চবি লাইভ : কোটা সংস্কার নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিপাকে পড়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। ছাত্রলীগের অব্যাহত হুমকির মুখে ক্যাম্পাসে যেতে পারছেন না তিনি। অবশেষে স্ত্রীসহ আত্মগোপনে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সমাজতত্ত্ব বিভাগের এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর মাইদুল ইসলাম। ক্যাম্পাসে অনিরাপদ বোধ করায় তিনি স্ত্রীকে নিয়ে নিরাপদ একটি জায়গায় চলে গিয়েছেন।
ওই শিক্ষক বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। হামলার প্রতিবাদ করা তার রাজনৈতিক অধিকার। তার ভাষায়, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর অমানবিক হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসবুকে অল্প কিছু কথা লিখেছিলাম। ফেসবুকে লিখবো এই সিদ্ধান্তটা আমার। তাদের (ছাত্রলীগ) কারও এতে বাধা দেওয়ার কোনো অধিকার নেই।’
বিভাগের সভাপতি এসএম মনিরুল হাসান জানান, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গত রোববার তার অফিসে এসে তার সহকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে গেছে। ছাত্রলীগের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন সমর্থন করে ফেসবুকে সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। তাই তারা ওই শিক্ষক মাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছে। আন্দোলনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উস্কানি দেওয়ারও অভিযোগ তোলেন তারা। বিভাগের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে মাইদুলকে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে বলেও হুমকি দিয়ে গেছে তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত রোববার (১৫ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চবি শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মনসুর আলমের নেতৃত্বে সংগঠনটির ২৫-৩০ জন নেতাকর্মী সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতির কক্ষে প্রবেশ করেন। তারা সেখানে চিৎকার-চেঁচামেচি করে হট্টগোল তৈরি করেন। সভাপতি বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বস্ত করার পর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চলে যান।
ফেসবুকেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মাইদুল ইসলামের প্রোফাইল শেয়ার করে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করছেন। কয়েকজনকে সেখানে হুমকিও দিতে দেখা গেছে।
চবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মনসুর আলম সাংবাদিকদের বলেন, ওই শিক্ষক ফেসবুকে সরকারকে নিয়ে ‘নেতিবাচক স্ট্যাটাস’ ও ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করতে ছাত্র-শিক্ষকদের উস্কানি দিচ্ছিলেন। তাকে প্রতিহত করা আমাদের দায়িত্ব।
ঢাকা, ১৮ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: