজনের নাম বলেন। সেই দুজন হলেন অফিস সহকারী নির্মল চন্দ্র দাস ও সিরাজুলের সহপাঠী শাখাওয়াত হোসেন। পরে প্রায় তিন ঘণ্টা ওই তিনজনকে জেরা করা হয়। জেরা শেষে তিনজনই চুরির সঙ্গে জড়িত বলে লিখিত স্বীকারোক্তি দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থী সিরাজুল ইসলাম বিভাগের স্টাফ নির্মল চন্দ্র দাসের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসের কাজটি করেছেন। আর এতে সহযোগিতা করেছেন সিরাজুলের বন্ধু মো. শাখাওয়াত হোসেন। প্রশ্ন মডারেশনের পর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে নেওয়ার আগে অথবা পরে প্রশ্নপত্র চুরি করেন বিভাগের কর্মচারী নির্মল চন্দ্র দাস।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য সচিব ও উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নুরুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের কাছে ওই বিভাগ থেকে লিখিত অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সিরাজুল ইসলাম জানায়, ‘এ ঘটনার সঙ্গে আমি একা নই, আরো অনেকেই জড়িত।’
অফিস সহকারী নির্মল চন্দ্র দাস জানায়, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ড. মো. আবদুল মালেক বিভাগের সভাপতির কক্ষে কম্পিউটারে প্রশ্নের কাজ করেন। বিভাগের সভাপতির কক্ষের কম্পিউটার থেকে সিরাজুল ইসলাম ও তাঁর বন্ধু শাখাওয়াত হোসেন প্রশ্নপত্র চুরি করে। সেই সঙ্গে তাঁরা দুজন বিভাগের সহকারী নির্মল চন্দ্রের কক্ষ থেকে উত্তরপত্রও চুরি করেন।
বিষয়টি তিনি (নির্মল) জানতে পারলে ওই দুই শিক্ষার্থী প্রশ্ন ও উত্তরপত্র চুরির কথা কাউকে না বলার জন্য তাঁকে অনুরোধ করেন। এছাড়াও প্রশ্ন ও উত্তরপত্র চুরির বিষয়টি বিভাগের কাউকে না বলার জন্য ওই শিক্ষার্থীরা আমাকে চাপ দিতে থাকেন।
ঢাকা, ২৪ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: