Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | মঙ্গলবার, ৭ই মে ২০২৪, ২৪শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

আন্তর্জাতিকীকরনের পথে ইবি; ভিসির দুই বছর পূর্তি

প্রকাশিত: ২১ আগষ্ট ২০১৮, ২২:৫১

রায়হান মাহবুব: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় । বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই এর মূল এজেন্ডার মধ্যে অন্যতম ছিল আধুনিকায়ন ও আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তোলা। ওই বিশ্ববিদ্যালয় যেন দেশ-বিদেশের ছাত্র-ছাত্রীরা এখানে পড়ালেখার সুযোগ পায়। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় নানা কারণে তার কাংখিত লক্ষ্যে পৌছাতে পারেনি।

দীর্ঘদিন অনেক ভিসি দায়িত্ব পালন করলেও চোখে পড়ার মতো উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। কেউই আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে পারেননি।
২০১৬ সালে ২১শে আগষ্ট ১২তম ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পান। এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক বিশিষ্ট কলামিস্ট, লেখক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক ড. মো: হারুন -উর- রশিদ আসকারী (রাশিদ আসকারী)। তিনি দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকেই যেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পেয়েছে তার নতুন যৌবন।

আন্তর্জাতিকরণের রুপকার ড. রাশিদ আসকারীর বলিষ্ট নেতৃত্বে সততা- স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতাকে মূলমন্ত্র ধরে প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মো: শাহিনুর রহমান ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো: সেলিম তোহাকে সাথে নিয়ে দূর্বার গতিতে ক্যাম্পাসকে ঢেলে সাজিয়ে চলেছেন।

তিনি দায়িত্ব নিয়ে প্রথম ভিসির বাসভবনের ভাড়া হিসেবে তার পূরো হাউজরেন্ট কর্তনের নির্দেশ দেন। যা বিগত ভিসিগণের সময় মাসিক তিনশত টাকা হারে কর্তন করা হতো। যেখানে প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকে মাত্র ২২টি বিভাগ ছিল সেখানে অধ্যাপক রাশিদ আসকারী দায়িত্ব গ্রহনের পর ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে নতুন আরও ৮ টি বিভাগ চালু করে শিক্ষার্থী। ভর্তি ও সকল বিভাগে সফলভাবে মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ দিতে সমর্থ হয়েছেন।

এক নজরে উন্নয়ন চিত্র:

১. প্রধান ফটকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর দৃষ্টিনন্দিত মুরাল 'মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব', কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীতে মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার, বঙ্গবন্ধু কর্ণার, একুশে কর্ণার স্থাপন।

২. দীর্ঘ ১৬ বছর পর গত ৭ জানুয়ারী রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ- এর উপস্থিতিতে দেশের সর্বোবৃহৎ সফল ৪র্থ সমাবর্তন আয়োজন।

৩. ধারাবাহিকভাবে মাদক-সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ বিরোধী সচেতনতামূলক সভা সেমিনার ও দেশের সর্ববৃহৎ র্যলির আয়োজন। সার্বিক নিরাপত্তায় পুরো ক্যাম্পাস পিটিজেট সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা।

৪. সর্বক্ষেত্রে দূর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি প্রদর্শন (উপ প্রকৌশলী তৈমুর রেজা তুহিনকে পদ অবমনন করে শাখা কর্মকর্তা, প্রধান প্রকৌশলী মকবুল হোসেনকে বাধ্যতামূলক অবসর, যৌন হয়রানীর অভিযোগে ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষক আসাদুজ্জামানকে চাকুরীচ্যুত করাসহ আরো অনেক উদাহরণ রয়েছে)

৫. বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এই প্রথম ৫৯ টি বিভাগ সম্বলিত সুচারুপে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার রোডম্যাপ অর্গানোগ্রাম পাশ হয়েছে।

৬. চীন-জাপান-ভারত-নিউজিল্যান্ডের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর হয়েছে ফলে বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরস্পর যাতায়াতের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

সকল বিভাগে সেমিস্টার পদ্ধতি চালু করা, এমফিল-পিএইচডির অর্ডিনেন্স আন্তজার্তিক মানে উন্নয়ন, ইনোভেশন হাব গঠনের মাধ্যমে খুদে বিজ্ঞানী তৈরি করা, সৌন্দর্যবর্ধনে ব্যাপক কার্যকরী পদক্ষেপ (প্রধান ফটকে দৃষ্টিনন্দন অনেষ্টি ফাউন্টেইন ও দেশরত্ব শেখ হাসিনা হলের সামনে ফোয়ারা স্থাপিত হয়েছে। রাস্তাসমূহ একযোগে সংস্কার হয়েছে এবং নয়নাভিরাম লেকের নির্মান চলছে) গ্রহন এবং সর্বোপরি সকল বিভাগে সেশনজট প্রায় শুন্যের কোঠায় নিয়ে আসা। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

৭. ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়নমূলক কাজের মধ্যে ৬টি ভবন, পাওয়ার স্টেশন, নতুন পানির লাইন স্থাপনের কাজ একসাথে চলছে যা শেষ পর্যায়ে।

৮. এই প্রথম ৫০০ কোটি টাকার মেগা প্রোজেক্ট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে নূতন ৯টি দশতলা ভবন এবং ১৯টি ভবনের ভার্টিকেল বর্ধিতকরন, আধুনিক বিজ্ঞান ল্যাবসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

৯. শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতিতে লিখিত পরীক্ষা প্রবর্তন করে এবং শিক্ষার বানিজ্জিকীকরন বন্ধ করতে দীর্ঘ দিনের সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধ করে তিনি ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেছেন । এছাড়াও ভর্তি পরীক্ষায় গুচ্ছ পদ্ধতি ও এমসিকিউ এর সাথে ২০ নম্বরের লিখিত যুক্ত করা বর্তমান প্রেক্ষাপটে যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

১০. বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত ও আভ্যন্তরীণ আয় বাড়াতে বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। যার সুফল ইতোমধ্যে পাওয়া শুরু হয়েছে।

বর্তমান প্রশাসনের দুই বছর মূল্যায়ন করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সিনিয়র শিক্ষক বলেন, শিক্ষকতা জীবনের শেষ প্রান্তে এসে ইবির উন্নয়ন দেখে আমরা মুগ্ধ, মনে হচ্ছে ইবিতে রেনেঁসার যুগ শুরু হয়েছে এবং যেকোন মুল্যে এই কর্মযজ্ঞ ধরে রাখতে হবে।

ভিসি অধ্যাপক ড. মো: হারুন -উর- রশিদ আসকারী ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন- "আমার লক্ষ্য একটি World class University বিনির্মান করা। এটা কোন ব্যক্তিগত কোন এজেন্ডা নয়। বরং সকল সুচকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এর গতি যেন কেউ ব্যাহত করতে না পারে সেজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।"

 

ঢাকা, ২১ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ