বান্দরবান লাইভ: এবার বিজিবির ৩ সদস্য ফেঁসে যাচ্ছেন। তারা বর্বর ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এনিয়ে গোটা এলাকার মানুষ ক্রমেই ফুঁসে উঠছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। বান্দরবান জেলার লামায় দুই ত্রিপুরা শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে তিন বিজিবি সদস্যসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে লামা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, উল-আযহার দিন দিবাগত রাতে বনফুর রামগতি ত্রিপুরা পাড়ার পাশের একটি জঙ্গলে এই ২ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বনফুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী তারা। শুক্রবার সকালে ধর্ষণের শিকার দুই ছাত্রীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, গত ঈদ-উল আযহার দিন বুধবার দিবাগত রাতে রামগতি ত্রিপুরা পাড়ার বলিচন্দ্র ত্রিপুরার স্ত্রী জনেরুং ত্রিপুরা (২৭) একই পাড়ার দুই শিশু শিক্ষার্থীকে বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে ডেকে আনে। শিশুরা রাতে বাড়িতে ফিরে নি।
এ বিষয়ে লামা থানা অফিসার ইনর্চাজ আপ্পেলা রাজু নাহা জানান, ধর্ষণের শিকার হওয়া দুই শিশুর এজাহার রের্কড করা হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের কার্যক্রম চলছে। বান্দরবান পুলিশ সুপার জাকের হোসেন মজুমদার জানিয়েছেন, পুলিশ মামলার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে। অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
বৃহস্পতিবার সকালে শিশুরা বাড়ি ফিরে তাদের অভিভাবকদের জানিয়েছে বনফুর বিজিবি ক্যাম্পের ৩ বিজিবি সদস্য দ্বারা তারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ২ শিশুর পিতা-মাতা ও তাদের আত্মীয়-স্বজন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে লামা থানায় হাজির হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে এজাহার দায়ের করে। লামা থানার মামলা নং ০৫।
অভিযুক্তরা হলো, ত্রিশডেবা বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক রবিউল ইসলাম, বিজিবি সৈনিক সুমন, মারুফ এবং স্থানীয় জনেরুং ত্রিপুরা (২৭)। বিজিবি নায়েক রবিউল ইসলাম ও জনেরুং ত্রিপুরার সহায়তায় সৈনিক সুমন ও মারুফ কথিত দুই শিশুকে ধর্ষণ করেছে মর্মে এজাহারে দাবি করা হয়েছে।
সেখানকার স্থানীয় ইউপি মেম্বার আপ্রুচিং মার্মা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল থেকে ত্রিশডেবা বিজিবি ক্যাম্পের অবস্থান দেড় কিলোমিটার দূরে এবং রামগতি পাড়ার ৫ শত গজের মধ্যে। পোষাক পরিহিত লোকজন এতদূরে গিয়ে এ জাতীয় একটি ঘটনা ঘটাবে তা বিশ্বাস হচ্ছে না। ঘটনাটি আমার কাছে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র মনে হচ্ছে।
এলাকার লুৎফুর রহমান, মনির উদ্দিন ও আবুল কালাম জানান, একটি গোষ্ঠী দীর্ঘদিন থেকে বনফুর বিজিবি ক্যাম্প প্রত্যাহার করার জন্য ষড়যন্ত্র করে আসছে। পাহাড়ি উক্ত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বনফুর ক্যাম্প প্রত্যাহার হলে হত্যা, খুন, ধর্ষণ ও চাঁদাবাজি নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতে পারবে। তাদের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র এই ঘটনার জন্ম দিয়েছে।
ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার জানান, বনফুর ত্রিশডেবা বিজিবি ক্যাম্প হইতে এক থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে জনসম্মুখ দিয়ে গিয়ে পোষাক পরিহিত লোকজন ধর্ষণ করার বিষয়টি আমার বোধগম্য হচ্ছে না। এখানে যে কোন ধরণের ষড়যন্ত্র রয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি জোনের অধিনায়ক লে. কর্ণেল আসাদুজ্জামান জানান, ত্রিশডেবা ক্যাম্প সরানোর জন্য অনেক ষড়যন্ত্র চলে আসছে। ক্যাম্প না থাকলে পাহাড়ি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনায় কোন বাধা থাকবে না।
সে কারণে সন্ত্রাসী একটি গোষ্ঠী ত্রিশডেবা বিজিবি ক্যাম্পের বিরুদ্ধে চক্রান্ত চালিয়ে আসছে। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
ঢাকা, ২৪ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: