Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৫ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

শিক্ষা কার্যক্রম ও সমসাময়িক বিষয়ে দশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর ভাবনা

প্রকাশিত: ২৬ জুন ২০২০, ০০:৩৮

আর এস মাহমুদ হাসান, বশেমুরবিপ্রবিঃ বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ এর প্রভাবে পুরো বিশ্ব এখন ভীত-সন্ত্রস্ত, ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশও। ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম। সংকটকালীন এই মুহূর্তে শিক্ষা কার্যক্রম অনেকটা স্থবির হয়ে আছে।

এ সময়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কিভাবে সময় কাটাচ্ছে? অনলাইন ক্লাস, সেশন জট নিয়ে ভাবনা, করোনাকালীন ক্ষতি কিভাবে পুষিয়ে উঠবে শিক্ষার্থীরা, ফেলে আসা প্রিয় ক্যাম্পাস স্মৃতি নিয়ে ক্যাম্পাসলাইভের সাথে কথা বলেছেন দেশের স্বনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

মো: নাঈমুর রহমান। মৃত্তিকা,পানি ও পরিবেশ বিভাগ, চতুর্থ বর্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়:

মো: নাঈমুর রহমান

 

করোনাকালীন সময়ে বাড়িতে এসে বাবার সাথে টুকটাক কাজ করছি,(যেহেতু আমার বাবা একজন কৃষক) নিজের আগ্রহ থেকেই ঘাস লাগানো, সবজি চাষ এগুলা করছি। মাঝে মাঝে গল্পের বই, ইংরেজি শব্দার্থ এগুলা পড়ি। বাড়িতে এসে এলাকার বন্ধুদের সাথে আড্ডাও চলছে জমপেষ। তবে খুব মিস করছি এফ এইচ হলের পুকুড় পাড়ে বসে বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের সাথে আড্ডা। রাতে টিউশন শেষে প্রায়ই বসা হতো ওখানে।

ক্লাস শেষে জহিরের দোকানে এক কাপ চা সাথে বন্ধুদের সাথে বিভিন্ন গল্প। সংকটকালীন মুহূর্তে পড়ালেখার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অনেক ডিপার্টমেন্ট শিক্ষার্থীদের মতের ভিত্তিতে অনলাইন ক্লাসে যাচ্ছে। তবে অনেক শিক্ষার্থী যারা গ্রাম থেকে আসছে তাদের জন্য ক্লাস গুলো রেকর্ডিং করে রাখতে পারে। যা তারা পরবর্তীতে শুনতে পারবে, সাথে যদি স্যাররা আমাদের জন্য কিছু পিডিএফ ফাইল দিয়ে দেন সেটাও অনেক কাজে দিবে।

আমার ডিপার্টমেন্টেও এমন কথা চলছে কারণ সেশনজট ঠেকাতে এমন পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি। এর মাধ্যমে কিছুটা হলেও সেশনজট কমানো যাবে। তবে সবকিছু স্বাভাবিক হলে পড়াশোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সপ্তহের দুটো বন্ধের দিন হতে একটা দিন আমরা ক্লাস করতে পারি। যেটা আমাদের জন্য উপকারী হবে বলে আশা করি।

নন্দিতা কর্মকার, লোক প্রশাসন বিভাগ মাস্টার্স, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়:

নন্দিতা কর্মকার

 

খুব বেশি দরকার না হলে বাড়ির বাইরে বের হইনা, বের হলে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখি। জবের পড়াশোনা, মাকে বাড়ির বিভিন্ন কাজে হেল্প করা, নতুন নতুন রান্না শেখা, বিকেল হলে ভাইয়ের সাথে ঘুড়ি উড়িয়ে সময় কটায়। তবে ক্যাম্পাসের মফিজ লেক, ডাইনা চত্বরের কথা খুব মনে পড়ে, বন্ধু,বান্ধবীদের সাথে মুজিব চত্বরে আড্ডা দেওয়া হাটাহাটি করা, হোসেন মামার চায়ের দোকানের চা খুব মিস করি।

অনলাইন ক্লাস তো যথারীতি চলছে। জুম এপ্স দিয়ে নেওয়া হচ্ছে আমাদের অনলাইন ক্লাস গুলো। ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ক্যাম্পাস খোলার পর স্যাররা রেগুলার ক্লাস নিয়ে এবং ছুটির দিনেও ক্লাস নিয়ে এর ক্ষতি পুষিয়ে দিতে পারে বলে মনে করি। নিয়মিত ক্লাস চলছে অনলাইনে। ক্যাম্পাস খুলে দিলে সব ক্লাস, পরীক্ষা চললে আশা করি সেশন জট হবে না বলে মনে হয় আমার।

ফাহিম আহমেদ, কৃষি অনুষদ, চতুর্থ বর্ষ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়:

ফাহিম আহমেদ

 

বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সারাদিন বাসায় বসে থাকা, বন্দী জীবন৷ যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ানো, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়া ছিলো নিত্যদিনের কাজ। ক্যাম্পাসের নদীর পাড়, প্লাটফর্মের আড্ডায় মেতে থাকতাম আমরা। ভীষণ মনে পড়ছে সবুজের ক্যাম্পাস বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে। বাসায় সময় কাটছে কখনো বই পড়ে কখনো মুভি দেখে আর ছাদে সবজির বাগানে। এছাড়া অনলাইনে কিছু কোর্স করেছি।

এইরকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশন জটের একটা শঙ্কা থেকে যায়৷ এখন পর্যন্ত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন অনুষদের পক্ষ থেকে অনলাইন ক্লাস করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি৷ দু একটা ডিপার্টমেন্ট কয়েকটি অনলাইল ক্লাস করেছে বলে শুনেছি। যদিও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ক্লাস নেয়ার ব্যাপারে অনেক জটিলতা থেকে যায়।

এর একটা বড় কারণ- পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের একটি বড় অংশ এসেছে গ্রাম ও মফস্বল থেকে। তাদের অধিকাংশের পরিবারই আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। তাদের অনলাইনে ক্লাস করার জন্য প্রয়োজনীয় গ্যাজেট (ল্যাপটপ, স্মার্টফোন) নেই, ইন্টারনেট কেনার সামর্থ্য নেই, আর দুর্বল ইন্টারনেট সিগন্যাল তো আছেই।

তাছাড়া অনলাইন পরীক্ষার মান নিয়েও একটা ব্যাপার থেকে যায়৷ সেজন্য আমি মনে করি সেশনজট থেকে বাঁচতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে উচিত সিলেবাস কমিয়ে, অনলাইন রেকর্ড ক্লাস করে এবং বিষয়ভিত্তিক শীট পিডিএফ আকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে আপলোড করে দেয়া যাতে শিক্ষার্থীরা ডাউনলোড করে তাদের পাঠ্যক্রম এগিয়ে রাখতে পারে। এবং পরিস্থিতি ঠিক হলে সাপ্তাহিক ছুটিগুলো বন্ধ করে শুধুমাত্র প্রাকটিক্যাল ক্লাসগুলো সম্পন্ন করে পরীক্ষা শুরু করে দিতে পারে। এতে কিছুটা হলেও সেশনজট থেকে মুক্তি পাবে বলে আমি আশা করি৷

অনন্যা তালুকদার জেনী, ভেটেরিনারি এনিমেল আ্যন্ড বায়োমেডিকেল সায়েন্সেস, ইন্টার্ণ শিক্ষার্থী, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়:

অনন্যা তালুকদার জেনী

 

এই সময়ে যেহেতু ঘরে থাকা উচিত, তাই এই সময়টাতে পরিবারের সাথে ভালোভাবে কাটানোর চেষ্টা করছি। যে কাজগুলো ব্যস্ততার জন্য মন মতো করতে পারতাম না সেগুলো এখন করার চেষ্টা করছি। টুকটাক রান্না-বান্না করি, প্রচুর মুভি দেখি, বই পড়ার চেষ্টা করছি। আমি যেহেতু বিতর্ক করি তাই অনলাইনে বিতর্কটাও করছি এখন।

আগে বন্ধুরা মিলে যখনই সময় পেতাম একসাথে কোথাও খেতে যেতাম অথবা ঘুরতে যেতাম। টানা তিন মাসেরও বেশী সময় বাইরে যাইনি। কবে সবকিছু ঠিকঠাক হবে? আবার সবাই মিলে ঘুরতে যাবো। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। কয়েকজন শিক্ষক নিজ উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের জন্য শুরুতে ক্লাস নিয়েছিলেন কিছু কিন্তু নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে তা এখন আর হচ্ছে না।

আমি মনে করি একটি শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ থাকলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়েরই সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব কেবল এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠা সম্ভব। সে ব্যাপারে আমাদের অভিজ্ঞ কোর্সটিচাররা রয়েছেন সিলেবাস এর সংশোধন পরিমার্জন কিংবা সংযোজনের জন্য।

যেটাই হোক আশা করি সেটা শিক্ষার্থীদের জন্য চাপের হবেনা। সেশনজটের আশংকা যে একদমই নেই তা বলবো না। তবে আমার এই বিশ্বাসটুকু রয়েছে যে আমাদের স্যাররা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন যাতে সেশনজট না হয়। প্রার্থনা করছি এই মহামারী যাতে দ্রুত শেষ হয়ে যায়।

মো: তোহিদুল ইসলাম, পুরকৌশল বিভাগ, ১৫ সিরিজ, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়:

মো: তোহিদুল ইসলাম

 

করোনাকালীন বেশিরভাগ সময় অলসতায় কাটলেও শারীরিক পরিশ্রম নিত্যান্ত কম হচ্ছে না। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে মানসিক বিষন্নতা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনলাইন ক্লাস নিলেও আমি কিভাবে নিচ্ছি সেটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্যারদের সামনে বসে যেখানে টানা ক্লাস করা দুরূহ ব্যাপার সেখানে ভার্চুয়াল ক্লাস বলার অপেক্ষা রাখে না।

পুরো বিশ্ব যখন করোনা নিয়ে জটিলতায় তখন সেশনজট নিয়ে মাথায় চিন্তা আসা অনর্থক। তবে ক্লাস একটু বেশি নিয়ে সিলেবাস অল্প করে দিয়ে সেমিস্টার শেষ করে সেশন জটের ধকল একটু কমানো যায়।

কবে আমরা এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাব জানিনা তবে একটি নতুন ভোরের অপেক্ষায় আছি যেদিন আবার শহীদ শহিদুল ইসলাম হলের পুকুরে বন্ধুদের সাথে একসাথে সাঁতার কাটবো, হৈ-হুল্লোড় করব, টং এ বসে জমিয়ে আড্ডা দেবো।

নাফিসা সুলতানা কাঁকন, বাংলা বিভাগ, তৃতীয় বর্ষ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়:

নাফিসা সুলতানা কাঁকন

 

বর্তমান এই মহামারীর সময়কালে আমাদের সবাইকেই লকডাউনে বন্দী জীবন কাটাতে হচ্ছে। কিন্তু সবসময় ব্যস্ততায় কাটানো মানুষগুলো কি এভাবে অলস জীবনে অভ্যস্ত হতে পারে? মোটেই না। তাই ঘরের কাজে সহযোগিতা করা সহ বিভিন্ন ভালো ভালো মুভি দেখে, এক্সারসাইজ করে, বিভিন্ন শখের কাজ করে, বই পড়ে, শিল্প-সাহিত্য চর্চা করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সময় কাটানো উচিত।

বাংলা বিভাগের ছাত্রী হিসেবে আমি এখন প্রচুর সময় পাচ্ছি অনেক বই পড়ার৷ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যেহেতু অনলাইন ক্লাস হচ্ছে না তাই চেষ্টা করছি নিজেই প্রতিদিন একটা করে বই শেষ করার, সাথে লেখার অভ্যাস টা চালিয়ে যাওয়ার। আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকার চেষ্টা করছি। আর সেশনজট নিয়ে ভয়তো আছেই। তবে বিভাগীয় শিক্ষকদের আন্তরিকতায় আশা করি আমরা তা কাটিয়ে উঠতে পারবো। পুরো ক্যাম্পাস টাকেই মিস করছি আমি।

বিশেষ করে বলতে গেলে বলবো কলা ঝুপড়ি, মউর দোয়ান, স্টেশন চত্বর, চাকসু, লাইব্রেরি এই জায়গা গুলো বেশি বেশি মিস করছি৷ আশা করছি, শীঘ্রই এই মহামারী শেষ হবে এবং আমরা আমাদের ব্যস্তময় দিনগুলোতে ফিরে যেতে পারবো, প্রিয় ক্যাম্পাস মুখর হবে আমাদের পদচারণায়।

বাবলুর রহমান, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ, তৃতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টার, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়:

বাবলুর রহমান

 

করোনাকালীন সময়টা আসলে অনেক কষ্টের। আর বিশেষ করে আমাদের মতো নিম্ন মধ্যবিত্র পরিবারের ছাত্রদের জন্য যাদের নিজের পড়ালেখার খরচ টিউশন করে বহন করে আবার অসুস্থ বাবা-মার জন্য কিছু টাকা পাঠানো লাগে। এ অবস্থার মধ্যে কিভাবে কাটছে সবার জানারই কথা। তারপর ও মনে পড়ে আমার প্রিয় ক্যাম্পাসের কথা।

বিশেষ করে ক্যাম্পাসের প্রথম গেটে গরমের দিনে ঠান্ডা ও জনপ্রিয় শরবতের কথা। সকালে ১০ টাকা দিয়ে রুটিসহ ভাজি, আর রাতে তিন নম্বর গেট এ মধু খালার হাতের চা ও প্রথম গেটের বটসহ হালিম। বিজয় ৭১ চত্বরে ও মান্নান হলের খেলা ঘরে কেরাম খেলা এসব কিছু ভোলার নয়। আর এ অবস্থার মধ্যে অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষক মহোদয়রা।

কিন্তু যেখানে নিজের অবস্থা শোচনীয় সেখানে অনলাইন ক্লাস কতটা নিরাপদ জানি না। আর সেশন জট নিয়ে আমার মনে হয় সাপ্তাহিক ছুটি কমিয়ে এবং সেমিস্টার ৬ থেকে ৫ মাসে কমিয়ে কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া যাবে৷

সিফাত রাকা, বাংলা বিভাগ, দ্বিতীয় বর্ষ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়:

সিফাত রাকা

 

লকডাউনে পড়ালেখার কিছুটা ক্ষতি তো হচ্ছেই।তাছাড়া সেশন জটে অলরেডি আমরা পড়ে গেছি। এই ক্ষতিটা সম্পুর্নভাবে পুষিয়ে ওঠা হয়তো শীঘ্রই সম্ভব হবে না। তাছাড়া সকল শিক্ষার্থীর সুবিধা-অসুবিধার কথা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনলাইন ক্লাসের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে আসেননি।

তবে লকডাউনের এই সময়টাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি বিভিন্ন সৃজনশীলমূলক কাজ, অনলাইন কোর্স এবং সিলেবাসের বাইরের বিভিন্ন বই পড়ার মাধ্যমে।তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের খুব মিস করছি। মিস করছি ক্যাম্পাসের সেই মামাদের,বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরাই ছিল যাদের একমাত্র আয়ের উৎস। সর্বোপরি সকলের সুস্থতা কামনা করছি।

মো: রাইহানুল ফেরদাউস, নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা ডিসিপ্লিন বিভাগ (২৭ব্যাচ), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়:

মো: রাইহানুল ফেরদাউস

 

লকডাউনে অধিকাংশ সময় বাসাতেই থাকি। আব্বু আম্মুর কাজে হেল্প করি, নিয়মিত নামাজ আদায় করি। মাঝেমধ্যে স্থানীয় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে থাকি। সেশনজট হইলে কি আর করা আগে প্রাণ বাঁচানো জরুরি। ১৭ ই মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা, সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানায়।

তবে ক্যাম্পাসে তপদার দোকানের আড্ডা, সেলিম ভাইয়ের দোকানে বসে ভাইদের সাথে গল্প করা, খান জাহান আলী মাঠের ফুটবল খেলা, কেফেতে বসে আড্ডা দেয়ার দিনগুলোকে বড্ড মিস করি।

সপ্তর্ষী বিশ্বাস, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব (৪৯ ব্যাচ), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়:

সপ্তর্ষী বিশ্বাস

 

করোনার সময় চেষ্টা করছি যতটা সম্ভব বাসায় থাকার, খুব দরকার না হলে বাইরে বের হচ্ছি না। যেহেতু আমাদের অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে না তাই আমি অন্তত সাধারন ভাবে মোবাইলে মুভি দেখে আর এক্সারসাইজ করে কাটাচ্ছি। আর আমি যেহেতু নাট্যতত্ত্বের ছাত্র অনলাইনে ক্লাসে আমরা শিখতে পারব না। সেশনজটটা সমস্যা এর মাশুল গুনতে হবে বিশেষ করে আমরা যারা ২ন্ড টাইমার।

ক্যাম্পাস খুললে কিছু বন্ধ কমিয়ে, ক্লাস স্কিপ না করে, আমাদের পুরোটাই শিখতে হবে। ক্যাম্পাস মিস করার মত, নিজের ফ্যাকাল্টিতে ৫ টা দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা অব্দি থাকতাম। বন্ধু,রাতে সেন্ট্রাল ফিল্ডের আড্ডা, গান, একসাথে নাচ এই সব মিস করছি। আশা করব এই সমাজ, মানুষ জলদি সুস্থ হবে আর এমন যাতে সামনে না হয় পৃথিবীকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করতে হবে।

ঢাকা, ২৫ জুন (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ