Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফেরার আকুতি

প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল ২০২০, ১৯:১৮

আজাহার ইসলাম, ইবিঃ বিশ্বকে গ্রাস করে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস। ইতোমধ্যে বাংলাদেশেও ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে ভাইরাসটি। সারা দেশ অঘোষিত লকডাউন। করোনাভাইরাসের প্রকোপে ব্যহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। বাড়ানো হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ছুটির সময়সীমা। এ ভাইরাসের প্রকোপ না কমলে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন।

শিক্ষার্থীরা সারা দিন বন্দি থাকছে গৃহে। কবিগুরু বেঁচে থাকলে হয়তো লিখতেন, ‘করোনার প্রকোপ সারা দেশে তিলঠাঁই আজ নাহিরে, ওগো তোরা যাসনে ঘরের বাহিরে।’ সারা দিন ঘরে বন্দি থেকে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। তারা জানাচ্ছে প্রাণের ক্যাম্পাসে ফেরার আকুতি। এমন কিছু শিক্ষার্থীর ভাবনা তুলে ধরছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী আজাহার ইসলাম।

আশায় বুক বাঁধি কবে কাটবে এ অমানিশা:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের রাকিব দেওয়ান বলেন, ‘যেকোনো ছুটিতে উৎসুক থাকে শিক্ষার্থীরা, ছুটির দিনে কেউ কেউ করে থাকে বিভিন্ন ইভেন্ট, কেউ বা বেড়াতে যায় নানা-বাড়ি মামা-বাড়ি, কিন্তু এ কেমন ছুটি? যে ছুটিতে কেবল-ই গৃহবন্দি! আমরা এক অঘোষিত যুদ্ধের সামনে দাঁড়িয়ে। চারদিকে থমথমে পরিবেশ।

তবুও আশার বুক বাঁধি এই অমানিশা কেটে উঠবেই। আমরা ইতিহাসের গড়পরতা দেখলে বুঝতে পারি প্রতি শতকে এক একটি মহামারি মানবসভ্যতায় আঘাত হানে। ছিনিয়ে নেয় তাজা প্রাণ, কেড়ে নেয় ভালোবাসা, দিয়ে যায় শঙ্কা, বেড়ে যায় হতাশা। তবুও কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো বলতে হয় ‘আশাই জীবন, জীবনই শ্রী, আমরা আশা নিয়ে বেঁচে থাকি।’

কবে পাবো মুক্তির সাধঃ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের তাজমিন নাহার বলেন, ‘আবদ্ধ জীবন ছেড়ে কবে পাব আবার মুক্ত জীবনের সাধ? কবে আবার মুক্ত বাতাসে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারব। করোনাভাইরাসের কারণে আমরা আবদ্ধ হয়ে পড়েছি।

আর কত আবদ্ধ হয়ে থাকা যায়? দ্রুত ফিরে পেতে চাই ক্যাম্পাসের সোনালী দিনগুলো। বন্ধুদের সফঙ্গ আড্ডা, ঝাল চত্বরের ফুসকা, মফিজ লেকের জলে পা ডুবানো, রাত জেগে অ্যাসাইনমেন্ট করা ফরমাল পোশাকে প্রেজেন্টশন খুব মিস করছি। আবার কবে ফিরে যাব প্রাণের ক্যাম্পাসে। ভীড় জমাব হলের ডাইনিংয়ে।

সময় যেন থমকে আছেঃ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের নওসাজ্জামান নওশি বলেন, ‘ভেবেছিলাম অনেকদিন ধরে ক্যাম্পাস বন্ধ হয়নি। বাড়ি যাওয়ার এক অজানা আকুতি বার বার নাড়া দিচ্ছিল মনে। ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়ার পর বাড়ির দিকে রওনা হলাম। প্রথম কয়েক দিন ভালোই লাগল। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে কারাগারে বন্দি।

গাইতে মন চায় আমি বন্দি কারাগারে গানটি। সারা দিন মোবাইল, ফেসবুকিং করেই দিন পার করছিলাম। পরে মন দিলাম বইয়ের উপর। দুদিন বাদে বই পড়ার মাঝেও আনন্দ পেলাম না। খাওয়া, ঘুম, ফেসবুকিং এভাবেই দিনাতিপাত করছি। তাও সময় যেন থমকে আছে। কোনোভাবেই পার হচ্ছে না।

আবার কবে মিলিত হবো ক্যাম্পাসেঃ
নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শেখ আবদুল্লাহ বলেন, ‘সারা দিন ঘরোয়া খেলাধুলা, বিকাল হলে ক্রিকেট আর সন্ধ্যায় চায়ের দোকানে আড্ডা প্রতিবারের ছুটির চিরচায়িত নিয়ম। যৌথ পরিবার হওয়ার কারণে বাড়িতে আসলে ঈদের ছুটির মতো ছুটি কাটে। এবারের ছুটি কাটছে ব্যতিক্রম। লকডাউন হওয়ায় সারা দিন আটকে থাকতে হয় ঘরে।

তবে গ্রামের মানুষ করোনাভাইরাস সম্পর্কে তেমন সচেতন নয়। শহর থেকেও যারা আসছে প্রথম দুই এক দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকলেও পরে নির্ধিদ্বায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। অনেক শিক্ষিত মানুষ ও শিক্ষার্থীরাও গ্রামের মানুষদের মতো অসচেতন হয়ে পড়েছে। তবে সব সময় একটা আতঙ্ক কাজ করে আবার কি আমরা মিলিত হতে পারব প্রাণের ক্যাম্পাসে?’

চার দেয়ালে নিজেকে অসহায় মনে হয়ঃ
তিতুমীর সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের রাসেল মাহমুদ বলেন, ‘হঠাৎই আমাদের দেশে হানা দিল মহামারি করোনাভাইরাস। যার পরিপ্রেক্ষিতে বন্ধ হয়ে গেছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অন্য যেকোনো সময় ছুটিতে বাড়িতে গেলে কীভাবে সময় কেটে যায় টেরই পাওয়া যায় না।

সারাদিন ঘোরাফেরা, বিকাল হলেই বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় সময় কেটে যেত। কিন্তু এবারের ছুটি কাটছেই না। ইচ্ছার বিরুদ্ধেও সারা দিন ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে আবদ্ধ থাকতে হয়। মাঝে মাঝে নিজেকে অসহায় মনে হয়। ক্যাম্পাস বন্ধ। সারা দিন মোবাইলে গান, নাটক, সিনেমা দেখেই সময় কাটাই।’

ঢাকা, ২৮ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এআই//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ