মাহফুজ কিশোর, কুবি: অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা খাবার বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। সারি সারি দোকান সাজিয়ে এক শ্রেনীর অসাধু দোকানীরা এসব খাবার বিক্রি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এরা পচা দুর্গন্ধ খাবার নিজেদের মতো করে ভর্তিচ্ছু ও তাদের অভিভাবকদের কাছে প্রতিনিয়ত বিক্রি করে যাচ্ছে। প্রশাসনের লোকজন এসব দেখেও না দেখার ভান করছে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা আবেদনকারী ও তাদের অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, তাদের কাছ থেকে চড়া দাম নিচ্ছে ক্যাম্পাস কেন্দ্রীক খাবারের দোকানগুলো। ক্যাম্পাসের গেটে কিছু অস্থায়ী দোকানীও চরম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার ও চায়ের দোকান সাজিয়ে বসেছেন। এগুলো স্বাস্থ্যহানীকর হলেও চড়া দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভর্তিচ্ছুরা।
শুক্রবার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার প্রায় সবকটি খাবারের দোকানে অনুসন্ধান চালিয়ে এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংশ্লিষ্ট আল-মদিনা, বিএফজি, মামা হোটেলসহ সবকটি খাবারের দোকানে হাঁকা হচ্ছে আকাশচুম্বি দাম।
অন্যান্য সময় রান্না করা ডিম ২০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা বিক্রি করা হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়। বরাবরের ৬০/৭০ টাকার গরুর মাংস এখন ১১০/১২০ টাকা, ৪০ টাকার মাছ ৮০/৯০ টাকা, ৩০ টাকার মুরগী ৬০/৭০ টাকা, ৫ টাকার পরোটা ১০ টাকা, ৩০ টাকার তেহেরী ৬০/৭০/৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ যেন ‘ঝোঁপ বুঝে কোপ মারা’র অবস্থা।
এছাড়াও সরেজমিনে দোকানগুলোর খাবার প্রস্তুত করার স্থানসমূহ পরিদর্শন করে দেখা যায়, খাবার তেরী করা হচ্ছে খুবই নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। পরিবেশন করার ক্ষেত্রেও নেই ন্যূনতম স্বাস্থ্য সচেতনতা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল ও কাজী নজরুল ইসলাম হলের সামনের হোটেলগুলোও এ প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে নেই। দত্ত হল গেইটের সামনের নুরুন নবীর চায়ের দোকান। তিনি ৬ টাকার এক কাপ চা এখন বিক্রি করছেন ১০ টাকায়।
ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আসা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা খাবারের চড়া দামের বিড়ম্বনার কথা জানান। কুমিল্লা গভ. উইমেন্স কলেজ থেকে পরীক্ষা দিতে আসা চৈতী জাহান ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, ‘এর আগে দেশের আরও ক'টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়েছি। কিন্তু কোথাও খাবারের এত বেশি দাম দেখিনি।’
চট্টগ্রাম কলেজিয়েট কলেজ থেকে আসা কৌশিক দত্ত ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, ‘খাবারের মান খুব ভাল ছিলনা যে দাম এতো বেশি রাখবে। এটা আমাদেরকে হয়রানী করা ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মনে হয়েছে।’
এছাড়াও চড়া দামের থাবা থেকে বাদ যাননি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত বর্তমান শিক্ষার্থীরাও।
এ বিষয়ে ‘বিএফজি’ নামক হোটেলের মালিক নজীর আহমেদ ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, ‘সবাই বেশি রাখছে বলে আমরাও বেশি রাখছি। তবে এটা শুধু এই দুই দিনের জন্যই। এছাড়া আমাদের খাবারে কোন ভেজাল নেই। আমরা সুন্দর পরিবেশেই খাবার পরিবেশনের চেষ্টা করি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুপালী মন্ডল ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন,‘আমি বিষয়টি এখন জানলাম। এর সত্যতা পাওয়া গেলে উপজেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে।’
প্রসঙ্গত, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ ও ৩ ডিসেম্বর ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা চলবে।
ঢাকা, ০২ নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এএসটি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: