চবি লাইভ: পরিবারের ‘বড় ছেলে’ সাদেকুল ইসলাম পড়াশোনা করতেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগে। বাবা নেই তাই সংসারের হাল তাকেই ধরতে হয়েছে। টিউশনির টাকায় তিনি পড়াশোনার বাইরেও পরিবারের ভরণপোষণ করতেন। তবে আর তিনি টিউশনির টাকা পাঠাতে পারবেন না। একটি দুর্ঘটনায় তার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। তিনি চলে গেছেন না ফেরার দেশে। সারাজীবনের কান্না হয়ে থাকবেন তিনি তার পরিবারে।
হাসপাতালে ১০ দিন মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করে অবশেষে মারা গেছেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ওই ছাত্র। শনিবার (০১ জুন) সকাল ৬টা ১০ মিনিটে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
জানা গেছে, গত ২৩ মে (বৃহস্পতিবার) সাদেকুল চট্টগ্রাম নগরীর পলেটেকনিক্যাল মোড় এলাকায় টিউশনি থেকে ফিরছিলেন। হঠাৎ পিছন থেকে একটি মাইক্রো তাকে ধাক্কা দেয়। তাকে আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। চমেকে প্রথম দুই দিন তার শরীরের অবস্থা কিছুটা ভালো থাকলেও তৃতীয় দিন থেকে অবনতির দিকে যেতে থাকে। এক পর্যায়ে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
সেখানে টানা মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করে অবশেষে শনিবার সকালে না ফেরার দেশে চলে যায় সাদেকুল। তার গ্রামের বাড়ী কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার সুখিয়া গ্রামে। তিনি পরিবারে তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড়। তার বাবা ৫ বছর আগে মারা যান।
এর পর থেকে সংসারে হাল ধরেন সাদেকুল। নিজের পড়াশোনার খরচ বহন করেও তিনি পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতেন। টিউশনি করে সংসারের খরচ চালিয়েছেন। এখন সংসারের খরচ কিভাবে চলবে এনিয়ে দু:শ্চিন্তায় তার পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের উপার্জনক্ষম বড় ছেলেকে হারিয়ে তারা এখন নির্বাক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর লিটন মিত্র বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার পাশে ছিল। আমরা তার সার্বক্ষণিক খোঁজ নেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করেছি।
ঢাকা, ১ জুন (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: