চবি লাইভ: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা নানান সমস্যায় ভুগছেন। কেবল হলের খাবার নয় বরং এছাড়াও রয়েছে বেশ কিছু সমস্যা। এর মধে বেতন ও হলের বিভিন্ন টাকা পয়সা জমা দিতে গিয়ে হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। চবির অগ্রণী ব্যাংকে জনবল কম থাকার কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের।
জানাগেছে বিভিন্ন বর্ষে ভর্তি, ফরম পূরণ, সার্টিফিকেট, মার্কসিট উত্তোলনসহ বিভিন্ন ফি জমা দিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের দাঁড়াতে হয় লম্বা লাইনে। ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বার বার জানানো হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
কিছু দিন আগেও টাকা জমা দেয়াকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলাও সৃষ্টি হয় শিক্ষার্থীদের মাঝে। অনেক সময় এটি আবার মারামারিতে রুপ নেয়। এভাবেই প্রতিনিয়ত ভোগান্তির মধ্যে দিয়ে টাকা জমা দিতে হয় চবির শিক্ষার্থীদের।
এই ভোগান্তির মাত্রা আরো বেড়ে যায় ক্যাম্পাসে নতুন শিক্ষার্থীরা এলে। নতুন শিক্ষার্থীরা ভর্তির টাকা জমা লম্বা লাইনে দাড়িয়ে থাকে। তখন ব্যাংকের ভিতরে পা রাখার মত জায়গা থাকে না। অনেক সময় ব্যাংকের কর্মকর্তারাও শিক্ষার্থীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা অগ্রণী ব্যাংক শাখার ম্যানেজার শফিউল ইসলাম ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি একটু হচ্ছে। কিন্তু আমরা নিরুপাই। আমাদের লোকবল সংকট আছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাইলে আমরা লোকবল বাড়াতে পারি। আর এরকম ভিড় সবসময় হয় না, প্রতিবছর নবীন শিক্ষার্থীরা ভর্তির সময় এ সমস্যাটা হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত ) প্রফেসর ড.কামরুল হুদা ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ‘আমি নিজেও বিষয়টা জানি শিক্ষার্থীদের দূর্ভোগ হয়। ব্যাংক থেকে লোকবল চাওয়া হয়েছে। ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
শিক্ষার্থীদের এই ভোগান্তি দিন দিন আরো বেড়ে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বললে তারা জানান, ‘শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হয় সেটা আমরা বুঝি। কিন্তু লোকবলের সংকটের কারণে আমরা নিরুপাই।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায় ব্যাংকে ভিতরে ও বাইরে শিক্ষার্থীদের লম্বা লাইন। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়। এক থেকে দেড় ঘন্টা যাবত লাইনে দাড়িয়ে আছেন অনেকে। তাদের অভিযোগ ব্যাংকের লোকজন ইচ্ছাকৃত ভাবে ধীর গতিতে কাজ করেন। শিক্ষার্থীদের এত কষ্ট দেখেও তারা কাজের গতি বৃদ্ধি করেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে মাইগ্রেশনের টাকা জমা দিতে সকাল ১১টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন মো. আশরাফুল ইসলাম। আশরাফ ক্যাম্পাসলাইভকে বললেন, এটা কেমন কথা এতো শিক্ষার্থী থাকা সত্ত্বেও লোবল নেই। বেলা সাড়ে ১২টা পার হতে চললেও টাকা জমা দিতে পারেননি এ নবীন শিক্ষার্থী। পরে মন খারাপ করে চলে যান তিনি।
সুশান্ত মজুমদার ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। আর এখন বাজে পৌনে একটা। আজ টাকা জমা দেয়ারও শেষ দিন। জানি না টাকা জমা দিতে পারবো কিনা।
বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামের লোক প্রশাসন বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী আলভী তাসমান বলেন, ছেলেমেয়ের জন্য আলাদা কোনো লাইনও নাই। তারপরও বন্ধুদের সহায়তায় সোয়া দুই ঘণ্টা পর ১ম বর্ষের ভর্তির টাকা জমা দিতে পেরেছি।
ব্যাংকের ভিতরে দেখা যায়, পুরো বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ভর্তি সংক্রান্ত টাকা জমা নিচ্ছেন ব্যাংকের হিসাবের দায়িত্বে থাকা আমির আহমেদ। বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থীর টাকা জমা নিতে গিয়ে এক প্রকার হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। এখানে আরও তিনজন কর্মকর্তা রয়েছেন। এর মধ্যে একজন হিসাবের রশিদ দেওয়ার দায়িত্বে আছেন। আরেকজন গ্রাহকদের খুচরো টাকা ফেরত দিচ্ছেন আর অন্যজন ব্যাংকের অন্যান্য কাজ করছেন।
এদিকে লোকবল কম থাকায় ওই ব্যাংক শাখায় মো.মজিদ নামে এক আনসার সদস্যকে শিক্ষার্থীদের ব্যাংকের হিসাবের রশিদ ফেরত দিতে দেখা গেল।
হিসাবের দায়িত্বে থাকা আমির আহমেদ ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে। তবে সবসময় এরকম ভিড় থাকে না। প্রতিবছর ভর্তির সময়ই এরকম ভিড় বেশি হয়।
ঢাকা, ০২ নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এএসটি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: