ব্রাহ্মণবাড়িয়া লাইভ : সদর উপজেলায় এক ছাত্রলীগ নেতার শারীরিক নির্যাতনের পর লজ্জায় অপমানে জান্নাতুল ফেরদৌস লিমা (১৪) নামে স্কুলছাত্রী গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ওই ছাত্রীকে তার বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার ওই ঘটনা ঘটলেও প্রভাবশালী মহলের চাপে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়। উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের চাপুরই গ্রামের ওই ঘটনা মঙ্গলবার ফাঁস হয়ে গেছে। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা উদয় খান (২০) ওই গ্রামের রহিজ খানের ছেলে।
জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চাপুরই গ্রামে আরব আমিরাত প্রবাসী নুরুল হক ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস লিমা স্থানীয় চাপুরই আজিজুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করতো। একপর্যায়ে আখাউড়া উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামের ইয়াছিন মিয়ার সঙ্গে লিমার প্রেমের সম্পর্ক হয়। এদিকে ৭নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি উদয় খান লিমাকে স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে প্রেমের প্রস্তাব দিতো। এতে পাত্তা পায়নি সে। সম্প্রতি লিমার সঙ্গে ইয়াছিনের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি টের পেয়ে উদয় খান রোববার ইয়াছিনকে চাপুরই গ্রামে ডেকে নেন। এসময় লিমাকেও ডেকে আনতে বলেন উদয় খান। লিমা সেখানে গেলে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। এসময় সেখানে উদয়ের সঙ্গে তার দুই বন্ধু সুমন মিয়া ও লোকমান মিয়াও ছিল। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লিমার মামাতো ভাই মনির মিয়া লিমাকে উদ্ধার করে বাড়িতে পাঠায়। তবে ইয়াছিনকে ধরে চাপুইর আজিজুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ে আটকে রাখা হয়। পরে স্কুল কর্তৃপক্ষের হস্থক্ষেপে ইয়াছিনতে ছেড়ে দেয়া হয়।
লিমার ভাই রজব জানান, লিমা কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে এসে ওর রুমে ঢুকে দরজা আটকে দেয়। এরপর খবর পাই ইয়াছিনকে স্কুলে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা স্কুল থেকে ফিরে এসে লিমার রুমের দরজায় কড়া নাড়লেও কোনো সাড়া দেয়নি। পরে জানালা দিয়ে দেখতে পাই যে ও ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়েছে। উদয় তাকে মারধর করেছে, সবার সামনে অপমান করেছে। অপমান সইতে না পেরে লিমা আত্মহত্যা করেছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের ওসি নবীর হোসেন জানান, এ ঘটনায় লিমার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ঢাকা, ১৬ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: