চট্টগ্রাম লাইভ : ঘটনার শুরু বুধবার বিকেল থেকে। চট্টগ্রাম নগরের অক্সিজেন মোড় থেকে এক কিলোমিটার পূর্বদিকে পশ্চিম শহীদনগর এলাকায় রাস্তার পাশে চারতলা একটি বাড়িতে ওই দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটায় হাজির হন চারজন।
তারা বাসা ভাড়া নিতে চান। এক তরুণী ও ৩ যুবক আসেন ওই বাসা ভাড়া নিতে। বাড়ির নিচতলায় তত্ত্বাবধায়ক হাসিনা বেগমের সঙ্গে কথা বলেন তারা। পরিচয় দেন ৪জনের মধ্যে দুই জন স্বামী-স্ত্রী। বাকী দুইজন বন্ধু। তরুণীটি অন্ত:সত্ত্বা বলেও জানানো হয়। বাড়ির তৃতীয় তলার খালি ফ্ল্যাটটি দেখতে চান তারা। বাসা দেখে পছন্দ হয় তাদের। থাকবেন স্বামী-স্ত্রী।
এর আগের দিন বিকেলে ওই চারজনের একজন (নিহত যুবক নয়) ফ্ল্যাট খালি আছে কি না, তা জানতে আসেন। তবে বাসার ভেতরে ঢোকেননি।
তবে বুধবার তরুণীসহ ওই ৪জন বাসা ভাড়া নেওয়ার নাম করে ঘরে ঢোকেন। আজ থেকেই থাকতে চান তারা। রাজি হয়ে যান তত্ত্বাবধায়কও। এরপর তারা ভেতরে ঢুকে ঘর গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এরই এক ফাঁকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মো. আলাউদ্দিনকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। তাকে টয়লেটে হাত-পা বেধে নির্যাতন করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। মাত্র তিন ঘন্টার কিলিং মিশন সফল করে পালিয়ে যায় খুনিরা।
বাড়ির মালিক হাসিনা আক্তার বলেন, ভাড়া নিতে আসা যুবকদের একজন জানান, ওই তরুণী অন্তঃসত্ত্বা। তারা পাশের এলাকা হামজারবাড়ের একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। সেখানে সমস্যা হচ্ছে। যে কারণে আজই এ বাসায় উঠতে চান। মালামাল পরে আনবেন। মাসে ভাড়া সাড়ে সাত হাজার টাকা। এরপর তিনি রাজি হন। তাদের একজন বাসা পরিষ্কার করার জন্য তার কাছ থেকে বালতিও চেয়ে নেন।
হাসিনা আক্তার বলেন, সন্ধ্যা সাতটার দিকে তিন যুবকের মধ্যে একজন বাসার নিচতলায় তার কাছে বালতি ফেরত দিয়ে বেরিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ আগে স্বামী-স্ত্রী পাশের দোকান থেকে প্রয়োজনীয় বাজার করার জন্য বেরিয়ে যান। রাত আটটার দিকে তিনি নিচতলা থেকে তৃতীয় তলায় গিয়ে দেখেন, ফ্ল্যাটটির দরজা খোলা। কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ভেতরে ঢোকেন। দেখেন বাসার টয়লেটের ভেতর হাত-পা বাঁধা লাশ। সঙ্গে সঙ্গে তিনি স্বামীকে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
ঘটনার পর থেকে হাসিনা বেগম ও তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলমকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তার স্বামী বাসার পাশে একটি পানের দোকান চালান।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বাড়ির মালিক ফটিকছড়ির বাসিন্দা ওমানপ্রবাসী আবু সৈয়দ। তার অবর্তমানে বাড়িটি দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করছেন তারা। বাসার নিচতলায় তারা থাকেন। প্রতিটি তলায় দুটি করে ফ্ল্যাট রয়েছে।
নিহত আলাউদ্দিনের বাড়ি হাটহাজারী উপজেলার ফতেপুর গ্রামে। তার বাবা শাহ আলম আগে দুবাই ছিলেন। চার বছর আগে দেশে ব্যবসা শুরু করেছেন।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি মোহাম্মদ মুহসীন বলেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। খুন হওয়া যুবক ও খুনিরা পূর্বপরিচিত। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
ঢাকা, ২৪ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: